E-Paper

‘ডেনা’য় বাঁধের তাঁবু থেকেও উৎখাত হওয়ার শঙ্কা ওঁদের

পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের তরফে ওই সাতটি পরিবারের ২৪ জনকে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে। তবে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত তাঁরা তাঁবু ছাড়েননি।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:১৭
ত্রিপলের নীচে অস্থায়ী বসবাস। খানাকুলে।

ত্রিপলের নীচে অস্থায়ী বসবাস। খানাকুলে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

মাস দেড়েক আগেই দ্বারকেশ্বরের বাঁধ ভেঙে বে-ঘর হয়েছেন। ভিটে-মাটি উধাও। সেখান দিয়ে জলের স্রোত বইছে। খানাকুল ২ ব্লকের ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের কাকনান গ্রামের পোড়েপাড়ার এহেন বিপর্যস্ত সাতটি পরিবার স্থানীয় স্কুলে ঠাঁই নিয়েছিল। সবে ভিটে সংলগ্ন বাঁধের গায়ে মজবুত তাঁবু করে থিতু হচ্ছিল তারা। এমন সময় ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’ নিয়ে তারা ফের সন্ত্রস্ত।

পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের তরফে ওই সাতটি পরিবারের ২৪ জনকে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে। তবে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত তাঁরা তাঁবু ছাড়েননি। স্কুল থেকে তাঁরা তাবুতে উঠে এসেছেন লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন। বাঁশের খুঁটি, চতুর্দিকে হোগলার বেড়া এবং ত্রিপলের ছাউনির সেই তাঁবুতে বন্যার আগে নিরাপদে সরিয়ে রাখা খাট, আলমারি, রান্নার গ্যাস, পাখা পেতেছেন। অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগও নিয়েছেন।

ওই পরিবারগুলিতে কেউ টোটোচালক, কেউ ইঞ্জিনভ্যান চালান। কেউ রাজমিস্ত্রি। ইঞ্জিনভ্যানের চালক সাহেব পোড়ের খেদ, ‘‘ভাঙা বাঁধের মুখে বাড়িঘর, ভিটেমাটি নিশ্চিহ্ন হয়েছে। পুনর্বাসনের দাবি জানালেও তা নিয়ে আশার আলো দেখছি না। অন্তত বছর দুই বসবাসের জন্য বাঁধের গায়েই কিছুটা মজবুত করে তাঁবু বানিয়েছি। জানি না কী হবে!’’

ফের উৎখাতের আশঙ্কায় দিলীপ, অনুপ, নদেরচাঁদ, সুচাঁদ, কাশীনাথ, বিশ্বনাথ পোড়েদের ঘুম উবে যাওয়ার জোগাড়! দিলীপ টোটো চালান। মেয়ে সাথী পোড়ে আরামবাগের কালীপুর নেতাজি মহবিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। সাথীর কথায়, ‘‘ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমরা দিশেহারা। বৃষ্টি হলে বা নদে জল বাড়লে হানা (বাঁধের ফুটো) দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু ১০০ কিমি বেগে ঝড় হলে তাঁবু টিকবে! খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি।’’ ওই ছাত্রী জানান, বন্যায় ভাইয়ের কিছু বইপত্র বাঁচাতে পেরেছেন। তবে তাঁর নিজের বইপত্র বা গুরুত্বপূর্ণ নোটস ভেসে গিয়েছে। ফলে পড়াশোনা লাটে! সম্ভাব্য ঝঞ্ঝা নতুন কোনও বিপদ বয়ে আনে কি না, সেই ভেবেই তিনি কাঁটা!

পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক ঘোড়া বুধবার বলেন, ‘‘সকালে রূপনারায়ণ নদের বেড়াপাড়ায় ভাঙন সংলগ্ন বাঁধ থেকে দু’টি পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। পোড়েপাড়ার ৭টি পরিবার এখনই তাঁবু ছেড়ে সরতে রাজি হচ্ছে না। ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’ বিডিও মধুমিতা ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা বাঁধে ত্রিপল টাঙিয়ে রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Khanakul

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy