Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

টগবগে ঘোড়ার মতো ছুটছেন কোহালিরা, শেষ চারের টিকিট কার্যত ‘বুক’

সেমিফাইনালের টিকিট কার্যত ‘বুক’ করে ফেললেন বিরাট কোহালিরা। এর পরে শুধু দুরূহ অঙ্কই পারে তাঁদের শেষ চারের দৌড় থেকে ছিটকে দিতে।

উদ্‌যাপন: শেই হোপকে ফেরানোর পরে বিরাট কোহালি ও বিজয় শঙ্করের সঙ্গে উল্লাস মহম্মদ শামির। বৃহস্পতিবার ম্যাঞ্চেস্টারে। পিটিআই

উদ্‌যাপন: শেই হোপকে ফেরানোর পরে বিরাট কোহালি ও বিজয় শঙ্করের সঙ্গে উল্লাস মহম্মদ শামির। বৃহস্পতিবার ম্যাঞ্চেস্টারে। পিটিআই

সুমিত ঘোষ
ম্যাঞ্চেস্টার শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০৩:০৫
Share: Save:

ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ উইকেট খেলছে। অসহায় চোখমুখ নিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে। কে বলবে, বল হাতে একটা সময়ে তিনি বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদেরই অসহায় করে তুলতেন!

কার্টলে অ্যামব্রোজ তখনও ঘাড় নাড়ছেন আর বলে চলেছেন, ‘‘এ ভাবে উইকেট ছুড়ে দিতে এসেছে ওরা? ভুলে যাচ্ছে যে, বিশ্বকাপে খেলছে!’’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের সঙ্গে কিছু দিন আগেও যুক্ত ছিলেন অ্যামব্রোজ। এখন আর নেই। তিরাশির সেই বর্ণময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ অস্তমিত হয়েছে অনেক দিন হল। বিশ্বকাপে এই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেই লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে কাপ অভিযান শুরু করেছিল কপিলের ভারত। কিন্তু সেই ম্যাচেও শেষ উইকেটে অ্যান্ডি রবার্টস আর জোয়েল গার্নার মরিয়া লড়াই চালিয়েছিলেন। সেখানেই ২০১৯ বিশ্বকাপের বিধান সম্ভবত লেখা হয়ে থাকল। এ বারের মতো বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেমিফাইনালের টিকিট কার্যত ‘বুক’ করে ফেললেন বিরাট কোহালিরা। এর পরে শুধু দুরূহ অঙ্কই পারে তাঁদের শেষ চারের দৌড় থেকে ছিটকে দিতে। ভারতীয় দল যে-রকম টগবগে ঘোড়ার মতো ছুটছে, তাতে তেমন অঘটন ঘটার আশঙ্কা কম।

কোহালি দারুণ দায়িত্বজ্ঞান দেখাচ্ছেন। বরাবরই তাঁর ব্যাটিং মানে খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য সার্থক কোচিং ম্যানুয়াল যে, শিখে নাও, কী ভাবে দায়িত্ববোধ, শৃঙ্খলা, দায়বদ্ধতা আর মনঃসংযোগ দিয়ে ইনিংস গড়তে হয়। বিশ্বকাপে চারটে হাফসেঞ্চুরি হয়ে গেল। দ্রুততম হিসেবে টেস্ট এবং ওয়ান ডে মিলিয়ে কুড়ি হাজার রানের শৃঙ্গেও পৌঁছে গেলেন। আরও একটা মাইলফলকে সচিন তেন্ডুলকরকে টেক্কা দিলেন তিনি। এ দিনও দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। ৮২ বলে ৭২, ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার, প্রতিপক্ষকে চাবুক মেরে ১২৫ রানে জয় এবং এক পা সেমিফাইনালের চৌকাঠে রেখে ম্যাঞ্চেস্টার ছাড়ছেন কোহালিরা।

সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে তারকা-যুদ্ধ আরও সাংঘাতিক আকার নিয়েছে। এখন সচিন তেন্ডুলকর বনাম মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ধুন্ধুমার লড়াই বেধে যেতে দেরি হচ্ছে না। সাউদাম্পটনে ভারতের মন্থর ইনিংস দেখার পরে সচিন বলেছিলেন, ‘‘ধোনির ব্যাটিংয়ে ইতিবাচক মনোভাবের অভাব দেখেছি।’’ তা নিয়ে তোলপাড় টুইটার। দুই মহাতারকার ভক্তদের মধ্যে রীতিমতো যুদ্ধ লেগে গিয়েছে। কে বলবে, আট বছর আগের এক বিশ্বকাপে এই ধোনির অধীনেই জীবনের অধরা বিশ্বকাপ জিতে ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়েতে কোহালিদের কাঁধে চেপে ভিকট্রি ল্যাপ দিয়েছিলেন সচিন!

এ দিন কেদার যাদব আউট হওয়ার পরে যখন প্যাভিলিয়নের সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসছেন ধোনি, গোটা মাঠ উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে স্বাগত জানাল। সাউদাম্পটন ধিক্কার দিয়েছিল। ম্যাঞ্চেস্টার আবার বুকে টেনে নিল। কারও কারও মনে পড়ে গেল ‘এমএসডি’ ফিল্মের প্রথম দৃশ্যের কথা। ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল। মুরলীধরন বল করছেন আর চেন্নাই সুপার কিংসের নেটে মুরলীকে খেলে খেলে পোক্ত হয়ে গিয়েছেন তিনি। কোচ গ্যারি কার্স্টেনকে গিয়ে বললেন, ‘‘যুবিকে পরে যেতে বলো। মুরলী বল করছে। আমিই যাব।’’ অনেকে আজও মনে করতে গিয়ে শিহরিত হয়ে ওঠেন যে, একটা লোকের নিজের উপরে কী পরিমাণ বিশ্বাস থাকলে বিশ্বকাপ ফাইনালে এই বদলটা করতে পারে? অথচ, গোটা প্রতিযোগিতায় ধোনি রান পাচ্ছিলেন না, যুবরাজ ছিলেন সর্বোচ্চ স্কোরার।

ওয়াংখেড়ের ফাইনালে সেই ছক্কা মেরে জেতানো থেকে ক্রিকেটে তৈরি হয়ে যায় জনপ্রিয় নতুন লাইন— ‘ধোনি ফিনিশেস ইন স্টাইল’। ফিনিশার শব্দটাও সম্ভবত সেখান থেকেই তৈরি।

এই লাইনটা যিনি চালু করেছিলেন, তাঁর নাম রবি শাস্ত্রী। ওয়াংখেড়ের ফাইনালে তখন তিনি ছিলেন ধারাভাষ্যকার। ধোনি ছক্কা মেরে জেতানোর সময় শাস্ত্রী বলে ওঠেন, ‘‘ধোনি ফিনিশেস ইন স্টাইল। পার্টি বিগিনস অ্যাট মেরিন ড্রাইভ।’’ শাস্ত্রী এখন ভারতীয় দলের হেড কোচ। ধোনির প্রতি অগাধ আস্থা। যেমন আস্থা অধিনায়কের। এ দিনও অগ্রজকে নিয়ে বলে গেলেন অনুজ, ‘‘সকলেরই খারাপ দিন যায়, কিন্তু ওর একটা খারাপ দিন গেলেই সকলে আক্রমণ শুরু করে দেয়। তাতে আমাদের মনোভাবে কোনও পরিবর্তন হয় না। ড্রেসিংরুমে আমরা সব সময় ওর দিকে তাকিয়ে থাকি।’’ ধোনি যখন শেষ বলে ছক্কা মেরে দৌড়ে দৌড়ে ফিরছেন ওই ড্রেসিংরুমেই, কোহালিকে দেখা গেল সম্ভ্রমে ঠোঁট উল্টে হাততালি দিচ্ছেন।

ম্যাঞ্চেস্টার এ দিন আর ‘রেনচেস্টার’ নয়, সত্যিই ‘সানচেস্টার’। সকাল থেকে উজ্জ্বল রোদ। কিন্তু ধোনি যখন নামছেন, স্কোরবোর্ডে আচমকাই অন্ধকার। ঊনত্রিশতম ওভারে ভারত ১৪০-৪। কেমার রোচ দারুণ সুইং করাচ্ছেন। তিন উইকেট তুলে নিয়েছেন সাত ওভারে। ধোনি আসতেই তাঁকে বাড়তি স্লিপ দিয়ে স্বাগত জানালেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। অদ্ভুত কিছু ব্যাপারস্যাপারও তখন করতে দেখা যাচ্ছে ধোনিকে। একটা করে বল খেলছেন আর আকাশের দিকে তাকাচ্ছেন। যেন ঝলমলে ইনিংস খেলতে গেলে প্রত্যেক বলেই চাই সূর্যদেবের আশীর্বাদ। আবার জলপানের সময়েও দেখা গেল, তিনি শ্যাডো করে চলেছেন। ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি জেমস অ্যান্ডারসন রেডিয়োয় কমেন্ট্রি করছেন। বলে ফেললেন, ‘‘এই শ্যাডো করার ভঙ্গি বলে দিচ্ছে, কতটা প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছে। ধোনি খুব বড় মাপের ক্রিকেটার। আমরা প্রতিপক্ষ হয়েও অসম্ভব শ্রদ্ধা করি।’’ ম্যাঞ্চেস্টার এত দিন ছিল লালের শহর, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের শহর। রেড ডেভিলের শহর। এ দিন হয়ে উঠেছিল নীলের শহর। দেশ-বিদেশ থেকে ভারতীয় সমর্থকেরাই ছিলেন গ্যালারির নিরানব্বই শতাংশ জুড়ে। ঢাক, ঢোল শঙ্খ বাজিয়ে, তেরঙ্গা উড়িয়ে, মেক্সিকান ওয়েভ তুলে তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন, এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের যেখানে যাবেন কোহালিরা, তাঁদের হয়ে গলা ফাটাতে হাজির থাকবে এই নীল জনসমুদ্র।

শেষ পর্যন্ত ধোনি করলেন ৬১ বলে ৫৬। আবারও রানের চেয়ে বল বেশি। ভারতীয় বোলিং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুরমুশ করে দেওয়ায় স্ট্রাইক রেট নিয়ে কথা উঠল না। তা বলে একেবারে উপেক্ষা করা যাবে না কিছু পরিসংখ্যান। প্রথম ৪০ বলে করেছেন ২০ রান। ৬১ বলের ইনিংসে ২৭টি বলে কোনও রান করতে পারেননি। এই নেতিয়ে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে হয়তো বড় হয়ে দেখা দিল না। অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দল বিপাকে ফেলতে পারে। হার্দিক পাণ্ড্য এবং ধোনি শেষ দশ ওভারে তুলে দিলেন ৮২। এর মধ্যে শেষের ওভার বাদ দিলে বেশি আগ্রাসী ছিলেন হার্দিকই। তেমনই ১২৫ রানে জয়ে বড় অবদান মহম্মদ শামির দুর্দান্ত ওপেনিং স্পেলের। রেলওয়ে ট্র্যাকে বল ওড়াতে পারলেন না ক্রিস গেল। তার আগেই শামির বাউন্সার হুক করতে গিয়ে ক্যাচ তুললেন তিনি। এর পরে বিস্ময় ডেলিভারিতে ফিরিয়ে দিলেন শেই হোপকে। অফস্টাম্পের উপর থেকে সিমে পড়ে চকিতে কাট করে ভিতরে ঢুকে এসে স্টাম্পে লাগল। স্বপ্নের ডেলিভারি! ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের দুই প্রাক্তন কিংবদন্তি পেসার মাইকেল হোল্ডিং আর কার্টলে অ্যামব্রোজ উপস্থিত ছিলেন ধারাভাষ্যকার বক্সে। তাঁদের দেখতে হল, ভারতীয় ফাস্ট বোলারেরা বাউন্সার দিচ্ছেন আর ভিভ রিচার্ডসের দেশের ব্যাটসম্যানরা মাথা বাঁচানোর জন্য লড়াই করছেন!

আরও এক জনকে পাওয়া গেল কমেন্ট্রি বক্সে। ছত্রিশ বছর আগের ফাইনালে কপিলের দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। হাঁটু মুড়ে মারা সেই স্কোয়ার ড্রাইভের ছবি আজও কেউ ভুলতে পারেনি। তিনি কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্তেরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার উইকেট পড়া দেখেই বলে দিলেন, ‘‘ওরা আর পারবে না। আমরাই জিতছি। ওদের ব্যাটসম্যান কোথায়?’’ সময় কত কিছুই পাল্টে দিতে পারে! তিরাশির ফাইনালে লাঞ্চের সময়েও শ্রীকান্তরা ভাবতে পারেননি, তাঁরা বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করবেন। আর এখন ভারতের জয়ই যেন ভবিতব্য।

ওল্ড ট্র্যাফোর্ডও তাই আর অঘটনের চিত্রনাট্য লিখতে যায়নি। ছত্রিশ বছর আগে ফেভারিটকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল আন্ডারডগ। সে-দিন জন্ম নেওয়া নতুন এক শক্তি আজ ক্রিকেটের মহাশক্তি। তারাই জিতল! ফেভারিটই জিতল!

স্কোরকার্ড
ভারত ২৬৮-৭ (৫০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪৩ (৩৪.২)

ভারত
রাহুল বো হোল্ডার ৪৮•৬৪
রোহিত ক হোপ বো রোচ ১৮•২৩
বিরাট ক ব্র্যাভো (পরিবর্ত) বো হোল্ডার ৭২•৮২
শঙ্কর ক হোপ বো রোচ ১৪•১৯
কেদার ক হোপ বো রোচ ৭•১০
ধোনি ন. আ. ৫৬•৬১
হার্দিক ক অ্যালেন বো কটরেল ৪৬•৩৮
শামি ক হোপ বো কটরেল ০•২
কুলদীপ ন. আ. ০•১
অতিরিক্ত ৭
মোট ২৬৮-৭ (৫০)
পতন: ১-২৯ (রোহিত, ৫.৬), ২-৯৮ (রাহুল, ২০.৪), ৩-১২৬ (শঙ্কর, ২৬.১), ৪-১৪০ (কেদার, ২৮.৫), ৫-১৮০ (কোহালি, ৩৮.২), ৬-২৫০ (হার্দিক, ৪৮.২), ৭-২৫২ (শামি, ৪৮.৫)।
বোলিং: শেল্ডন কটরেল ১০-০-৫০-২, কেমার রোচ ১০-০-৩৬-৩, ওশেন থমাস ৭-০-৬৩-০, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ১০-০-৫২-০, জেসন হোল্ডার ১০-২-৩৩-২, কার্লোস ব্রাথওয়েট ৩-০-৩৩-০।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ
গেল ক কেদার বো শামি ৬•১৯
অ্যামব্রিস এলবিডব্লিউ বো হার্দিক ৩১•৪০
হোপ বো শামি ৫•১০
পুরান ক শামি বো কুলদীপ ২৮•৫০
হেটমায়ার ক রাহুল বো শামি ১৮•২৯
হোল্ডার ক কেদার বো চহাল ৬•১৩
ব্রাথওয়েট ক ধোনি বো বুমরা ১•৫
অ্যালেন এলবিডব্লিউ বো বুমরা ০•১
রোচ ন. আ. ১৪•২১
কটরেল এলবিডব্লিউ বো চহাল ১০•৮
থমাস ক রোহিত বো শামি ৬•১১
অতিরিক্ত ১৮ মোট ১৪৩ (৩৪.২)
পতন: ১-১০ (গেল, ৪.৫), ২-১৬ (হোপ, ৬.৫), ৩-৭১ (অ্যামব্রিস, ১৭.৬), ৪-৮০ (পুরান, ২০.২), ৫-৯৮ (হোল্ডার, ২৩.৫), ৬-১০৭ (ব্রাথওয়েট, ২৬.১), ৭-১০৭ (অ্যালেন, ২৬.২), ৮-১১২ (হেটমায়ার, ২৮.৩), ৯-১২৪ (কটরেল, ২৯.৫), ১০-১৪৩ (থমাস, ৩৪.২)।
বোলিং: মহম্মদ শামি ৬.২-০-১৬-৪, যশপ্রীত বুমরা ৬-১-৯-২, হার্দিক পাণ্ড্য ৫-০-২৮-১, কুলদীপ যাদব ৯-১-৩৫-১, কেদার যাদব ১-০-৪-০, যুজবেন্দ্র চহাল ৭-০-৩৯-২।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Indi West indies ICC World Cup 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE