Advertisement
০৩ মে ২০২৪
প্রথম রাউন্ডে ছিটকে গেলেন গত বারের চ্যাম্পিয়ন

প্রত্যাবর্তনের স্ল্যামে মাশা উড়িয়ে দিলেন ফেভারিটকেই

বুকে হাত দিয়ে দাঁড়ানো মারিয়া শারাপোভার মুখ টিভি ক্যামেরার ক্লোজ আপে বন্দি হতেই বোঝা গেল, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে কষ্ট হচ্ছে তাঁর।

আবেগ: যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের প্রথম রাউন্ডে দু’নম্বর বাছাই হালেপকে হারানোর পরে শারাপোভা। ছবি: রয়টার্স

আবেগ: যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের প্রথম রাউন্ডে দু’নম্বর বাছাই হালেপকে হারানোর পরে শারাপোভা। ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৬
Share: Save:

জয়ের পয়েন্টটা আসতেই কোর্টের মধ্যে বসে পড়লেন তিনি। দু’হাতে মুখ ঢেকে।

কালো পোশাক পরা শরীরটা এর পরে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়াল। কালো লেসের ওপর বসানো ক্রিস্টালগুলো তখন চিকচিক করছে। পোশাকের মালিকের চোখও কি চিকচিক করে উঠল?

বুকে হাত দিয়ে দাঁড়ানো মারিয়া শারাপোভার মুখ টিভি ক্যামেরার ক্লোজ আপে বন্দি হতেই বোঝা গেল, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে কষ্ট হচ্ছে তাঁর।

পনেরো মাসের নির্বাসন, সব মিলিয়ে আঠারো মাস কোর্টের বাইরে। শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ছিল ২০১৬ অস্ট্রেলীয় ওপেন। তার পর চোট-আঘাত। প্রত্যাবর্তনের গ্র্যান্ড স্ল্যামে সামনে বিশ্বের দু’নম্বর খেলোয়াড়। প্রাক্তন বিশ্বসেরার সামনে চ্যালেঞ্জটা যথেষ্ট কঠিনই ছিল। এবং সেই চ্যালেঞ্জ সামলে, ফেভারিট সিমোনা হালেপকে তিন সেটের লড়াইয়ে ৬-৪, ৪-৬, ৬-৩ হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে গেলেন শারাপোভা।

আবেগতাড়িত যে তিনি হয়ে পড়বেন, তা তো স্বাভাবিক। আর সে জন্যই শারাপোভা পরে টুইট করেন, ‘নিউ ইয়র্ক, এর পরে আমি ঘুমোতে পারব কী করে?’

আরও পড়ুন: প্রত্যাবর্তনেই চমক, ইউএস ওপেনে বিশ্বের দু’নম্বরকে হারিয়ে দিলেন শারাপোভা

শারাপোভা কোর্টে নামার সময় দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন হয়, তা দেখার আগ্রহ ছিল অনেকেরই। শারাপোভাকে দেখা মাত্রই স্টেডিয়াম জুড়ে গর্জন উঠল, কিন্তু তাতে বিদ্রূপের কোনও চিহ্ন ছিল না। বরং নিউ ইয়র্ক বরণই করে নিল এক সময়ের টেনিস-রানিকে। ‘‘আমি নিজেকে মনে মনে বুঝিয়েছিলাম, এটা আর একটা ম্যাচ হতে চলেছে। বাকি পাঁচটা দিনের মতো আর একটা দিন হতে চলেছে। কিন্তু কোর্টে নেমেই বুঝে যাই, ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অন্য রকম হতে চলেছে। এটা একটা বিশেষ দিন হতে যাচ্ছে আমার জন্য।’’

এই রকম মঞ্চে নেমে কি তিনি নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন? ম্যাচের কিছু কিছু মুহূর্তের কোলাজ কিন্তু সে রকমই বলছে। দ্বিতীয় সেটে ৪-১ এগিয়ে থাকা অবস্থাতেও হেরে যান মাশা। স্নায়ুর চাপ না তো কী বলা যায় একে? রুশ তরুণী ৬০টি উইনার মেরেছেন, কিন্তু পাশাপাশি ৬৪টি আনফোর্সড এরর করেছেন। ২২টি ব্রেক পয়েন্ট পেয়েছেন, কিন্তু কাজে লাগাতে পেরেছেন মাত্র পাঁচটা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্নায়ুর চাপে একটু কাবু হয়ে পড়েছিলেন মারিয়া শারাপোভা।

নিজের এই লড়াই নিয়ে কী বলছেন শারাপোভা? ‘‘আমি জানতাম সিমোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেবে। আমি তার জন্য তৈরি ছিলাম,’’ বলেছেন তিনি। এবং যোগ করেছেন, ‘‘আমি এই জয়টা এখন উপভোগ করতে চাই। তার পর দ্বিতীয় রাউন্ডের কথা ভাবব।’’

তবে এই জয়ের মধ্যেও সামান্য বিতর্কের ছায়া এসে পড়েছে। দ্বিতীয় সেট জেতার পরে যখন মনে হচ্ছিল হালেপ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছেন, তখন বেশ লম্বা একটা ‘টয়লেট ব্রেক’ নেন শারাপোভা। অনেকেই মনে করছেন, এর পরে কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী। হালেপও যে ব্যাপারটা ভাল ভাবে নেননি, তা বোঝা গিয়েছে সাংবাদিক বৈঠকে। যেখানে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে হালেপ পরিষ্কার বলে দেন, ‘‘এ সব আমি আগেও দেখেছি। শারাপোভা এই জিনিসটা হামেশাই করে থাকে। ওটা ওর স্টাইল হয়ে গিয়েছে। আমি এই নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না।’’

তবে বিতর্কের আঁচ থাকুক বা না থাকুক, ফ্লাশিং মেডোজের দর্শক কিন্তু শারাপোভাকে আপন করে নিয়েছে। শারাপোভা নিজেও কিছুটা বিহ্বল হয়ে পড়েন ম্যাচ শেষে। দর্শকদের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ার সময় যথেষ্ট আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা যায় তাঁকে। কেঁদেও ফেলেন তিনি।

এ দিকে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে ছিটকে গেলেন গত বারের চ্যাম্পিয়ন অ্যাঞ্জেলিক কের্বের। তিনি হারেন নাওমি ওসাকার বিরুদ্ধে ৩-৬, ১-৬

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE