নিন্দা-কটূক্তি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত যে সাফল্যের চুড়োয় উঠতে পেরেছেন, তাতেই আনন্দ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করেন সবুজ-মেরুন কোচ। — ফাইল চিত্র
সাফল্য না পেয়ে এক সময় চাকরি চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এমন পরিস্থিতি ছিল যে খাদের কিনারায় থাকা অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে হয়েছে। সেখান থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া কোনও স্বপ্নের থেকে কম নয়। কিন্তু ট্রফি জিতেও মাটির কাছাকাছি থাকতে চাইছেন মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দো। আইএসএলের সাফল্য তাঁর কাছে অতীত। এখন চোখ সুপার কাপে। সেখানেও তাঁর লক্ষ্য সেই ট্রফি জেতাই।
দলের মধ্যে চোট-আঘাতের সমস্যা, গোল করার লোকের অভাব, স্ট্রাইকারদের ছন্দে না থাকা, সমালোচনার ঝড়— এ সব সামলেও তিনি ট্রফি জয়ী কোচ। রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসদের বদলে আনা দিমিত্রি পেত্রাতোসের উপরে ভরসা রেখেছেন। সেই দিমিত্রি অল্পের জন্য সোনার বুট পাননি। গোলের সংখ্যা কম হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এত গোলের সুযোগ তৈরি করেছে সবুজ-মেরুন বাহিনী, তা বেনজির।
এক সময় নর্থইস্ট ইউনাইটেডের কাছে ০-১ হারের পরে ফেরান্দোকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। অনেকেই বলেছিলেন, গত বারের সেমিফাইনালিস্টদের এ বার কপালে দুঃখ আছে। সেই ব্যর্থতার রাতেই নাকি ফেরান্দো মোহনবাগান কর্তাদের কথা দিয়েছিলেন দলকে ফাইনালে তুলবেন। সেটাই করে দেখিয়ে দেন।
আইএসএলের ওয়েবসাইটে তা নিয়ে কথা বলেছেন ফেরান্দো। তাঁর কথায়, “তখন বড়দিনের সময়। সবাই হতাশায় ডুবে। মাত্র তিন জন বিদেশি তখন সুস্থ ছিল। তাই আরও কয়েক জন খেলোয়াড়কে আমরা সই করাতে চাইছিলাম। এই ব্যাপারটাকেই তখন সবচেয়ে গুরুত্ব দিই।”
দলের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমি আমার দল সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলাম। যাবতীয় বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও যে আমরা যে সফল হতে পারব, তা নিয়ে আমার মনে কোনও সন্দেহ ছিল না। আমার মন সমানে তা-ই বলে চলেছিল। তাই টিম ম্যানেজমেন্টকেও সেটাই জানিয়ে দিই।” সম্প্রতি এক ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন ফেরান্দো।
এত বাধাবিপত্তি, নিন্দা-কটূক্তি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত যে সাফল্যের চুড়োয় উঠতে পেরেছেন, তাতেই আনন্দ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করেন সবুজ-মেরুন কোচ। তাঁর মতে, “শুধু ফুটবলে নয়, বেঁচে থাকতে গেলেও প্রত্যেকেরই নিজের বিশ্বাসকে বুকে আঁকড়ে ধরে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যাওয়া উচিত। বাধাবিপত্তি না থাকলে কি এই সাফল্য এত মধুর হত?”
আইএসএলে যোগ দেওয়ার পর তৃতীয় বছরে সাফল্য এল মোহনবাগানের। প্রথম বছরেই ট্রফি জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল। ফাইনালে মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে ট্রফি জয়ের স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় সবুজ-মেরুন বাহিনীর। এ বার সেই ভুল করেনি তারা।
সামনে সুপার কাপ। স্বাভাবিক ভাবেই মোহনবাগানই বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। কোচও প্রত্যয়ী। বিশ্বাস করেন, এই প্রতিযোগিতাতেও ভাল খেলবে তাঁর দল। বলেছেন, “আমার, দলের খেলোয়াড়, স্টাফ সবার কাছেই আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই আসন্ন সুপার কাপে সবচেয়ে বড় প্রেরণা হয়ে উঠতে চলেছে। আমরা পেশাদার দল, আমাদের মানসিকতাও সে রকমই।”
চোটের জন্য সারা মরসুমে খেলতে পারেননি স্প্যানিশ ডিফেন্ডার তিরি। ফিনল্যান্ডের মিডফিল্ডার জনি কাউকোর অস্ত্রোপচার হওয়ায় তিনিও মরসুমের অর্ধেকটা খেলতে পারেননি। সুপার কাপে কি এঁদের দেখা যেতে পারে? কোচের ইঙ্গিত, “তিরিকে হয়তো পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু জনিকে পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে না। সম্পূর্ণ সেরে উঠতে ওর আরও সময় লাগবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy