অম্বাতি রায়ুডুকে অভিনন্দন সতীর্থের। রয়টার্সের তোলা ছবি।
বিশ্বকাপের পর ভারতীয় দলের নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে।
ক্রিকেট-বিশ্বের বড় টিমেরও আর দরকার পড়ছে না। মাঝারি, এমনকী অতীব দুর্বল টিমও এখন নাকানাকিচোবানি খাইয়ে ছাড়ছে টিম ইন্ডিয়াকে! কখনও বাংলাদেশে খেলতে গিয়ে ওয়ান ডে সিরিজ হেরে ফিরতে হচ্ছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির পূর্ণশক্তির টিম ইন্ডিয়াকে। কখনও আবার অজিঙ্ক রাহানের ভারত কোনও ক্রমে মান বাঁচাচ্ছে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে। ম্যাচ জিতছে চার রানে!
এল্টন চিগুমম্বুরাকে ক’জন চিনতেন শুক্রবারের হারারে-যুদ্ধের আগে? ক্রিকেটকুলের কেউ কেউ জেনে থাকতে পারেন যে, ব্রেন্ডল টেলর উত্তর জিম্বাবোয়ে ব্যাটিংয়ের ভরসা বলতে তিনি। কিন্তু তিনি যে ভুনেশ্বরকুমার, ধবল কুলকার্নি, হরভজন সিংহদের বিধ্বস্ত করে দিতে যথেষ্ট তার প্রমাণ পাওয়া গেল আজ। ভারতের অম্বাতি রায়াডু সেঞ্চুরি করে থাকলে, জিম্বাবুয়ের চিগাম্বুরার সেঞ্চুরিও কম মর্যাদার নয়। ঠিকঠাক বললে, জিম্বাবোয়ে ব্যাটসম্যানের কীর্তি অনেক বেশি রোমাঞ্চকর। কারণ সেটা এসেছে ক্রিকেট-বিশ্বের ‘গোলিয়াথ’ ভারতের বিরুদ্ধে। যতই তারা দ্বিতীয় সারির দল পাঠাক না কেন। যতই দিনের শেষে তাঁকে ট্র্যাজিক নায়ক বলতে হোক না কেন।
সেঞ্চুরি করলেন রায়ুডু। ছবি: এপি।
হারারে স্পোর্টস ক্লাবের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ভারত এ দিন ২৫৬ তুলেছিল। স্কোর হিসেবে যথেষ্ট বড় নয়, কিন্তু ক্রিকেটের দুর্বল শক্তি হিসেবে পরিচিত জিম্বাবোয়েকে তার চেয়ে অনেক কমে শেষ করে দেওয়া উচিত ছিল। সেটা তো হলই না, উল্টে দেখা গেল জিম্বাবোয়ে সফরে রাহানেদের প্রথম ওয়ান ডে ক্রমশ টি-টোয়েন্টির চেহারা নিচ্ছে। একটা সময় ১৬০-৬ হয়ে গিয়েছিল জিম্বাবোয়ে। সেখান থেকে একা টিমকে নিয়ে যান চিগুম্বুরা। শেষ ওভারে জিম্বাবোয়ের ঐতিহাসিক জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায়— ৬ বলে ১০। কিন্তু ভুবনেশ্বরকুমারের দুর্ধর্ষ বোলিংয়ে তিনি আর সেঞ্চুরিকে রূপকথায় বদলে দিতে পারেননি।
ভারতকে আবার বাঁচিয়ে দিল একটা সেঞ্চুরি। অম্বাতি রায়ুডুর। অজিঙ্ক রাহানে এবং মুরলী বিজয়—ভারতের দুই ওপেনারই এ দিন খুব সুবিধে করতে পারেননি। রাহানে ৩৪ করে আউট হয়ে যান। বিজয় করেন মাত্র ১। শুধু তাই নয়, রায়ুডু-বিনিকে বাদ দিলে ব্যাটিংয়ের বাকিদের অবস্থাও তথৈবচ। কেদার যাদব ৫, রবিন উথাপ্পা কোনও রান করার আগেই রান আউট, বাংলার মনোজ তিওয়ারি ২। একটা সময় মাত্র সাতাশি রানে পাঁচ উইকেট চলে গিয়েছিল ভারতের। সেখান থেকে টিমকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন রায়ুডু এবং বিনি। তিনে নেমে ১৩৩ বল খেলে অপরাজিত ১২৪ করে যান রায়ুডু। এমনিতেই হায়দরাবাদ তরুণের কাছে জিম্বাবোয়ের মাঠ বরাবরের পয়া। এখানে তাঁর ব্যাটিং গড়ও দুর্দান্ত—১১২! এ দিন রায়ুডু বারোটা বাউন্ডারি আর একটা ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো যে ইনিংসটা খেললে, সেটা না থাকলে ভারতকে বড়সড় বিপদে পড়তে হতে পারত। কম কৃতিত্ব দেওয়া যাবে না স্টুয়ার্ট বিনিকেও। ৭৬ বলে ৭৭, বল হাতে ৫৪ রান দিয়ে দু’টো উইকেট। রজার বিনি-পুত্রকে মাঝেমধ্যেই টিমের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হত এত দিন। কিন্তু সে ভাবে খেলানো হত না। এ দিন বিনি বোঝালেন, টিমে অলরাউন্ডারের স্লটটা তাঁকে ছেড়ে দিলে খুব খারাপ করবেন না।
কিন্তু সে সব আলোচনা আর কত দূর হবে কে জানে। সহজ ম্যাচে কঠিন জয় এলে তো সাফল্যের চেয়ে টিমের ফুটোফাটা নিয়েই বেশি আলোচনা হওয়া উচিত!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy