Advertisement
E-Paper

ফিক্সিংয়ের সন্দেহ করায় দলের অ্যাম্বাসাডরকে ‘পাগল’ বললেন মুশফিকুর!

আসিফ আকবরের প্রধান পরিচয় তিনি জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পি। জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার জয়ী এই সঙ্গীত শিল্পির কণ্ঠে বেজে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টিম সং ‘বেশ বেশ বেশ, সাবাশ বাংলাদেশ, যাও এগিয়ে আমার বাংলাদেশ’। ক্রিকেট মাঠে বাংলাদেশ জাতীয় দল এবং সমর্থকদের প্রেরণাদায়ক এই গানটি গেয়েই থেমে থাকেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৩:৫৯
এক সঙ্গে মুশফিকুর-আসিফ। ছবি সৌজন্য বাংলা ট্রিবিউন।

এক সঙ্গে মুশফিকুর-আসিফ। ছবি সৌজন্য বাংলা ট্রিবিউন।

আসিফ আকবরের প্রধান পরিচয় তিনি জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পি। জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার জয়ী এই সঙ্গীত শিল্পির কণ্ঠে বেজে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টিম সং ‘বেশ বেশ বেশ, সাবাশ বাংলাদেশ, যাও এগিয়ে আমার বাংলাদেশ’। ক্রিকেট মাঠে বাংলাদেশ জাতীয় দল এবং সমর্থকদের প্রেরণাদায়ক এই গানটি গেয়েই থেমে থাকেননি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকাকে ব্রত মনে করেন কুমিল্লা জেলা দলের সাবেক এই ক্রিকেটার। বাংলাদেশের টেস্ট, ওয়ানডে, টি-২০ দেখতে দেশের বাইরেও ছুটে গেছেন একাধিকবার। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এর চলতি আসরে বরিশাল বুলসের টিম সং গেয়েছেন তিনিই। বরিশাল বুলসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়ে দলটির খেলা দেখতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ছুটে গিয়েছেন। দলটির ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাঁর বন্ধুর সম্পর্ক। আবার বিপিএলে বুলসের উপর্যুপরি হার তাঁকে এতটাই বিষিয়ে তুলেছে যে, ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষায় বিরক্ত হয়ে অভিযোগের তীর ছুড়েছেন তাঁদের দিকেই। দলটির ক্রিকেটারদের অভিব্যক্তিতে গড়াপেটার গন্ধ পর্যন্ত নাকি পাচ্ছেন তিনি! গত সোমবার নিজের ফেসবুকে এমন ধারণা পোষণ করে দেওয়া স্ট্যাটাসে বরিশাল বুলসের ভাবমূর্তিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন! ফেসবুকে আসিফ আকবর লিখেছেনÑ ‘১৭, ১৮, ১৯ এবং ২০ নম্বর ওভারগুলোতে ব্যাটসম্যানরা হয়ে যায় প্রতিবন্ধী আর বোলাররা হয়ে যায় বাঘ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট জুয়ার অপর নাম। দর্শক হিসেবে মাঠে যাই খেলা দেখতে, আর আমাদের নিয়ে খেলা হয় টেবিলে। অন্য কোনও দলের কথা আমি বলব না। যদিও প্রমাণ নেই, তবুও আমার দল বরিশাল বুলসের বিদেশি এবং দেশি খেলোয়াড়দের একটা অংশ ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত, এটা নিশ্চিত। বিসিবি এবং আইসিসি’র অ্যান্টি করাপশন ইউনিট (আকসু) যদি তীক্ষ্ম দৃষ্টি দেয়, তা হলে অবশ্যই তারা এর প্রমাণ খুঁজে পাবেন বলে আমার বিশ্বাস। গরীব দল বুলস, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের জন্য খারাপ লাগছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আত্মঘাতী গোলে হেরে যাওয়ার জন্য বরিশাল বুলসের জন্য রইল সমবেদনা। ছিলাম, আছি, থাকব ক্রিকেটের সঙ্গে।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় আকবরের এই লেখা পোস্ট হওয়ার পরেই বিতর্ক শুরু হয়। বরিশাল বুলস অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম জবাব দিয়েছেন ফেসবুকেই। লিখেছেনÑ‘ কী আর বলব। ফেসবুকে লেখাটি দেখার পর নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। উনি আমাদের দেশের একজন বড় সেলিব্রেটি এবং শিক্ষিত মানুষ। তাঁর মুখ থেকে এরকম কথা আসবে বা এরকম কিছু লিখবেন, এটা লজ্জাজনক। আমরা পেশাদার ক্রিকেটার। ক্রিকেটই আমাদের রুটি-রুজি। এই খেলার সঙ্গে যদি কেউ বেইমানি করে, এর চেয়ে খারাপ কিছু আর হতে পারে না। আমাদের দলের দেশি এবং বিদেশি খেলোয়াড় ফিক্সিংয়ে জড়িত, কোন পরিস্থিতি দেখে এমনটা মনে হল তাঁর, এ প্রশ্ন তাঁকে করতে ইচ্ছে করছে। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে উনি নিশ্চিত, কিন্তু তাঁর কাছে প্রমাণ নেই। তা হলে কেন এ ধরনের কথা বলবেন?’ দলের গায়ে কলঙ্ক দেওয়ায় গায়ক আসিফ আকবরকে ‘পাগল’ বলে উল্লেখ করে মুশফিকুর রহিম লিখেছেন, ‘তারও খেলার প্রতি নেশা আছে, অনেক ভাবে জড়িত ছিলেন। আমাদের খেলায় উনি হতাশ, এটা বলতে পারতেন। কিন্তু উনি যেভাবে লিখেছেন, পাগল ছাড়া একজন মানুষের পক্ষে এ ধরনের লেখা সম্ভব নয়।’

মুশফিকুরের আক্রমণের পর ফের ফেসবুকে পোস্ট করেন আসিফ। তবে এ বারে তাঁর সুরটা ছিল বেশ নরম। লেখেন, “ম্যাচ হেরেছে বলে মুশফিকুরের হয়ত মেজাজ বিগড়ে গিয়েছে। তাই ওভাবে বলেছে। যদি ভুল কিছু বলে থাকি তা হলে নিজে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আসব। মুশির সঙ্গে সেলফিও তুলব। বাংলাদেশের টেস্ট দলের গর্বিত অধিনায়ক গতকাল আমাকে যে নামে ডেকেছে, এতে আমি একদম রাগ করিনি, কষ্টও পাইনি বরং খুশী।

মুশফিকুর রহিম-আমাদের প্রিয় মুশি দেশের ক্রিকেটের অপরিহার্য অংশীদার। ক্রিকেট পাগল বাংলাদেশ সব সময় মিস্টার ডিপেন্ডেবলের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকে। কারও ওপর ভরসা থাকলেই কেবলমাত্র এ ধরনের প্রত্যাশা করা যায়, মুশি ঠিক তাই। বাংলাদেশের ক্রিকেট মুশির কাছ থেকে আরও অনেক কিছু পাবে ইনশাল্লাহ। আমি কোনও ভাবে তাকে বিরক্ত করে দেশীয় ক্রিকেটের ক্ষতি করতে চাইনি। ক্রিকেটের প্রতি মুশির ডেডিকেশন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে সম্পূর্ণ ভাবে অর্বাচীনের কাজ। আমার পোষ্টে যা লিখেছি তা ছিল আমার ব্যক্তিগত মতামত, পর্যবেক্ষণ।”

তবে দলের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর আসিফ আকবরের এ ধরনের মন্তব্যেও ক্রিকেটারদের ফিক্সিংয়ের গন্ধ পাচ্ছেন না দলটির শেয়ার হোল্ডার এম এ আউয়াল চৌধুরী ভুলু। তাঁর দাবি, “আসিফ তাঁর কণ্ঠে আমাদের টিম সং গেয়েছেন। বরিশাল বুলসের শুভেচ্ছা দূত তিনি। সব সময় টিমের সঙ্গে থাকেন। চট্টগ্রামেও দলের সঙ্গে ছিলেন। কিছু একটা বলে যদি ক্রিকেটারদের স্পিরিট বাড়ানো যায়, সেজন্যই হয়ত ফেসবুকে এমন কিছু লিখেছেন। ফিক্সিংয়ের মতো কোনও কিছুর সঙ্গে আমার দলের খেলোয়াড়রা জড়িত বলে কখনও মনে হয়নি।’

আরও পড়ুন- এ বার সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে মেহেদি উৎসব

Asif Akbar Mushfiqur Rahim Bangladesh Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy