Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধুর আইনি জয়ে উচ্ছ্বসিত লেব্রন

প্রবল ঠান্ডা ও বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শনিবার সকালে বোজাঙ্গেলস কলেসিয়ামের সামনে হাজির কয়েক হাজার বাস্কেটবলপ্রেমী। এনবিএ ‘অল স্টার নাইট’-এর আগের দিন লেব্রন জেমসের মতো তারকারা সাংবাদিক বৈঠকের পরে ভক্তদের সামনেই প্র্যাক্টিস করেন। তা দেখার জন্যই এই ভিড়। তবে ইচ্ছে করলেই প্র্যাক্টিস দেখা যাবে না। আগে থেকে টিকিট কেটে রাখতে হবে।

আকর্ষণ: এখনও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে লেব্রন জেমস। ফাইল চিত্র

আকর্ষণ: এখনও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে লেব্রন জেমস। ফাইল চিত্র

শুভজিৎ মজুমদার
শার্লট শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৬
Share: Save:

চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আশ্চর্য পরিবর্তন আবহাওয়ায়। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ছিল ঝকঝকে আকাশ। কিন্তু সন্ধের পর থেকেই শুরু বৃষ্টি। চলল একেবারে শনিবার বিকেল পর্যন্ত। সেই সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। ইন্ডিয়ানাপোলিসের মতো বরফ না পড়লেও কাঁপুনি ধরিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।

প্রবল ঠান্ডা ও বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শনিবার সকালে বোজাঙ্গেলস কলেসিয়ামের সামনে হাজির কয়েক হাজার বাস্কেটবলপ্রেমী। এনবিএ ‘অল স্টার নাইট’-এর আগের দিন লেব্রন জেমসের মতো তারকারা সাংবাদিক বৈঠকের পরে ভক্তদের সামনেই প্র্যাক্টিস করেন। তা দেখার জন্যই এই ভিড়। তবে ইচ্ছে করলেই প্র্যাক্টিস দেখা যাবে না। আগে থেকে টিকিট কেটে রাখতে হবে। যাঁরা টিকিট পাননি, তাঁরা মুখ শুকনো করে ঘুরছিলেন। অন্যদের কাছে বাড়তি টিকিট আছে কি না খোঁজ নিচ্ছিলেন। এক জন হাতে ‘ব্যানার’ নিয়ে ঘুরছিলেন। তাতে লেখা, ‘আমাকে কি কেউ একটা টিকিট দেবেন দয়া করে?’ স্টেডিয়ামের ভিতরের দৃশ্য আরও আকর্ষণীয়। ছোট ছোট এগারোটি মঞ্চ রয়েছে। তার সামনে লেখা রয়েছে অল স্টার ম্যাচে সুযোগ পাওয়া বাস্কেটবলারদের নাম। একে একে এসে বসলেন বোগদান বোগদানোভিচ, বেন সিমন্সরা। তার পরে এলেন ড্রিক নয়োৎস্কি। মরসুম শেষ হলেই অবসর নেবেন তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন জার্মান তারকা। হঠাৎই প্রবল চিৎকার গ্যালারি থেকে। কী ব্যাপার? লেব্রন জেমস স্টেডিয়ামে ঢুকলেন। ইডেনে সচিন তেন্ডুলকর বা যুবভারতীতে ভাইচুং ভুটিয়া নামলে যে রকম চিৎকার করতেন দর্শকেরা, লেব্রনকে নিয়েও একই রকম উন্মাদনা দেখা গেল শার্লটে। দুর্ঘটনায় ডান পা হারিয়েছে বছর তেরোর টড। ক্রাচ নিয়েই শনিবার সকালে হাজির হয়ে গিয়েছিল প্রিয় নায়ক লেব্রনকে একবার দেখবে বলে। লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্স তারকা ঢুকতেই আনন্দে ক্রাচে ভর দিয়ে নাচতে শুরু করে দিল টড।

টডের চেয়ে বছর দু’য়েকের ছোট মিলার। নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে কোর্টে নেমে পড়েছিল। কিন্তু কিছুতেই লেব্রনের কাছাকাছি পৌঁছতে পারছিল না। তাকে কাঁধে তুলে মঞ্চের কাছে নিয়ে গেলেন এনবিএ-র এক কর্মী। প্রিয় নায়কের সঙ্গে হাত মেলানোর আনন্দে কেঁদেই ফেলল ছোট্টো মিলার। উচ্ছ্বসিত লেব্রনও! কারণ, আমেরিকান ফুটবল (এনএফএল) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন তাঁর বন্ধু কলিন কেপারনিক। বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ তোলায় তাঁকে বরখাস্ত করেছিল এনএফএল। গত মরসুমে ড্রাফ্টেও ছিলেন না তিনি। এনএফএলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেন কলিন। শেষ পর্যন্ত মামলায় হেরে তাঁর সঙ্গে সমঝোতা করতে বাধ্য হয় এনএফএল কর্তৃপক্ষ। উচ্ছ্বসিত লেব্রন বলছিলেন, “কলিনের এই জয়ে আমি দারুণ খুশি। এখন ও ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রচুর অর্থ পাবে। যা ওর পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করবে।” তিনি যোগ করেন, “সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিজেদের বিশ্বাসের উপরে আস্থা রাখা। আমি কলিনের পাশে আছি। আমি মনে করি, ও যা বলতে চাইছে তা কেউ শুনছে না। কেউ বুঝতেও চাইছে না।” লেব্রন আরও বলেন, “অন্যের ভাল করার জন্য কলিন ওর শৈশব জলাঞ্জলি দিয়েছিল। এই ধরনের মানুষকে সকলের শ্রদ্ধা করা উচিত। আমি ঠিক সেটাই করছি। কলিন যা করেছে তা শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, বিশ্বের ইতিহাসে লেখা থাকবে। আমাদের মতো শুধু আফ্রো-আমেরিকান নয়, সকলেরই ওর পাশে দাঁড়ানো উচিত।”

রাতে স্পেকট্রাম এরিনাতেও থ্রি পয়েন্ট কনসেন্ট দেখার জন্য একই রকম উন্মাদনা। বাস্কেটবলের কোনও ম্যাচ নয়। দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা। কখনও বল নিয়ে দৌড়ে গিয়ে সব চেয়ে বেশি বার বাস্কেট করার লড়াই। কখনও আবার স্প্রিং বোর্ডে লাফিয়ে উঠে বল বাস্কেট করা। স্টিভন কোরিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলেন জো হ্যারিস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE