খুশি: কাতসুমির দেশ জাপান বিশ্বকাপে খেলবে। ফাইল চিত্র
জাপান যে ফুটবল খেলে গোটা বিশ্ব প্রথম জেনেছিল বছর পঁচিশ আগে। যখন ফুটবল দুনিয়ায় আলোড়ন ফেলে দিয়ে শুরু হয়েছিল ‘জে’ লিগ।
পাঁচ বছরের মধ্যেই রূপকথার উত্থান। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলেন হিদেতোশি নাকাতা-রা। সেই শুরু। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ হারিয়ে টানা ছ’টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল প্রথম সূর্যের দেশ। যদিও তা নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস নেই জাপানবাসীর! মোহনবাগান ছেড়ে এই মরসুমেই ইস্টবেঙ্গলে সই করেছেন কাতসুমি ইউসা। এই মুহূর্তে তিনি আছেন জাপানের ফুকুশিমায়। অক্টোবরের শুরুতে কলকাতায় আসার কথা তাঁর। শুক্রবার ফোনে কাতসুমি বলছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপের মূল পর্বে তো টানা উনিশ বছর ধরেই আমরা খেলছি। রাশিয়ার ছাড়পত্র যদি না পেতাম, তা হলে সেটাই হতো অঘটন। কারণ, গ্রুপ লিগে আটটার মধ্যে সাতটিতেই আমরা জিতেছি। ড্র মাত্র একটা।’’ বিশ্ব ফুটবল জাপানের উত্থানের নেপথ্যে ‘জে’ লিগকেই মনে করা হয়? কাতসুমি কিন্তু শোনালেন অন্য কাহিনি। বললেন, ‘‘জে লিগ গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলেছিল ঠিকই। কিন্তু জাপান ফুটবলে বিপ্লব ঘটেছিল অ্যাকাডেমির প্রসারে এবং ফরাসি ফুটবল সংস্থার সহযোগিতায়।’’
আরও পড়ুন: মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে গ্রেফতার ওয়েন রুনি
কী ভাবে? কাতসুমি বলছিলেন, ‘‘নব্বইয়ের দশকে বিশ্বের সেরা ফুটবল অ্যাকাডেমিগুলোর অধিকাংশই ছিল ফ্রান্সে। আমাদের ফুটবল সংস্থা ওদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে। ফরাসি ফুটবল সংস্থার বানিয়ে দেওয়া রূপরেখা অনুযায়ী অসংখ্য অ্যাকাডেমি গড়ে তোলা হয় জাপান জুড়ে।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার তুলে এনেছিলেন স্পটাররা। সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল অনূর্ধ্ব আট থেকে বারো বছর বয়সি ফুটবলারদের গড়ে তোলার ক্ষেত্রে।’’ কাতসুমির উত্থানও হিরোশিমার সানফ্রেসে অ্যাকাডেমি থেকে। যদিও জাপানের হয়ে খেলার স্বপ্ন তাঁর অধরাই থেকে গিয়েছে। আর ‘জে’ লিগ? কাতসুমি মনে করেন, ‘জে’ লিগ জাপানের ফুটবলারদের মানসিকতা বদলে দিয়েছে। সানফ্রেসে হিরোশিমার হয়ে টানা তিন বছর ‘জে’ লিগে খেলা কাতসুমি বললেন, ‘‘জে লিগে জিকো সহ-বিশ্বের সেরা তারকারা অংশ নিয়েছিলেন। একটা নতুন দুনিয়া খুলে গিয়েছিল জাপানের ফুটবলারদের সামনে। আমরা শিখেছিলাম, পেশাদারিত্ব কাকে বলে। কী ভাবে ম্যাচের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে হয়। কী ভাবে প্রবল চাপের মধ্যেও লক্ষ্যে স্থির থাকতে হয়। নিজেকে কী ভাবে ফিট রাখতে হয়, সেটাও শিখেছিলাম।’’
কাতসুমির মতে কয়েক বছরের মধ্যে ভারতেরও বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা প্রবল। তিনি বললেন, ‘‘ছয় বছর আগে ওএনজিসি-র হয়ে খেলতে প্রথম বার ভারতে গিয়েছিলাম। সেই সময় হাতে গোনা কয়েকটা অ্যাকাডেমি ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে ছবিটা পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। প্রচুর অ্যাকাডেমি গড়ে উঠেছে। ভাল ভাল ফুটবলার উঠে আসছে। এই কারণেই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম একশোর মধ্যে এখন ভারতের নাম। আশা করছি, বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতকে দেখার জন্য খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy