Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মেহতাব নামায় জ্বলে উঠল মোহনবাগান

প্রথমার্ধে মোহনবাগানের শিল্টন ডি’সিলভা মাঝমাঠ থেকে ঠিক মতো বল বাড়াতে পারেননি। জ্বর হওয়ায় বাড়িতে শুয়ে আগের ম্যাচের গোলদাতা হেনরি কিসেক্কাও।

লক্ষ্যভেদ: প্রথম দিন নেমেই গোল করা শুরু করে দিলেন দিপান্দা ডিকা। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

লক্ষ্যভেদ: প্রথম দিন নেমেই গোল করা শুরু করে দিলেন দিপান্দা ডিকা। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১৫
Share: Save:

মোহনবাগান ৩ • রেনবো ২

বাইশে শ্রাবণের বৃষ্টিভেজা বিকেলে মুখ ভার করেছিল মোহনবাগান সদস্য গ্যালারি। রেনবোর কাছে মোহনবাগান তখন ০-১ পিছিয়ে। সেই ভিড়ে ছিলেন সবুজ-মেরুনের প্রাক্তন অর্থসচিব, সহ-সচিবও। একটু আগেই প্রথমার্ধে দুর্দান্ত ফ্রি-কিক থেকে রেনবোকে এগিয়ে দেন উত্তর কলকাতার অভিজিৎ সরকার। বৃষ্টিতে মাঠ ভারি। প্রথমার্ধে মোহনবাগানের শিল্টন ডি’সিলভা মাঝমাঠ থেকে ঠিক মতো বল বাড়াতে পারেননি। জ্বর হওয়ায় বাড়িতে শুয়ে আগের ম্যাচের গোলদাতা হেনরি কিসেক্কাও।

এ রকম পরিস্থিতিতেও ম্যাচ মোহনবাগান জিতে ফিরল ৩-২। নেপথ্যে কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর একটি পরিবর্তন। আর রেনবো কোচ তড়িৎ ঘোষের অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক হয়ে পড়া। খেলা শেষে মোহনবাগান কোচ বলছিলেন, ‘‘অসাধারণ খেলল ছেলেরা। উইং প্লে আজ ভাল হয়েছে।’’ বিরতির আগে এ দিন মোহনবাগান খেলছিল ৩-৪-১-২ ছকে। বিরতির পরেই শিল্টনের জায়গায় মেহতাব হোসেনকে নামিয়ে হল ৩-১-৪-২। প্রথমার্ধে মাঝমাঠ ও আক্রমণের মাঝে যোগসূত্র ছিলেন পিন্টু মাহাতো।

রেনবো কোচের হাতে ছিল এই মুহূর্তে কলকাতা ময়দানে খেলা তরুণ তুর্কি সুজয় দত্ত, অভিজিৎ, কৃষ্ণ বিশ্বাসরা। সঙ্গে মাঠে তিন বিদেশি। রিজার্ভ বেঞ্চে পেন ওরজি। তাঁর উচিত ছিল ১-০ এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয়ার্ধে পেনকে নামিয়ে মোহনবাগানকে আরও চেপে ধরা। বদলে তিনি রক্ষণে তুলতে গেলেন প্রাচীর। কিন্তু পেনকে তিনি নামালেন অনেক দেরিতে।

এই সুযোগটা নিলেন মোহনবাগান কোচ। মেহতাবকে তিন ব্যাকের সামনে দাঁড় করিয়ে, চার মিডফিল্ডার এবং ডিকা, আজহারদের নিয়ে আক্রমণে ঝাঁপালেন। বিপক্ষ রক্ষণাত্মক হওয়ায় আক্রমণ তুলে আনতে সমস্যাও হচ্ছিল না মোহনবাগানের দুই উইং হাফ অভিষেক আম্বেকর এবং অরিজিৎ বাগুইয়ের। আজহারউদ্দিনও ছোট ছোট পাসে বিপক্ষকে রক্ষণে কাঁপুনি ধরাচ্ছিলেন। এই মিলিত প্রয়াসেই ডিকার সমতায় ফেরানো মোহনবাগানকে। মেহতাবের ফ্রি-কিক থেকে হেডে গোল করার সময় কাঁধে বিপক্ষ ডিফেন্ডার এরিক দানোকে নিয়েই গোল করেন তিনি। আসলে মেহতাব নামতেই এ দিন জ্বলে উঠল মোহনবাগান।

এ দিন বিশেষ নজর কাড়লেন মোহনবাগানের লেফ্ট উইং অভিষেক। বিমল ঘোষের ছাত্র মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজের এই ছেলেটির ওভারল্যাপের সময়জ্ঞান দুর্দান্ত। ভাল সেন্টার করেন। রক্ষণাত্মক ভূমিকাও ভাল সামলান। সে ভাবেই উঠে গিয়ে ২-১ করা তাঁর। অভিষেকের শট গডউইনের কনুইতে লেগে গোলে ঢোকে। যদিও রেফারি গোল দেন অভিষেককেই। তৃতীয় গোল আজহারের। কর্নার থেকে আসা বলে কিংসলে হেড দেন। সেই বলেই ফের হেড দিয়ে গোল করেন ম্যাচের সেরা আজহার।

মোহনবাগান জিতলেও প্রশ্ন উঠছে গোলকিপার শিল্টনকে নিয়ে। রেনবোর প্রথম গোলের সময় সুজয় দত্তকে কেন ধাক্কা দিতে গিয়ে তিনি মনঃসংযোগ নষ্ট করলেন তা বোঝা গেল না। রেফারি তাঁকে কার্ড দেখাতেই পারতেন। ম্যাচের শেষ দিকে রেনবোর জোয়েল সানডে হেডে ব্যবধান কমানোর সময়ও বল থেকে চোখও সরে গিয়েছিল তাঁর।

রেনবোর হয়ে এ দিন চোখে পড়লেন সুজয় দত্ত। পুলিশকর্মীর ছেলে এই লেফ্ট উইঙ্গার মোহনবাগান রক্ষণকে অনেক বারই বেসামাল করেছেন।

মোহনবাগান: শিল্টন পাল, গুরজিন্দর কুমার, লালছাওয়ান কিমা, এজে কিংসলে ওবুমনেমে, অরিজিৎ বাগুই, অভিষেক আম্বেকর, শিল্টন ডি’সিলভা (মেহতাব হোসেন), সৌরভ দাস (জিতেন মুর্মু), পিন্টু মাহাতো, আজহারউদ্দিন মল্লিক, দিপান্দা ডিকা (ড্যারেন কালদেইরা)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE