Advertisement
০২ জুন ২০২৪
Sports News

মুস্তাফিজুরের চোটের চিকিত্সা ইংল্যান্ডেই করার পক্ষে বিসিবি

গত বছরের জুলাই মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্টে মুস্তাফিজুরকে যখন নামিয়ে দেওয়া হল তখন কিন্তু কম সমালোচনা হয়নি। পেশী সুগঠিত হওয়ার আগে ১৯ বছরের হালকা-পাতলা ছেলেটিকে কেন নামানো হলো টেস্টে? মিডিয়ার এমন প্রশ্নের মুখে পর্যন্ত পড়তে হয়েছিল নির্বাচকদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ১৬:০৩
Share: Save:

গত বছরের জুলাই মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্টে মুস্তাফিজুরকে যখন নামিয়ে দেওয়া হল তখন কিন্তু কম সমালোচনা হয়নি। পেশী সুগঠিত হওয়ার আগে ১৯ বছরের হালকা-পাতলা ছেলেটিকে কেন নামানো হলো টেস্টে? মিডিয়ার এমন প্রশ্নের মুখে পর্যন্ত পড়তে হয়েছিল নির্বাচকদের। ছোট ছোট স্পেলে বল করানো হবে মুস্তাফিজুরকে, তখন এই বলেই পার পেয়েছিলেন নির্বাচকরা।

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ম্যাচের সঙ্গে ভালভাবেই মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। তবু শেষ চারটি আসরে তিন তিনবার পড়েছেন ইনজুরির কবলে। কাঁধের চোটের পর বাঁ পাজরের পেশীতে টান, আইপিএলের শেষ দিকে এসে হ্যামেস্ট্রিং ইনজুরি, তারপর আবার ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে বাঁ কাধে চোট ! যে ছেলেটি গত আট মাস ৫০ ওভারের ম্যাচের বাইরে, ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে মোহামেডানে বিক্রি হয়েও যাকে এক দিবসীয় ম্যাচে খেলার অনুমতি দেয়নি বিসিবি, সেই মুস্তাফিজুরকে কেন সাসেক্স ৫০ ওভারের ম্যাচে নামিয়ে দিতে চাইল? এটাই বড় প্রশ্ন। এমনিতেই ইংলিশ কন্ডিশনে খেলার আগে খাপ খাইয়ে নেওয়াটাই বড় কথা। তার জন্য প্রস্তুতিও থাকতে হবে যথেষ্ট। এখানেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর প্রশ্ন, ‘এই সামারেও ইংল্যান্ডে হাওয়া প্রচন্ড ঠান্ডা। বাতাসের বেগও অনেক। এ ধরনের কন্ডিশনে এর আগে কখনওই খেলেনি মুস্তাফিজুর। তা ছাড়া ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে একশো ভাগ ফিট না হয়ে ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলা ঠিক নয়। কেন যেন মনে হচ্ছে এ সব কারণেই কাঁধের পুরনো ব্যথাটা আবারও আক্রান্ত করেছে তাকে।’

আরও পড়ুন: ফের চোট, কাউন্টিতে অনিশ্চিত মুস্তাফিজুর

সারের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে মুস্তাফিজুর বেশ মার খায়। তাই গ্লুস্টারশায়ারের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ম্যাচে কাটার ডেলিভারির নুতন অস্ত্র উদ্ভাবনের কৌশলটা বের করার চেষ্টা করছেন তিনি। অনুশীলনে তা প্রয়োগ করতে যেতেই কাঁধে চোট পেয়েছেন বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ম্যানেজার এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)পরিচালক খালেদ মেহমুদ সুজন। ‘ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করতেও চাইছে ম্যাচের মধ্যে নতুন নতুন কিছু করতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতি দিন তাকে কেউ না কেউ মনিটর করছে, তার বোলিং সম্পর্কে কিছু জানছে। ফলে প্রতি নিয়ত ছোটখাটো পরিবর্তন আনতে চায় ও। হয়তো সেটা করতে গিয়েই একটু চোট পেয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় না খুব সিরিয়াস কিছু।’

নিজের থেকে নুতন কৌশল উদ্ভাবন করতে গিয়ে এর আগেও এমন সমস্যায় পড়েছেন মুস্তাফিজুর। এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরী, ‘আমারও মনে হচ্ছে, ও হয়ত বা নতুন কিছু করার চেষ্টা করছিল। দেশেও সে এর আগে নতুন একটা কিছু চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যথা অনুভব করেছে। তখন ওকে থামানো হয়েছে। বলা হয়েছে, আপাতত এ সব কিছু করার দরকার নেই।’

রয়েল লন্ডন ওয়ানডে কাপে সাসেক্সের পরবর্তী ম্যাচ ২৮ তারিখে, গ্লামারগনের বিপক্ষে। তার আগে বৃহস্পতিবার ন্যাট ওয়েস্ট টি-২০ ব্লাস্টে হোম গ্রাউন্ড হোভে সাসেক্স খেলবে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে। তবে ব্যথা হালকা থাকলেও ওই ম্যাচে খেলানো হবে না মুস্তাফিজুরকে। সাসেক্স থেকে এমন বার্তাই দেয়া হয়েছে বিসিবিকে। ইংল্যান্ডে চিকিৎসা পরিষেবা অত্যাধুনিক বলে মুস্তাফিজুরকে আপাতত দেশে ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছে না বিসিবি। এমনটাই জানিয়ে বিসিবি পরিচালক খালেদ মেহমুদ সুজন বলেন, ‘এমনও হতে পারে ফিরে এসে দুই দিন পর খেলতে পারছে। আজ (সোমবার) এক স্পেশালিস্টকে দেখানোর কথা। হালকা ব্যথা অনুভব করছে ও, সেটাই আমি জানি। এ জন্যই আসলে খেলা হয়নি। যদি হালকা ব্যথা থাকে তা হলে ওই ব্যথা নিয়ে খেলবে না মুস্তাফিজুর, আমাদের পক্ষ থেকে তেমন নির্দেশই দেওয়া আছে। এমআরআই করার পর জানা যাবে কতটা ইনজুরি, রিকভারি করতে কতটা সময় লাগবে? কিন্তু এখনই দেশে আনার কথা ভাবছি না। তার ইনজুরির সব দায়িত্ব ক্লাবই নেবে। কারণ যেহেতু ও সাসেক্সের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়, ইনস্যুরেন্স তো থাকবেই। আর যদি নাও থাকে তা হলে বোর্ড থেকে ওকে সেরা চিকিৎসাটা দিয়ে আনার চেষ্টা করব। যদি বড় কোন ইনজুরিও হয় তাহলে আমার মতে বোর্ডেরও উচিত ওইখানে রেখে ইনজুরিটা একেবারে সারিয়ে আনা’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE