মেজাজে: রাঁচীতে প্রাক-ম্যাচ প্রস্তুতি কোহালিদের। পিটিআই
তৃতীয় টেস্ট শুরুর আগে দুই দলের মধ্যে বন্ধুত্বের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা কম করছে না দুই দেশের বোর্ড। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে উড়ে আসা নতুন ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন দুই ক্যাপ্টেনকে মুখোমুখি বসিয়ে বন্ধুত্বের অঙ্গীকার করানোর চেষ্টাও করবেন। কিন্তু তাতে কি কোনও লাভ হবে? আদৌ শান্তির বাতাবরণ থাকবে তো? মঙ্গলবার রাঁচীর টেস্ট গ্রহে ঢুকে এই প্রশ্নটাই মনে এল বারবার।
ভারতীয় টিমের অনুশীলনের পরে বিরাট কোহালিদের ড্রেসিংরুম থেকে একটা গান ভেসে আসছিল। কিশোর কুমারের সেই বিখ্যাত গানের মুখড়া— ‘দিয়ে জলতে হ্যায়, ফুল খিলতে হ্যায়। বড়ি মুশকিল সে মগর দুনিয়া মে দোস্ত মিলতে হ্যায়।’ দুনিয়ায় বন্ধু পাওয়া সোজা তো নয়ই, তার ওপর দু’দলের ক্রিকেটারেরা আদৌ বন্ধু বানানোর মেজাজে আছেন কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। ভারতীয় টিমের রিংটোনে বন্ধুত্বের আমেজটা যে টের পাওয়া যাচ্ছে না!
বরং টেস্টের ৪৮ ঘণ্টা আগে যে ইঙ্গিতটা পাওয়া যাচ্ছে, সেটার মধ্যে আগ্রাসনের তেজটাই বেশি ধরা পড়ছে। মঙ্গলবার অনিল কুম্বলের সাংবাদিক বৈঠকে সেটাই বোঝা গেল। ‘‘আমি আমার দলের কোনও ক্রিকেটারকে তার স্বাভাবিক আগ্রাসন কমাতে বলতে পারব না’’, সাফ বলে দিলেন কোহালিদের গুরুমশায়।
সিরিজ ১-১। লড়াই এখন সমানে সমানে। তৃতীয় টেস্টে জেতা মানে আর সিরিজ হারতে হবে না। দু’দলই যে রাঁচীর মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বে, এ আর বলতে? তাই ভারতীয় ক্রিকেটের মিস্টার কুলের ক্রিকেট পাড়া যে আগামী কয়েক দিন ‘কুল’ থাকবে না, ধোনিনগরীতেও যে উত্তেজনার আগুন ফের জ্বলতে পারে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার সকালে রিচি রিচার্ডসন জেএসসিএ স্টেডিয়ামে এসে অস্ট্রেলিয়ার ক্যাপ্টেন স্টিভ স্মিথের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে যান। বুধবার যে তাঁকে এবং কোহালিকে নিয়ে বসবেন রিচার্ডসন, তারই আভাস সম্ভবত দিয়ে গেলেন। কিন্তু তাতে কতটা লাভ হবে বলা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই তো অস্ট্রেলিয়া শিবির থেকে ম্যাথু ওয়েড থেকে নেথান লায়ন হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন। যার মর্ম, প্রয়োজনে স্লেজ করতেও আমরা তৈরি।
আরও পড়ুন: গড়াপেটা নিয়ে এ বার সাসপেন্ড ইরফানও
তা হলে ভারতীয় শিবিরই বা গুটিয়ে থাকবে কেন? বেঙ্গালুরুতে তাঁর দলের ছেলেদের মধ্যে অতি আগ্রাসনের যে বীজ রোপণ হয়েছে, তা সমূলে উপড়ে নিতে চান না কুম্বলে। বললেন, ‘‘জোর করে কারও স্বাভাবিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। মাঠে প্রত্যেকেরই প্রতিক্রিয়া জানানোর নিজস্ব ভঙ্গি আছে। একে রোখা মুশকিল।’’
ভারতীয়দের অনুশীলনেও পাওয়া গেল আগ্রাসনের ছোঁয়া। এমন একটা গরমাগরম সিরিজে ব্যাট হাতে জবাব দিতে পারছেন না বলে যে ভিতরে ভিতরে ছটফট করছেন কোহালি, তা কিছুটা আন্দাজ করা গেল তাঁকে নেটে দেখে। যতক্ষণ নক করে গেলেন, বেশির ভাগই স্কোয়ার ড্রাইভ, কাট, অফ স্টাম্পের বাইরের বল সামলানোর প্র্যাকটিস। কিপিং প্র্যাকটিস করতে গিয়ে ঋদ্ধিমান সাহা এ দিন ফের ঝাঁপিয়ে পড়ে এমন একটা ক্যাচ নিলেন, ম্যাচ হলে তাঁকে নিয়ে ফের হইচই পড়ে যেত। অনুশীলনেই এত মরিয়া, ম্যাচে কী হবে, কে জানে।
বৃহস্পতিবার আগ্রাসনের ক্যাপসুল হয়তো সঙ্গে নিয়েই তৃতীয় টেস্টে নামবেন বিরাটরা। সঙ্গে রিংটোন— ‘বড়ি মুশকিল সে মগর দুনিয়া মে দোস্ত মিলতে হ্যায়।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy