ম্যাচের নায়ক সনি নর্ডি।
মোহনবাগান-২ : শিবাজিয়ান্স-০
(সনি-২)
কর্নেল থামলেন তো শুরু হয়ে গেল সনি-ম্যাজিক!
বিপক্ষের গোলে ভারতের ‘পের চেক’। একে তিনি সুব্রত পাল, তার উপর চেকের মতোই কালো ‘মাস্ক’ লাগিয়ে কিপিং করলেন। কিন্তু তাতেও কী? বাগানের হাইতি স্ট্রাইকার যদি ফর্মে থাকেন তাঁকে থামাবে কার সাধ্য ভারতীয় ফুটবলে! ক্লান্তি, বিমানযাত্রার ধকল, আন্তর্জাতিক ম্যাচের চাপ— সোনালি চুলের সনির কাছে কোনও কিছুই যেন বাধা নয়। আই লিগে আগের সব ম্যাচেই গোল করেছিলেন কর্নেল গ্লেন। এ দিন পারেননি। সেই শূন্যস্থান পূরণ করলেন সনি। ম্যাচের সেরাও হলেন।
শিবাজিয়ান্সের ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে গান গাইতে এসেছিলেন কট্টর বাগান-প্রেমী শান। হোম টিম তাঁকে নিয়ে এসেছিল, বিরতিতে তাদের জয়গান করতে করতে শেষ পর্যন্ত মুখ থেকে বেরোল ‘মোহনবাগান’ শব্দটা। সনি-কাতসুমিরা পুণের মাঠে গিয়ে ফেডারেশনের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলকে কার্যত দাঁড়াতেই দেননি। দুই বিদেশির উইংয়ের ঝলকানি। গ্লেনের হোল্ড আপ প্লে। মাঝমাঠে প্রণয়-ব্র্যান্ডনদের লড়াকু ফুটবল। তিনের যোগফলে প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে পুরো পয়েন্ট ঘরে তুলল মোহনবাগান। শেষ পনেরো মিনিট কিংশুকদের কাজ অনেকটা সহজ করে দিলেন শিবাজিয়ান্সের রালতে। জেজের পা ধরে টেনে লাল কার্ড দেখলেন তিনি। নিজের টিমকে দশ জনে নামিয়ে দিয়ে।
ম্যাচের পরেই পুণে থেকে সড়কপথে মুম্বই বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় মোবাইলে সঞ্জয় সেনকে ধরলে বাগান কোচ বললেন, ‘‘আমরা আজ ড্রেসিংরুমে দুটো শপথ নিয়েছিলাম। ম্যাচটা জিতে আই লিগ টপার হিসেবে বিদেশ যাব। বেঙ্গালুরু জেতায় আমরা জেতাতেও সেটা হয়নি। কিন্তু অন্য লক্ষ্যটা পূরণ হয়েছে। এই প্রথম একটা ম্যাচে গোল খায়নি আমার দল।’’
কর্নেল গ্লেন, বলবন্ত, জেজে— বাগানে গোল করার লোকের অভাব নেই। তাতে তিন নম্বর ম্যাচেই সঙ্গত করতে শুরু করে দিলেন সনি-ও। তাঁর প্রথম গোলটা কঠিনতম জায়গা থেকে সুচতুর ভাবে করা। কাতসুমির কর্নার থেকে বলটা এসেছিল সনির কাছে। আর দ্বিতীয় গোলটা তো স্রেফ মগজাস্ত্রের সফল প্রয়োগ। পঁচিশ গজ দূর থেকে গড়ানো কোনাকুনি শটে।
বাগানে এ দিন দুটো পরিবর্তন হয়েছিল। রাইট ব্যাকে রাজু গায়কোয়াড় ও অনূর্ধ্ব-২২ কোটায় ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ। সঞ্জয়ের দুটো পরিবর্তনই কাজে লাগল। দু’-একটা সুযোগ যে শিবাজিয়ান্স পায়নি তা নয়। তবে সেটা সামাল দেওয়ার মতো রসদ নিয়ে এ দিন যেন মাঠে নেমেছিল সবুজ-মেরুন। ম্যাচের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চিনের বিমানে উঠছেন সনি-গ্লেনরা। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যোগ্যতা অর্জনের দ্বিতীয় প্লে-অফ খেলতে। চিনে এখন কনকনে ঠান্ডা। সেখানে শেনডংয়ের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে বাগান কতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে সেটা জানার জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে তার ঠিক আগেই আই লিগে অনায়াস জয় বাগানকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
ক্লাব ছেড়ে দেশ— সঞ্জয়ের সামনে আবার এক নতুন এভারেস্ট।
মোহনবাগান: দেবজিত্, ধনচন্দ্র, কিংশুক, লুসিয়ানো, রাজু, ব্র্যান্ডন (প্রবীর), প্রণয় (অভিষেক), কাতসুমি, সনি, জেজে, গ্লেন (শৌভিক)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy