সফল: পাঁচ উইকেট নিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে উচ্ছ্বাস স্টার্কের। ছবি: এএফপি
মিচেল স্টার্কের মারাত্মক রিভার্স সুইংয়ে ধস নামল দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ে। শুক্রবার ডারবানে ১৪ বলে চার উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের হিমশিম খাওয়ালেন নিউ সাউথ ওয়েলসের ২৮ বছর বয়সি এই বাঁ হাতি পেসার।
প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ৩৫১ রান তাড়া করতে নেমে পেস-স্পিনের এই জোড়া হামলার ফল, ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে ১৬২ রানে শেষ। এবি ডি’ভিলিয়ার্সের ৭১ রানের ইনিংস সত্ত্বেও দলের এই বেহাল দশা। ঠিক এর আগের সিরিজেই ভারতকে হারানো দলটাকে অজিদের সামনে যেন অসহায় লাগছে।
ফাফ ডুপ্লেসিদের ইনিংসের ভিত অবশ্য নড়িয়ে দেন অফ স্পিনার নাথান লায়ন। তাঁর দাপটে ইনিংসের শুরু থেকেই বিপদে পড়েন হাসিম আমলারা। প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট নেন লায়ন। একশোয় পৌঁছনোর আগেই চার উইকেট খুইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা রীতিমতো লড়াই করছিল। মাঝে শুধু ডি’ভিলিয়ার্স ও ডি’ককের ৪২ রানের পার্টনারশিপ কিছুটা লড়াইয়ের জায়গায় আনার চেষ্টা করে দলকে। কিন্তু ডি’কক-কে ফিরিয়ে লায়ন তাঁর তৃতীয় শিকার পাওয়ার পরেই ধারালো রিভার্স সুইং নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্টার্ক। তাঁর তোলা ঝড়ে প্রায় উড়ে যান মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। একটা সময় দক্ষিণ আফ্রিকা ফলো-অন বাঁচাতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তা বাঁচলেও খুব একটা ভাল জায়গায় যেতে পারেনি তারা।
স্টার্ক ৩৪ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে ও লায়ন ৫০ রানে তিন উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় দিনের শেষে এই টেস্টে আপাতত চালকের আসনে বসিয়ে দিলেন। শনিবার তৃতীয় দিন দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা স্টার্কের পাল্টা দিতে না পারলে স্টিভ স্মিথদের ম্যাচের রাশ পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেই পথ অবশ্য তাঁদের দেখিয়েই রাখলেন স্টার্ক।
শুক্রবার দিনের শেষে বিপক্ষকে ১৫০-৫ থেকে ১৬২-তে শেষ করতে অজিদের লাগে ৩৯ বল। ডুপ্লেসি, ফিল্যান্ডার, রাবাডারা প্রায় আত্মসমর্পন করেন স্টার্কের সামনে। তার আগে ডিন এলগার, হাসিম আমলা ও কুইন্টন ডি’কক জব্দ হন লায়নের ঘূর্ণিতে।
দু’বছর আগে এই ডারবানেই যখন দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল, তখন অস্ট্রেলিয়া প্রথম এগারোয় কোনও বিশেষজ্ঞ স্পিনার রাখেনি। এ বার কিন্তু লায়নই তফাতটা গড়ে দিলেন। শুরুর দিকে ওই ধাক্কাটা না দিলে আফ্রিকানদের এতটা খারাপ অবস্থা হত কি না সন্দেহ।
চলতি এই টেস্টের প্রথম চার সেশন বেশ ম্যাড়মেড়ে লাগলেও এ দিন লাঞ্চের পর থেকে উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছয়। স্টার্ক নিখুঁত লেংথ ও ধারালো সুইং ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলে দেয়। পাঁচটির মধ্যে তিনটিতেই কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ব্যাটসম্যানেরা। রক্তের স্বাদ পেয়ে আরও যেন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন তিনি। রাবাডা ও মর্কেলের যথাক্রমে এলবিডব্লিউ ও বোল্ড হওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।
এই বোলিং ঝড় সামলে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত রয়ে যান এবি ডি’ভিলিয়ার্স। ১১টি বাউন্ডারি সহ ৭১ রান করেন তিনি। তাতেও অবশ্য কোনও লাভ হয়নি। প্রথম ইনিংসে ১৮৯ রানে পিছিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই দূরত্বটাই বিপদে ফেলতে পারে তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy