Advertisement
E-Paper

ধোনি-মন্ত্রেই এই আগ্রাসন, বলছেন ঈশান

সেই ছেলেটি ঈশান কিসান, যিনি বুধবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হাত থেকে প্রায় একাই জয় ছিনিয়ে নেন। কুলদীপ যাদবের একই ওভারে পরপর চারটি ছয় মেরে ম্যাচের ছবিটাই পাল্টে দেন যিনি।

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ০৫:৩০

গত সপ্তাহে বেঙ্গালুরুতে টসের আগে দলের হাডলে (গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আলোচনা) সতীর্থদের তাতানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ১৯ বছরের একটা ছেলেকে তাতানোর দায়িত্ব কেন? প্রশ্নটা শুনে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক রোহিত শর্মা উত্তর দিয়েছিলেন, ‘‘ড্রেসিংরুমে খুব বকবক করে ও। তাই একটু অন্য রকম কিছু করার জন্য ওকেই দায়িত্ব দিলাম টিম হাডলে দলকে তাতানোর।’’

সেই ছেলেটি ঈশান কিসান, যিনি বুধবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হাত থেকে প্রায় একাই জয় ছিনিয়ে নেন। কুলদীপ যাদবের একই ওভারে পরপর চারটি ছয় মেরে ম্যাচের ছবিটাই পাল্টে দেন যিনি।

সে দিন যে আস্থা তাঁর উপর রাখা হয়েছিল, এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই তার যোগ্য জবাব দিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির স্নেহধন্য এই তরুণ। রোহিত শর্মার প্রিয় মাঠ ইডেন মাতিয়ে দিলেন একা ঈশানই। পাঁচটি চার, ছ’টি ছয়। পটনার ছেলেটির ব্যাটে যেন আগ্রাসী ধোনিরই ছায়া দেখা গেল।

ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের সামনে এসে স্বীকারও করলেন তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ধোনির প্রভাবের কথা। বলেন, ‘‘ধোনিভাইয়ার প্রচুর সাহায্য পেয়েছি। ওঁর মতো কিংবদন্তির যখনই দেখা পাই প্রচুর পরামর্শ নিই। সব সময়ই ব্যাট করতে নেমে সময় নিতে বলেন, পরিস্থিতি বুঝে খেলার চেষ্টা করার পরামর্শ দেন। ওঁর মতো একজন তারকা যখন আমার সঙ্গে এ ভাবে কথা বলেন, তখন প্রচুর আত্মবিশ্বাস পাই। সেই আত্মবিশ্বাসই আমার ব্যাটিংয়ে কাজে লাগে।’’ শুধু ধোনি নন, অধিনায়ক রোহিত শর্মার কাছেও কৃতজ্ঞ ঈশান। বলেন, ‘‘রোহিত ভাইয়াও আমাকে বলেন, তুই নিজের খেলাটা খেল। নিজের উপর আস্থা রেখে খেল। বলে চোখ রেখে খেলবি। ক্রিজে থাকলে রান আসবেই। শেষ পর্যন্ত বল দেখে খেলারও পরামর্শ দেন। আজও ব্যাট করতে নামার আগে একই কথা বলেছিলেন। এতে আমি খুব মানসিক জোর পাই।’’

বুধবার ইডেন মাতিয়ে দেন তাঁর চার-ছক্কার ঝড়ে। বিশেষ করে কুলদীপের এক ওভারে তাঁর পরপর চারটি ছয়ই নাইটদের দিক থেকে পুরো ম্যাচটা তাঁদের দিকে নিয়ে চলে আসে। কুলদীপকে বারবার বাউন্ডারির বাইরে ফেলা নিয়ে ঈশান বলেন, ‘‘কুলদীপ আগেও অনেক গুগলি বল করেছে আমাকে। (ঘরোয়া ক্রিকেটে) ওর বিরুদ্ধে তো আগেও খেলেছি। আজও একই রকম বল করেছিল। জানতাম অফ স্টাম্পের বাইরে বল করবে, আর আমি তখনই মারব। আর উল্টোদিকে রোহিত ভাইও ব্যাট করছিলেন, আত্মবিশ্বাস ছিল যে, আমি না পারলে উনি মারবেন।’’

এমন আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলার পরিকল্পনা নিয়েই যে নেমেছিলেন, তা জানিয়ে ঈশান বলেন, ‘‘ঠিকমতো ব্যাটে বলে করার দিকে নজর দিই। আজ দিনটা আমার ছিল। শেষ পর্যন্ত বল দেখে তা মেরে ওড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিলাম। শর্ট বলের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, যা পুল করে উড়িয়ে দিতে পারি।’’ ধোনি মন্ত্রে দীক্ষিত ঈশান বরাবরই চালিয়ে খেলতে অভ্যস্ত। গতি বরাবরই পছন্দ ১৯ বছরের ছেলেটির। ২০১৬-য় অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগে জোরে গাড়ি চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক অটোরিক্সায় ধাক্কা মেরেছিলেন। পুলিশ গ্রেফতার করেছিল তাঁকে। ব্যাট করতে নেমেও সেই গতিরই ভূত চাপে তাঁর মাথায়। রঞ্জি ট্রফিতেও দিল্লির বিরুদ্ধে এক ইনিংসে ১৪টা ছয় মেরে রেকর্ড করেছিলেন। সেই মরসুমেই ধোনির ক্লাসে বারবার দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তার পরেই ধোনির মন্ত্রে নিজেকে পুরো পাল্টে ফেলেন তিনি। ঈশানের কথায়, ‘‘ধোনি ভাইয়া বলেছিলেন, আগ্রাসনের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণও আনতে হবে আমাকে। সেই শিক্ষাই কাজে লাগে আমার।’’

চলতি আইপিএলে ২৩ বলে ৪৪ ও ৪২ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু বুধবার ইডেনে যেটা খেললেন, সেটাই সেরা। আর তাঁর এই ইনিংসেই আইপিএলে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স শিবির।

অন্য দিকে মুম্বই-গাঁট কাটাতে না পেরে প্রচন্ড হতাশ নাইট অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের মুখেও ঈশানেরই কথা। বললেন, ‘‘ও প্রায় একাই ম্যাচটা আমাদের হাত থেকে নিয়ে চলে গেল।’’ এখন নাইটদের সামনে শেষ তিন ম্যাচই জেতা ছাড়া কোনও উপায় নেই। দীনেশ বলছেন, ‘‘তিনটে ম্যাচ নিয়ে একসঙ্গে ভাবছি না আমরা। একটা করে ম্যাচ ধরে ধরে এগবো। দেখা যাক কী হয়। তবে প্লে অফে যাওয়ার সুযোগ যখন আছে, তখন আশা ছাড়ব কেন?’’

ishan kishan IPL 2018 IPL 11
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy