যতই ওরা ওয়ান ডে সিরিজের ব্যর্থতাকে তেমন গুরুত্ব না দেওয়ার ভান করুক, এই সিরিজ হারে যে ইংরেজদের ক্রিকেটের ক্ষতি হল, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
কিন্তু টেস্টের অসাধারণ সাফল্যের পর ছোট ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে এই ভরাডুবি কেন? এই প্রশ্ন এখন অনেকেরই মনে।
সোজা কথাটা হল ছোট ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে যথেষ্ট ভাল খেলার মতো ক্রিকেটার ইংল্যান্ডে বেশি নেই। গত পাঁচ-সাত বছরে ৫০ ওভার ও কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বেশ উল্লেখযোগ্য ভাবে অবনতি হয়েছে। টেস্টে ওরা ভাল করবে। কারণ, সারা বছর ধরে ওরা যথেষ্ট পরিমানে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে। কিন্তু সীমিত ওভারের ক্রিকেট তেমন একটা খেলতে দেখা যায় না ইংরেজদের।
ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা কিন্তু ছোট ফর্ম্যাটের ক্রিকেট খেলে সারা বছর ধরে। তার উপর এই তিন দেশের বহু ক্রিকেটার প্রতি বছর আইপিএলেও খেলে। এটাই ওদের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্সের কারণ।
এর আগে ইংরেজ ক্রিকেটারদের মধ্যে যাও বা নামমাত্র কয়েকজন আইপিএলে খেলত, এখন সেই সংখ্যাটা আরও কমে গিয়েছে। আমার তো মনে হয় ছোট ফর্ম্যাটে ওদের ব্যর্থতার কারণ এটাই। কেভিন পিটারসেনের সঙ্গে আমি এই ব্যাপারে একমত যে, ভারতের তরুণ ক্রিকেটাররা আইপিএলে নিয়মিত খেলে বলেই ভারত ওয়ান ডে ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্স দেখাতে পারছে। অজিঙ্ক রাহানের কথাই ভাবুন না। বছর দশেক আগে হলেও ওর মতো কোনও ব্যাটসম্যান এগিয়ে এসে ড্যারেন গফ বা অ্যান্ড্রু কাডিকের বল উড়িয়ে দিলে ক্রিকেট দুনিয়া বিস্মিত হত। কিন্তু এখন এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। এ আইপিএল থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাসেরই ফল।
ডেল স্টেইন, জেমস অ্যান্ডারসন, মিচেল জনসনদের সামলানো এখন আর ভারতের এই তরুণ ব্যাটসম্যানদের কাছে তেমন চিন্তার বিষয় নয়। ভারতীয় স্পিনাররাও এখন ছোট ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে প্রায় সব দেশের ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধেই ভাল বল করতে পারে। এ সব আইপিএলেরই বদান্যতায়।
দুর্ভাগ্যবশত ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের স্পিন খেলার দক্ষতা তেমন নেই। জো রুট চার বার রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে আউট হতে হতে বাঁচার পর সেই শট নিতে গিয়েই আউট হল। ফুটওয়ার্কের বালাই নেই, শুধু ব্যাকফুটে থেকে বলটা উড়িয়ে দেওয়ার এই প্রবণতাই ওর কাল হল। ওয়ান ডে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের দুর্বলতার এর চেয়ে বড় নিদর্শন আর কী হতে পারে? ব্যতিক্রম শুধু মইন আলি। উপমহাদেশীয় রেওয়াজ বজায় রেখে ও ওর কব্জিটাকে ভাল কাজে লাগাতে পারে।
এই যে প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটাররা ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে টুইটারে প্রশ্ন রাখছেন, ‘তোমরা কী চাও, অ্যাসেজ, না বিশ্বকাপ?’ এতে আমি বিন্দুমাত্র অবাক হইনি। আমার কাছে ওয়ান ডে ক্রিকেটে বিশ্বকাপের চেয়ে বড় কিছু নেই। বিশ্বকাপ জয়ের মতো বড় সম্মান ক্রিকেট বিশ্বে আর কি থাকতে পারে? ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও হয়তো এখন সেটাই ভাবছে। কিন্তু ঠিক সময়ে এই ফর্ম্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোটা ওদের পক্ষে খুব একটা সহজ হবে না বোধহয়।
আইপিএলকে দুষলেন বথাম
অতীতেও সমালোচনা করেছেন। বুধবার রাতে ফের এক বার আইপিএলকে দুষলেন প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্যর ইয়ান বথাম। এমসিসি-র স্পিরিট অব ক্রিকেট কাউড্রে লেকচার দিতে গিয়ে বথাম বলেন, “আইপিএল বন্ধ হওয়া উচিত। এতে দীর্ঘকালীন মেয়াদে ক্রিকেটের লাভ। কারণ, আইপিএল ক্রিকেট জুয়ার পাশাপাশি ক্রিকেটারদের দুর্নীতির দাস বানিয়ে রাখছে। যার ফলে নষ্ট হচ্ছে ক্রিকেটের ঐতিহ্য।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy