Advertisement
১৯ মে ২০২৪

গরম পড়তেই বাজারে হিমূলের লস্যি

গত ২০১১-১২ সালের পর থেকে আর্থিক সমস্যায় ধুঁকতে থাকা হিমূলের লস্যি গরমের মরশুমে অনিয়মিত হয়ে পড়ে। গত বছর তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রোজকার দুধের সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে আর লস্যি বাজারে ছাড়তে পারেনি হিমূল কর্তৃপক্ষ।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০১:৪৪
Share: Save:

গরম পড়তেই ফের লস্যির বাজার ধরতে নামল হিমূল।

গত ২০১১-১২ সালের পর থেকে আর্থিক সমস্যায় ধুঁকতে থাকা হিমূলের লস্যি গরমের মরশুমে অনিয়মিত হয়ে পড়ে। গত বছর তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রোজকার দুধের সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে আর লস্যি বাজারে ছাড়তে পারেনি হিমূল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এ বছর গত ৩-৪ মাস ধরে দুধের সরবরাহ ধীরে ধীরে কিছুটা ‘স্বাভাবিক’ হওয়ায় আবার লস্যির প্যাকেট তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় কতৃর্পক্ষ।

গত মাসের শেষ থেকে লস্যি তৈরির উপকরণ ছাড়াও কারখানার ফ্রিজিং ইউনিটকে ঠিকঠাক করা হয়। তার পরে আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকের পর লস্যির তৈরি কাজ শুরুর দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। বৈঠকের ঠিক করার পর প্রতিদিন ২০০-৩০০ লিটার দুধের লস্যি বাজারে আনা হবে বলে ঠিক হয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে। সেই মতন ২০০ লিটারের মত লস্যি বাজারে আসা শুরু হয়ে গিয়েছে।

হিমূলের চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ‘‘প্রতিদিনের দুধের সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে সংস্থার অন্য পণ্য যাতে তৈরি হয়, তার দিকে আমরা নজর দিচ্ছি। এতে সংস্থার আয় শুধু বাড়বে তাই নয়, কারখানার সমস্ত কিছু পুরোপুরি সচল রেখে হিমূলকে চাঙ্গা রাখা হবে। লস্যিকে ফের বাজারে আনার পরিকল্পনা সেইভাবেই তৈরি হয়।’’

সংস্থার অফিসারেরা জানিয়েছেন, এবার ২০০ এমএল প্যাকেটে লস্যি তৈরি করা হচ্ছে। প্রতি প্যাকেটের দাম ১০ টাকার মধ্যেই রাখা হয়েছে। প্রথমে ভ্যানিলা স্বাদের লস্যি তৈরি করা হচ্ছে। সাধারণ মার্চ মাসের শুরু থেকে পুরোদমে গরমের মরশুম শুরু হয়। কিন্তু এবার ফেব্রুয়ারি শেষ থেকে গরমের আবহাওয়া চালু হয়ে যাওয়ায় মার্চের শুরুতেই লস্যি উৎপাদন শুরু হয়েছে। খোঁজখবর করে দেখা গিয়েছে, অন্য সংস্থার ঠান্ডা পানীয়, লস্যি গরম পড়তেই বাজারে নামে। তার আগেই এবার হিমূলের লস্যি বাজারে চলে এসেছে। হিমূলের আউলেট, কাউন্টার ছাড়াও ফ্রিজ রয়েছে এমন ছোট ছোট দোকানে লস্যি প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। দুধের সরবরাহের সঙ্গেই সেগুলি একইভাবে চাহিদা মত বাজারে যাবে। ২০১১ সাল নাগাদ একসময় প্রতিদিন দু’হাজার লিটার হিমূলের লস্যি বাজারে বিক্রি হয়েছে। সেই সংখ্যাটাকেই লক্ষ্যমাত্রা ধরে এগোনো হচ্ছে।

হিমূল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ফের প্যাকেটজাত পনীর, টক দই এবং বোতলবন্দি ঘি বাজারে এনেছে হিমূল। ২০০-৫০০ টাকা কেজি করে গত মাসে তা বাজারে মিলেছে। বর্তমানে কারখানায় ঘি এবং পনীর তৈরির কাজ চলছে। তবে পনীর তৈরি করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট মেশিনের তাপমাত্রার কিছু হেরফের হয়ে যাওয়ায় প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। দ্রুত মেশিন ঠিকঠাক হয়ে যাবে বলে অফিসারেরা জানিয়েছেন। বর্তমানে দু’বেলা মিলিয়ে ৯-১০ হাজার লিটার দুধ বাজারে প্যাকেটজাত করে পাঠানো হচ্ছে।

তবে, সম্প্রতি দুধ এবং দুধের বিভিন্ন প্রডাক্ট তৈরির এক সর্বভারতীয় সংস্থা শিলিগুড়ি লাগোয়া এলাকায় দুধ প্যাকেটজাত করা শুরু করেছে। অন্য কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার মতে, এতে হিমূলের বিক্রিতে এখনই তেমন প্রভাব না পড়লেও ১২/১৪ হাজার লিটারের টার্গেটে এখনও পৌঁছানো যায়নি। সেখানে দুধের সঙ্গে অন্য প্রডাক্টও বাজারে ছেড়ে ‘মার্কেট শেয়ার’ ধরে রাখার চেষ্টা শুরু করেছেন হিমূল কতৃর্পক্ষ। প্রশাসনের কয়েকজন অফিসার জানিয়েছেন, বর্তমানে প্রায় ১৪ কোটি টাকা দেনার দায়ে ডুবে থাকা হিমূলকে নিয়ে এখনও নতুন করে রাজ্য সরকার কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

himool lassi north bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE