Advertisement
E-Paper

নতুন লাম হয়ে উঠছেন গুয়ার্দিওলার ভালবাসা

ছোট্ট রাজপুত্র। বিশ্বস্ত যোদ্ধা। অবিশ্বাস্য ভাল ছাত্র। শান্ত। বিনম্র। চুপচাপ। তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার বলতে রবিবারের আগে পর্যন্ত দেখাচ্ছে মাত্র দুটো ম্যাচ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ১০:২৪
কিমিচ। জার্মানির নতুন ভরসা।

কিমিচ। জার্মানির নতুন ভরসা।

ছোট্ট রাজপুত্র। বিশ্বস্ত যোদ্ধা। অবিশ্বাস্য ভাল ছাত্র। শান্ত। বিনম্র। চুপচাপ।

তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার বলতে রবিবারের আগে পর্যন্ত দেখাচ্ছে মাত্র দুটো ম্যাচ। অথচ এই দুটো ম্যাচেই, বিশেষ করে দু’নম্বর ম্যাচটার পরপর তাঁকে নিয়ে তোলপাড় আন্তর্জাতিক মিডিয়া। উপরোক্ত বিশেষণগুলো তো আছেই। পাশাপাশি একুশের যুবকের নামের সঙ্গে আরও একটা আখ্যা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর মধ্যে নাকি ২০১৪ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিমের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের ছায়া দেখা যাচ্ছে। তিনি নাকি খুব তাড়াতাড়ি সেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নের শূন্যতা পূরণ করে দিতে চলেছেন।

তিনি, জশুয়া কিমিচ। গত মঙ্গলবার নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ম্যাচের আগে যিনি দেশের হয়ে মাত্র এক বার খেলেছেন। গত মে মাসে, জার্মানির রবিবারের প্রতিপক্ষ স্লোভাকিয়ারই বিরুদ্ধে। যাঁকে নতুন একটা নামে ডাকা শুরু করে দিয়েছে জার্মানি-সহ গোটা ফুটবল-বিশ্ব।

তিনি নাকি নতুন ফিলিপ লাম!

‘‘আমার টিমের সেরা ডিফেন্ডার। হয়তো বা বিশ্বেরই সেরা ডিফেন্ডার। ছেলেটাকে আমি ভালবাসি। সফল হতে যা যা লাগে, সব আছে ওর মধ্যে’’— এই তো গত মার্চেই কিমিচ নিয়ে বলেছিলেন তাঁর ক্লাবের কোচ। যে সে ক্লাবের যে সে কোচ নন, ইনি বায়ার্ন মিউনিখের এক্স-বস, বর্তমান ফুটবল-গ্রহের অন্যতম সেরা মস্তিষ্ক পেপ গুয়ার্দিওলা।

বায়ার্নের সহকারী কোচ হার্মান গের্লান্ড তো বলে দিচ্ছেন, ভবিষ্যতের ফিলিপ লাম পেয়ে গিয়েছেন। বত্রিশ বছরের লাম আরও দু’বছর বায়ার্নে খেলবেন, কিন্তু হার্মান এখনই বলে দিচ্ছেন, ‘‘ফিলিপ চলে গেলে কী হবে, সেই চিম্তাটা আর থাকল না।’’

ইউরোয় জার্মানির অধিনায়ক ম্যানুয়্যাল ন্যয়ার আবার বলে দিচ্ছেন, ‘‘ও মাঠে নামার আগেই জানতাম ওর উপর ভরসা করা যায়।’’ তবে ন্যয়ার নন, কিমিচের আদর্শ আর এক সতীর্থ বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টাইগার। প্রিয় ‘বাস্তি’ হোক বা ন্যয়ার, বা জাতীয় দলে বায়ার্নের অন্য সদস্যরা— একুশ বছরের টুকটুকে ছেলেটাকে আগলে আগলে রাখেন সবাই।

রাখাটা বোধহয় স্বাভাবিক। আরবি লেপজিগ থেকে পাঁচ বছরের চুক্তিতে বায়ার্নে খেলতে আসা কিমিচ এখনও প্রায় ‘বাচ্চা ছেলে’র মতো। ছোটবেলা থেকে ভিএফবি স্টুটগার্টে খেলেছেন। অধুনা ফুটবলারদের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে মোটেই খুব সড়গড় নন। টুইটার প্রোফাইল খুলেছেন মাত্র দু’বছর আগে। সেখানে সুন্দরীদের সঙ্গে ছবি বা দেশ-বিদেশ ঘোরার অ্যালবাম নয়, রয়েছে হাতেগোণা কয়েকটা ছবি। কোনওটা ম্যাচের ফ্রেম তো কোনওটা বার্য়ানের জার্সি নিয়ে।

ফিলিপ লামের সঙ্গে তুলনার কথা উঠলে সেই কিমিচ লজ্জায় টকটকে লাল হয়ে বলে দেন, ‘‘ফিলিপ বিশ্বের অন্যতম সেরা আউটসাইড ব্যাক। আর ডান দিকে ও কত ভাল, তার প্রমাণ বছরের পর বছর দিয়ে এসেছে। আর আমি? আমি তো সবে একটা বুন্দেশলিগা খেলেছি। আর একটা ইউরো ম্যাচ। প্লিজ, এ সব তুলনা টানবেন না।’’

আবার প্রথম ইউরো ম্যাচের পরে ফিলিপ লামের টেক্সট মেসেজ পেয়ে তিনি আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন। ছোট বাচ্চার মতো লামের কাছে আবদার করেন, প্লিজ রবিবারও আমার হয়ে, টিমের হয়ে প্রার্থনা কোরো!

যিনি মুগ্ধ, একনিষ্ঠ ছাত্রের মতো বোঝান, গুয়ার্দিওলা ‘স্যর’ তাঁকে কী ভাবে মাঠের নানা কোণ থেকে খেলাটা ধরতে শিখিয়েছেন। যার জন্য ডিফেন্স বা আক্রমণ, দুইয়েই তিনি সমান স্বচ্ছন্দ।

কিমিচের সঙ্গে শৈশবের ছাড়াছাড়ি যে এখনও পুরোপুরি হয়নি, বোঝা যায় তাঁর প্রতি সাংবাদিকদের প্রশ্নেও। ন্যয়ার বা মেসুট ওজিল যেখানে কড়া প্রশ্নবাণের সামনে পড়ছেন, কিমিচকে সেখানে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে হাইস্কুলে তাঁর রেজাল্ট নিয়ে! আর সেখানেও কিমিচ দারুণ সফল— ফার্স্ট বয় না হলেও বরাবর প্রথম তিনের মধ্যে থেকেছেন।

জোয়াকিম লো অবশ্য অত দূর অতীতে যাচ্ছেন না। তিনি দেখছেন গত মঙ্গলবার কিমিচের পারফরম্যান্স। এবং জানিয়ে দিচ্ছেন, নানা পরীক্ষার পর লামের শূন্যস্থান ভরার লোক তিনি পেয়ে গিয়েছেন। বলে দিচ্ছেন, তাঁর টিম ফ্রান্সে এসেছিল সত্যিকারের রাইটব্যাক ছাড়া। এ বার জার্মানি ট্রফি জিতুক বা না জিতুক, অন্তত একজন খাঁটি চ্যাম্পিয়ন নিয়ে দেশে ফিরবে!

Joshua Kimmich German football team
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy