Advertisement
E-Paper

রাসেলকে আর কবে আনা হবে ব্যাটিং অর্ডারে উপরের দিকে

জাক কালিস আর দীনেশ কার্তিকের কাছে একটা প্রশ্ন করতে চাই। কোন যুক্তিতে আন্দ্রে রাসেলকে সাত নম্বরে খেলানো হচ্ছে? রিঙ্কু সিংহের পরে নামছে রাসেল! এ তো বিপক্ষের হাতে প্লেটে করে ম্যাচ তুলে দেওয়া।

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫৪
পরীক্ষা: তোমার ব্যাটেও তো প্রচুর শক্তি। ম্যাচের পরে যেন বেয়ারস্টোকে এ কথাই বলছেন রাসেল। পিটিআই

পরীক্ষা: তোমার ব্যাটেও তো প্রচুর শক্তি। ম্যাচের পরে যেন বেয়ারস্টোকে এ কথাই বলছেন রাসেল। পিটিআই

রবিবার হায়দরাবাদে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে দেখে মনে হল, ওরা পুরো খেই হারিয়ে ফেলেছে। কী দল নামাতে হবে, ব্যাটিং অর্ডার কী রকম হবে, ক্যাচ কী ভাবে ধরতে হবে— সব কিছু গুলিয়ে ফেলেছে। যার জেরে টানা পাঁচ নম্বর ম্যাচ হেরে প্লে-অফে ওঠার রাস্তা রীতিমতো কঠিন করে ফেলল নাইটরা। নাইটদের ১৫৯-৮ মাত্র ১৫ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে তুলে দিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

জাক কালিস আর দীনেশ কার্তিকের কাছে একটা প্রশ্ন করতে চাই। কোন যুক্তিতে আন্দ্রে রাসেলকে সাত নম্বরে খেলানো হচ্ছে? রিঙ্কু সিংহের পরে নামছে রাসেল!

এ তো বিপক্ষের হাতে প্লেটে করে ম্যাচ তুলে দেওয়া। যে ক্রিকেটার এ রকম বিধ্বংসী ফর্মে আছে, দু’শোর ওপর স্ট্রাইক রেট রেখে ব্যাট করছে, তাকে কি না তিন-চারটে ওভারের বেশি ব্যাট করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না? এ রকম স্ট্র্যাটেজি আমি কোনও দিন দেখিনি।

আরও পড়ুন: দল নির্বাচন না মানসিকতা, ঠিক কোন জায়গায় সমস্যা হচ্ছে প্রায় ছিটকে যাওয়া নাইটদের

শুক্রবারের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ম্যাচটায় আমি ইডেনে ছিলাম। রাসেলের ব্যাটিং দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছি। ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে আছি চল্লিশ বছরের ওপর। এ রকম ভয়ঙ্কর মারতে আর কাউকে দেখিনি। রাসেল উল্টো দিকে থাকা মানে বিপক্ষ শিবির ঘাবড়ে যাবে। বোলাররা কোথায় বল ফেলবে, বুঝতে পারবে না। আমি তো পরের দিন কাগজে দেখলাম, রাসেল নিজেও বলেছে ও চার নম্বরে ব্যাট করতে আগ্রহী।

উপ্পলে এই ম্যাচটা কেকেআরের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জিতলে প্লে-অফের দৌড়ে ভালমতো থাকত। হেরে যে রাস্তাটা কঠিন হয়ে গেল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে একটা সময় কলকাতার স্কোর চার উইকেটে ৭৩ হয়ে গিয়েছিল, ৮.২ ওভারে। হতবাক হয়ে দেখলাম, তখনও রাসেল ব্যাট করতে নামছে না। কে নামল? না, রিঙ্কু সিংহ! রিঙ্কুর একটা ক্যাচ ফস্কেছিল হায়দরাবাদ। তাতে মনে হয়, ওদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বিশেষ হতাশ হয়নি। কারণ, ওরা তো জানত, যত ক্ষণ রিঙ্কু আর ক্রিস লিন উইকেটে আছে, রান ওঠার গতি আটকে থাকবে। রিঙ্কু ৩০ রান করল ২৫ বলে, লিনের ৫১ রান এল ৪৭ বলে। রাসেল নামল ১৫.৩ ওভারে। সেখানে নয় বল খেলে ১৫ রান করে গেল রাসেল। ওকে কেন বেশি বল খেলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, এই রহস্যের সমাধানের জন্য কি এ বার গোয়েন্দা ডাকতে হবে?

আমার আরও একটা প্রশ্ন আছে। কার্তিকের ভূমিকাটা এই দলে ঠিক কী? ও কি শুধু নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আছে? কেন শুরুতে উইকেট পড়ে গেলে ও নিজেকে আগে নামাচ্ছে না? এই দায়িত্বটা তো এক জন অধিনায়ককে নিতেই হবে। বিশেষ করে যে অধিনায়ক বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে। যে স্বপ্ন দেখছে, চার নম্বরে নামবে ভারতের জার্সি গায়ে। সে কেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উপরের দিকে ব্যাট করার সাহস দেখাচ্ছে না? শুভমন গিল বা নীতীশ রানা তো বিশ্বকাপ খেলবে না। কার্তিক খেলবে। ভারতের এক জন ক্রিকেটারের কাছ থেকে তার দল তো বাড়তি কিছু চাইবেই।

হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে যে দলটা এ দিন নামাল কেকেআর, সেটা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। জানি, ইডেনে কুলদীপ যাদব খুব মার খেয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কুলদীপ দলের অন্যতম সেরা বোলার। যে উইকেট তুলতে পারে। কারিয়াপ্পা তো আর কুলদীপের বিকল্প হতে পারে না। এমনিতে এই নাইট দলে ভাল কোনও পেসার নেই। হ্যারি গার্নি, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ বা এই ম্যাচে খেলতে নামা ইয়ারা পৃথ্বী রাজ, কারওই নতুন বলে বিপক্ষকে ধাক্কা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। নাইটদের সেরা অস্ত্র স্পিন-ত্রয়ী। উইকেট নিলে ওরাই নেবে। তাই মার খেলেও ওই সুনীল নারাইন, পীযূষ চাওলা আর কুলদীপকে খেলানো ছাড়া কোনও রাস্তা নেই নাইট ম্যানেজমেন্টের।

একটা দলের আত্মবিশ্বাস খুব খারাপ জায়গায় থাকলে তার প্রভাব ফিল্ডিংয়ে পড়বেই। এ দিন যেমন দেখা গেল। তিনটে ক্যাচ ছাড়ল নাইট ফিল্ডাররা। প্রথমটা তো বেয়ারস্টো যখন এক রানে। ওই ক্যাচটা নিলে ম্যাচে আর একটু লড়াই হয়তো দেখা যেত। একবার জীবন পেয়ে বেয়ারস্টো আর ডেভিড ওয়ার্নার মিলে যে মারটা মারল, তাতে নাইট বোলারদের আত্মবিশ্বাস আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। মাত্র ১৫ ওভারে রান তুলে হায়দরাবাদ যেমন নিজের নেট রান রেট বাড়িয়ে নিল, তেমন কেকেআরেরটাও অনেক কমে গেল।

বাকি চারটে ম্যাচের চারটেতে এখন জিততে হবে কেকেআরকে। নাইটদের সমস্যা হল, ঘরের মাঠের সুবিধেটা পাচ্ছে না। ওদের শক্তি স্পিন আর ইডেনের পিচ একেবারেই স্পিনারদের সাহায্য করছে না। ওখানে সাহায্য পাচ্ছে ব্যাটসম্যানরা। ফলে কেকেআরের প্লে-অফে ওঠার কাজটা ক্রমেই কঠিন হচ্ছে।

ওয়ার্নারের প্রশংসায় বেয়ারস্টো

ওপেনিং জুটিতে দু’জনে মিলে তুললেন ১৩১ রান। রবিবার উপ্পলে ডেভিড ওয়ার্নার এবং জনি বেয়ারস্টোর সেই ভয়ঙ্কর ব্যাটিং তাণ্ডবেই হার নিশ্চিত হয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের। চলতি আইপিএলে সানরাইজার্সের ওপেনিং জুটি তুলে ফেলল ৭৩৩ রান!
আগামী অগস্টে অ্যাশেজ সিরিজে এক অপরের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে অস্ট্রেলীয় ওপেনারের ব্যাটিং-আগ্রাসনে মুগ্ধ ইংল্যান্ড তারকা জনি বেয়ারস্টো। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রথম বারই আমার কাছে আইপিএল এ ভাবে স্মরণীয় হয়ে উঠবে, তা কল্পনাই করতে পারিনি। এর সমস্ত কৃতিত্ব কিন্তু ওয়ার্নারেরই। ও উল্টো দিকে থাকলে কোনও বোলারকেই সমীহ করার প্রয়োজন পড়ে না।’’ বেয়ারস্টো আরও জানিয়েছেন, যে ভাবে তাঁরা ইনিংস শুরু করেছিলেন, তাতে প্রতিপক্ষ ২০০ রান করলেও সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যেতেন অনায়াসে।

IPL 2019 KKR SRH Andre Russell Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy