কুয়েতের আলমেজায়েন আবদুল্লার বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল যুদ্ধে সৌরভ ঘোষাল। ছবি: পিটিআই
সৌরভ ঘোষালের দ্বিতীয় রুপোর পদক নিশ্চিত। এশিয়াড থেকে কলকাতায় দ্বিতীয় রুপো আসা পাকা। এমনকী বাঙালি স্কোয়াশ প্লেয়ারের হাত ধরে ২০১৪ এশিয়াডে ভারতের দ্বিতীয় স্বর্ণ পদকও আসতে পারে।
কারণ?
পুরুষদের দলগত স্কোয়াশের সেমিফাইনালে কুয়েতের সেই আলমেজায়েন আবদুল্লাকেই হারিয়ে সৌরভ শুক্রবার দেশকে ফাইনালে তুলেছেন, যাঁর কাছেই কিনা সিঙ্গলস ফাইনালে ২-০ গেমে এগিয়েও শেষমেশ ২-৩ হেরে রুপোর পদক পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তাঁকে। এ দিন দলগত লড়াইয়েও পাঁচ গেমের ম্যারাথন ম্যাচ চলে সৌরভ আর আবদুল্লার মধ্যে। এবং আবদুল্লা দু’বার সমতা ফেরালেও নির্ণায়ক পঞ্চম গেমে এ বার আর ভুল করেননি সৌরভ। জেতেন ১১-৮, ৭-১১, ১১-৯, ৫-১১, ১১-৩। তার আগে সৌরভের সতীর্থ মহেশ মানগাঁওকর জেতায় কুয়েতকে ২-০ হারিয়ে ভারত ফাইনালে ওঠে। মেয়েদের সেমিফাইনালে দীপিকা পাল্লিকাল, জ্যোত্স্না চিনাপ্পা-ও অনুরূপ ফলে উদ্যোক্তা দেশ দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে ভারতকে ফাইনালে তোলেন।
তবে ইনচিওন গেমসের সপ্তম দিনেও ভারতের প্রাপ্তি দু’টি মাত্র পদক। সৌরভের পর দেশকে এ বারের এশিয়াডে দ্বিতীয় রুপোর পদক এনে দিলেন ২৫ মিটার সেন্টার ফায়ার পিস্তল ইভেন্টে ভারতীয় পুরুষ দল। লন্ডন অলিম্পিকে রুপোজয়ী বিজয় কুমারের নেতৃত্বে পেম্বা তামাং, গুরপ্রীত সিংহেরা এ দিন সোনাজয়ী চিনের (১৭৪২) চেয়ে মাত্র দু’পয়েন্ট পিছনে থেকে দ্বিতীয় স্থান পান।
দিনের অন্য পদকটিও অবশ্য তাত্পর্যপূর্ণ। চার বছর আগে গুয়াংঝৌ গেমসে এশিয়াডের সাঁতারের পুলে ২৪ বছরের খরা কাটিয়ে ভারতকে পদক এনে দিয়েছিলেন বীরধাওয়াল খাড়ে। তাঁর আগে এশিয়াডে সাঁতারে ভারতের শেষ পদকজয়ী ছিয়াশির গেমসে খাজান সিংহ। এ দিন খাড়ের পথ ধরেই উপর্যুপরি এশিয়াডের সাঁতারে ব্রোঞ্জ জিতেছেন ৫০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে সন্দীপ সেজওয়াল। “স্বপ্ন সফল হল। প্রচণ্ড পরিশ্রমের ফসল এটা। এর জন্য আট বছর আগে আমি দিল্লির বাড়ি ছেড়ে বেঙ্গালুরু চলে গিয়েছিলাম। সব সময় লক্ষ্য ছিল এশিয়াডের সাঁতারে পদক জেতা,” বলেছেন সন্দীপ। এশিয়াডের ৬৩ বছরের ইতিহাসে সাঁতারের পুল থেকে ভারতের এটা মাত্র চতুর্থ পদক।
তবে আজ স্কোয়াশ কিংবা সাঁতারে ভারতের যাবতীয় আলোর পিছনেই ঘন অন্ধকার ব্যাডমিন্টন কোর্টে। বিশ্বের সাত নম্বর সাইনা নেহওয়াল আর গত মাসেই কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী পারুপল্লি কাশ্যপের একই দিনে হারে ব্যাডমিন্টনের পদক-মঞ্চে ভারতীয়দের দাঁড়ানোর যাবতীয় আশা কার্যত শেষ। সাইনা ফের চিনের চ্যালেঞ্জ টপকাতে ব্যর্থ। যা গত কয়েক বছর ধরে হায়দরাবাদি মেয়ের কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় কাঁটা। একটা সময় বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে সাইনার দাপট দেখে বলা হত, ‘চায়না বনাম সাইনা’। কিন্তু এখন যেন ‘চায়না’ মানেই সাইনার জুজু।
এ দিন প্রাক্তন বিশ্বসেরা ও টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় বাছাই ওয়াং ইহানের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে ষষ্ঠ বাছাই ভারতীয় প্রথম গেমে ১১-১৫ পিছিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ভাবে ২১-১৮ জিতেও তার পর ম্যাচ থেকে হঠাত্-ই হারিয়ে যান! কোর্টের পাশে তাঁর প্রাক্তন ও বর্তমান দুই কোচ যাবতীয় পরামর্শ নিয়ে হাজির থাকা সত্ত্বেও। গোপীচন্দ ও বিমল কুমারের যৌথ টিপসেও সাইনা পরের দুই গেমে ৯-২১, ৭-২১ বিশ্রী হার আটকাতে পারেননি। অথচ এশিয়াডকে দেখিয়েই সাইনা হায়দরাবাদ ছেড়ে বেঙ্গালুরুতে প্রকাশ পাড়ুকোনের অ্যাকাডেমিতে সম্প্রতি আশ্রয় নিয়েছিলেন। ক্রীড়ামন্ত্রককে কার্যত জোর করে বাধ্য করেছিলেন তাঁর ব্যক্তিগত কোচ হিসেবে বেঙ্গালুরুর অ্যাকাডেমির চিফ কোচ বিমল কুমারকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠাতে। যখন ভারতীয় ব্যাডমিন্টন দলের কোচ হিসেবে এশিয়াডে গিয়েছেন গোপীচন্দ! ইহানের বিরুদ্ধে সাইনার নবম সাক্ষাতে স্কোরলাইন ১-৮! একমাত্র জয়টিও দু’বছর আগে ডেনমার্ক ওপেনে, যখন চিনা মেয়ে দ্বিতীয় গেমে চোটের কারণে সাইনাকে ওয়াকওভার দিয়েছিলেন!
সাইনার অবশ্য ব্যাখ্যা, “ম্যারাথন প্রথম গেম জেতার পর আমি সামান্য ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। ফলে দ্বিতীয় গেমে একটু আলগা দিয়ে ফেলি। কিন্তু ওখানেই আমার ছন্দ চলে যায়। কোর্টে আমার মুভমেন্টের উন্নতির জন্যই বিমল কুমারের কাছে ট্রেনিং নিয়েছিলাম। কিন্তু বেঙ্গালুরুতে মাত্র তিন সপ্তাহ ছিলাম। দেশে ফিরে আমি আবার ওখানেই ট্রেনিং করব।” সাইনার পরে কাশ্যপও হেরে যান বিশ্বের এক নম্বর মালয়েশিয়ার লি চংয়ের কাছে স্ট্রেট গেমে। আর শ্রীকান্ত হেরেছেন প্রি-কোয়ার্টারেই।
২০১৪ এশিয়াডের প্রথম সপ্তাহে ভারতের ঝুলিতে ১ সোনা, ২ রুপো-সহ মোট ১৭ পদক। পদক তালিকায় নামতে-নামতে আপাতত ১৭ নম্বরে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy