ইস্টবেঙ্গল মাঠে মজিদ। ছবি— অরিন্দম ব্রহ্ম
মজিদ বাসকরের মতো আরও একজন শিল্পী ফুটবলার কি ভবিষ্যতে পাবে ইস্টবেঙ্গল? লাল-হলুদ ক্লাব-তাঁবুতে বন্ধু জামশিদ নাসিরির সঙ্গে কিছু ক্ষণ পরামর্শ করে মজিদই জানিয়ে দিলেন, ভাল মানের ইরানি ফুটবলারের খোঁজ পেলে তাঁকে ইস্টবেঙ্গলে খেলতে পাঠাবেন।
বিদেশি সমস্যায় বহুবার ভুগতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। নামী প্লেয়ারকেও লাল-হলুদ জার্সিতে মানিয়ে নিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। মরসুমের মাঝখানে কাউকে ফিরে যেতে হয়েছে দেশে। এই ছবি খুবই চেনা ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। কলকাতার জলহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করা খুবই কঠিন। মজিদ-জামশিদরা অন্য ধাতুতে গড়া ছিলেন। প্রথম মরসুম থেকেই নজর কাড়েন তাঁরা। সেই স্মৃতি রোমন্থন করে ক্লাব-তাঁবুতে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক বৈঠকে মজিদ বলেন, ‘‘আমরা তো এখানে পড়তে এসেছিলাম। কত দিন খেলবো নিজেরাই জানতাম না। ইস্টবেঙ্গলের ডাক ফেরাতে পারিনি।’’
রোভার্স কাপে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে মজিদদের খেলা দেখে মুগ্ধ হন অনেকে। ১৯৮০ সালে ইস্টবেঙ্গল সই করায় মজিদ, জামশিদ ও খাবাজিকে। তার পরের ঘটনা তো ইতিহাস। ১২ নম্বর জার্সি পরে মাঠে ফুল ফোটাতেন মজিদ। তাঁর পিঠে কীভাবে উঠল ১২ নম্বর জার্সি? সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হলে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে মজিদ ও জামশিদের মুখ। পুরনো দিনের গল্প বলতে শুরু করেন মজিদ, ‘‘আমরা যখন ইস্টবেঙ্গলে খেলতে এসেছিলাম, তখন আমি আর জামশিদ ১২ আর ৯ নম্বর জার্সি বেছে নিয়েছিলাম। বেচারি খাবাজিই বুঝে উঠতে পারছিল না কত নম্বর জার্সি পরবে। ১২ আর ৯ যোগ করলে ২১ হয়। খাবাজির পিঠে উঠল ২১ নম্বর জার্সি।’’ মজিদের মুখে তখন খেলা করছে মৃদু হাসি। জামশিদও হাসছেন।
আরও পড়ুন: কীভাবে মিলবে সাফল্য, ইস্টবেঙ্গলকে ‘টিপস’ দিলেন মজিদ
মজিদ-জামশিদের পরে ইস্টবেঙ্গলে আর খেলেননি কোনও ইরানি ফুটবলার। মজিদের দেশের ফুটবলাররা এই দেশে খেলার বদলে বেছে নেন অন্য কোনও দেশ। ভারতের ক্লাবে কেন আসছেন না ইরানি ফুটবলাররা? মজিদের সাফ ব্যাখ্যা, ‘‘ইরান থেকে ফুটবলাররা গাল্ফ দেশগুলোয় খেলতে চলে যাচ্ছে। ওদের পক্ষে ইউরোপে চলে যাওয়া এখন অনেক সহজ।’’ সেই কারণেই ইরান থেকে এখন আর ভারতে খেলতে আসেন না ফুটবলাররা। জামশিদের সঙ্গে একান্তে আলোচনা করে মজিদ বলেন, ‘‘দেশে গিয়ে আমার মতো বা জামশিদের মতো অথবা আমাদের থেকেও ভাল মানের ইরানি ফুটবলার খুঁজব। ভাল লাগলে ইস্টবেঙ্গলে পাঠাবো।’’
মজিদের প্রস্তাব শুনে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত লাল-হলুদ ভক্তরা একসঙ্গে করতালি দিয়ে উঠলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy