Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ বার আর আবেগ নয়, খেলব মস্তিষ্ক দিয়ে

১৯ মার্চের মেলবোর্নে বাংলাদেশ ম্যানেজার হিসেবে তিনি ছিলেন, আবার ১৮ জুনের মীরপুরেও তিনি তাই। বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক। এ পারের ক্রিকেটমহলে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় চরিত্র। এবং বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের সেই আগুনে দিন থেকে তার পরের সময়, কাপ-পরবর্তী অধ্যায়ে প্রথম ভারত বনাম বাংলাদেশ নিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন মীরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আনন্দবাজারকে যা বললেন...বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের সেই আগুনে দিন থেকে তার পরের সময়, কাপ-পরবর্তী অধ্যায়ে প্রথম ভারত বনাম বাংলাদেশ নিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন মীরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আনন্দবাজারকে যা বললেন...

শাস্ত্রীর ক্লাসে রায়না। বুধবার ভারতীয় প্র্যাকটিসে। ছবি: দেবাশিস সেন।

শাস্ত্রীর ক্লাসে রায়না। বুধবার ভারতীয় প্র্যাকটিসে। ছবি: দেবাশিস সেন।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়
ঢাকা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৫ ০৩:২২
Share: Save:

প্রশ্ন: বিশ্বকাপের মেলবোর্ন মনে পড়ছে?

সুজন: ওয়ার্ল্ড কাপ, ওয়ার্ল্ড কাপের সময়ে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা, সবই আমরা ভুলে গিয়েছি। ও সব চার মাস আগের কথা।

প্র: কিন্তু বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে তো এখনও বাংলাদেশে আলোচনা হচ্ছে। প্রতিশোধের একটা ব্যাপার তুলে ধরা হচ্ছে আসন্ন সিরিজে।

সুজন: আমি মনে করি না প্রতিশোধের কোনও ব্যাপার প্লেয়ারদের মধ্যে আছে বলে। আর ভারতের সঙ্গে ক্রিকেটীয় সম্পর্কে আগুন লেগে গিয়েছে ভাবাও ভুল। ছেলেরা মাঠের ব্যাপারটা মাঠেই চুকিয়ে এসেছিল। মাঠের বাইরে ইন্ডিয়া প্লেয়ারদের সঙ্গে আমাদের ভালই বন্ধুত্ব। হ্যাঁ, বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের সময় কয়েকটা সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রচুর কথা হয়েছিল। কিন্তু সিদ্ধান্ত তো আমরা আর কন্ট্রোল করতে পারি না। ওটা আমাদের হাতে নেই।

প্র: ক’টা সিদ্ধান্ত মেলবোর্নে আপনাদের বিরুদ্ধে গিয়েছিল বলে মনে করেন?

সুজন: ও ভাবে বলা যায় না। টিমের সঙ্গে থাকলে আরওই যায় না।

প্র: আপনি বলছেন না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সে দিনের দুই আম্পায়ারকে এখনও ক্ষমা করেননি।

সুজন: মিডিয়ায় যা এসেছে, সে নিয়ে আর ঘাঁটাঘাঁটি করতে চাই না। আর আমি শুধু ড্রেসিংরুমেরটা বলতে পারি।

প্র: ড্রেসিংরুমের অবস্থা সে দিন ঠিক কী দাঁড়িয়েছিল?

সুজন: সবারই মন খারাপ ছিল। ওই ম্যাচটা জিতে গেলে সেমিফাইনাল হয়ে যেত। বিশাল ব্যাপার হত। কিন্তু ওটা নিয়ে তার পর আর কথাবার্তা, মিটিং হয়নি। বরং আমি তো মেনে নেব যে, মেলবোর্নে আমরা নিজেরাই প্রচুর ভুল করেছিলাম। আমাদের আরও ভাল খেলা উচিত ছিল।

প্র: কোয়ার্টার ফাইনালে অতিরিক্ত আবেগ তা হলে হারিয়ে দিয়েছিল?

সুজন: অনেক কারণই ছিল। আসলে আপনি যদি মানসিক ভাবে টাফ হন, আবেগটা অত আসবে না। দেশের জার্সি পরে নামলে আবেগ কাজ করবেই। কিন্তু সেটাকে দেখানো যাবে না।

প্র: আপনি বলছেন, মেলবোর্নের বাংলাদেশ ড্রেসিংরুম ব্যাপারটা মেনে নিয়েছিল। কিন্তু শোনা যায়, ড্রেসিংরুমে কোনও কোনও ক্রিকেটার কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেছিলেন, তাঁরা হারেননি। তাঁদের হারানো হয়েছে। ভারতকে আবার পেলে ছাড়া হবে না।

সুজন: ছাড়া হবে না, দেখে নেব, এ সব তো ঔদ্ধত্যের কথা হয়ে গেল। ও সব হয়নি। আর ছেলেরা তখনকার চেয়ে এখন অনেক বেশি প্র্যাকটিক্যাল। তারা বোঝে যে, একটা ম্যাচ হেরে গেলে জীবন শেষ হয়ে যায় না। দেশবাসীর খারাপ লাগলে তারা অনেক কিছুই বলে। কিন্তু ক্রিকেটারদের সে ভাবে ভাবলে চলে না। তাদের বিশ্বাস করতে হয় যে, প্রত্যেক দিন সূর্য ওঠে। ক্ষোভ, অভিমান চেপে রেখে লাভ হয় না। এটা তো ক্রিকেট। কোনও ফিজিক্যাল গেম নয়। এখানে জিততে গেলে ট্যাকটিক্স লাগবে।

প্র: তার মানে কাল থেকে আবেগ বাদ দিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ?

সুজন: আবেগ দিয়ে ম্যাচ জেতা যাবে না। ভারতের ব্যাটিং, বোলিং দুটোই ভাল। ওদের হারাতে গেলে ভাল স্ট্র্যাটেজি করে হারাতে হবে।

প্র: সোজাসুজি বললে, হৃদয় নয়। এ বার গুরুত্ব মস্তিষ্কের?

সুজন: হ্যাঁ। আর এটাও বলে দিই যে, একটা উত্তেজক ওয়ান ডে সিরিজ আপনারা পাবেন। আমরা কিন্তু পাকিস্তানকে হারিয়েছি। ভারত ভাল। আমাদের চেয়ে শক্তিশালী। কিন্তু আমরাও লড়াই ছেড়ে দেব না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE