গম্ভীর: ল্যাঙ্গারের কোচিং টিমেরই ব্যাটিং কোচ হল নিল।
প্র: বোঝা গেল। কিন্তু সে দিল্লিতে ট্রেনিং করাচ্ছিল হঠাৎ?
গম্ভীর: কারণটা আমিই। এ বার নিজে না গিয়ে ওকে পার্থ থেকে উড়িয়ে এনেছিলাম।
প্র: আপনি গ্রেগ চ্যাপেলের কাছেও ব্যাটিং বিশ্লেষণ শুনেছেন। ল্যাঙ্গারও শুনছেন। দু’টো কি আলাদা দর্শন?
গম্ভীর: আমি গ্রেগকে খুব বেশি পাইনি। তবে আমার মতে আলাদা। গ্রেগ আমাদের বলতেন ফুললি পিচড আপ বল খেলাটাই সবচেয়ে বেশি কঠিন কারণ তা ভাবার আনুপাতিক কম সময় দেয়। আর শর্ট বল তুলনামূলক ভাবে সহজ কারণ তুমি আগেই দেখে সরে যেতে পারছ।
প্র: ল্যাঙ্গারটা বললেন না।
গম্ভীর: ল্যাঙ্গার অনেক মডার্ন আর ফ্লেক্সিবল।
প্র: আপনার স্টান্সটা এত ওপেন হয়ে যাওয়ার পেছনে মনে হয় ল্যাঙ্গার। কিন্তু এই স্টান্সে আইপিএল খেলা যেতে পারে, টেস্ট ক্রিকেট সম্ভব?
গম্ভীর: নিশ্চয়ই সম্ভব। এই ওপেন স্টান্সে আমি আরও ভাল বলটাকে দেখছি। আরও বেশি স্বচ্ছন্দ এটায়। টেস্টে খেলতে না পারার তো কোনও কারণ নেই। ব্যাটিংয়ে আসল কথা হল ব্যালান্স। যে স্টান্সে আপনার ব্যালান্সিংটা বলকে হিট করার পক্ষে সবচেয়ে ভাল সেটাই আপনার স্টান্স।
প্র: কিছু মনে করবেন না, এত যে কাঠখড় পোড়াচ্ছেন এটা কোন লক্ষ্য মাথায় রেখে? ইন্ডিয়ান টিম তো গত চার বছর ধরে আপনার দিকে ফিরেও তাকায় না।
গম্ভীর: কিছু আসে যায় না। ডাজন্ট ম্যাটার। আমার কতগুলো ক্রিকেটীয় লক্ষ্য আছে সেগুলো নিয়ে আমি লড়ে যেতে চাই। ওরা আমাকে ফেরাক না ফেরাক, তাতে আমার জীবন আমূল বদলে যাবে না।
প্র: তাই কি? সৌরভ একটা কথা বলেন, আপনার চাকরি গেলে অন্য অফিসে চাকরি পাওয়ার সুযোগ আছে। ইন্ডিয়ান টিম মানে একটাই চাকরি। ওটা গেলে তুলনাযোগ্য আর একটাও চাকরি নেই।
গম্ভীর: একদম ঠিক বলে কিন্তু আমি বেদনা নিয়ে বসে থেকে কী করব? আমি বরঞ্চ ভাবি আজও কোনও ধরনের ক্রিকেটে ৩০০ করতে পারিনি। এক বার ৩০০ করে দেখাব। দিল্লিকে আবার রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন করব। থার্ড অ্যাম্বিশন হল কেকেআরকে আর এক বার আইপিএল জেতানো। আমরা কয়েকটা ফ্র্যাঞ্চাইজি দু’বার করে আইপিএল জিতেছি। আমরা, সিএসকে, এমআই, হায়দরাবাদ। আমরা যদি তিন বার জিততে পারি প্রথম টিম হিসেবে, বাড়তি একটা কীর্তি গড়ব। ওটা খুব লোভের।
প্র: মানে আপনার এখনকার লক্ষ্য অনেক বেশি দলগত?
গম্ভীর: নো। আমি ক্যাপ্টেন্সি বা দল পরিচালনাকে এত গুরুত্ব দিই না। আমি মনে করি এক জন ক্যাপ্টেন ততটাই ভাল যত ভাল তার টিম। আমি অস্ট্রেলীয় টাইপ অব সিলেকশনে বিশ্বাস করি যে, আগে এগারো জন বাছো। তার পর তাদের মধ্যে থেকে ক্যাপ্টেন ঠিক করে নাও। আমি মনে করি ক্যাপ্টেনকে আগে নিজের দলে ঢোকার মতো যোগ্য হতে হবে। তার পর তো সে বাহিনীর সামনে বুক চিতিয়ে নেতৃত্ব দেবে।
প্র: বোর্ড বনাম সুপ্রিম কোর্ট কেমন লেগেছে দেখছেন?
গম্ভীর: সবই দেখছি আর শুনছি।
প্র: এ ব্যাপারে স্বাভাবিক কারণেই আপনার মতামত চাইছি না। কিন্তু একটা প্রশ্ন সরাসরি করতে চাই।
গম্ভীর: কী প্রশ্ন? বলুন।
প্র: বিরাটকে এ বার তিন ফর্ম্যাটেই ক্যাপ্টেন করে দেওয়ার সময় কি এসে যায়নি?
গম্ভীর: আমার মনে হয় সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এমএস-কে এখনও রেখে দেওয়া উচিত। আমি এমএস-কে একটা ব্যাপারে কৃতিত্ব দিতে চাই যে, গত আট-ন’বছর ধরে ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে হটস্পটটা খুব বিচক্ষণতার সঙ্গে সামলেছে।
প্র: বলছেন কী? আপনার মুখে ধোনির প্রশংসা!
গম্ভীর: কেন নয়?
প্র: এই জন্যই নয় যে, ধোনির আমলেই আপনাকে আচমকা টিম থেকে বার করে দেয়। আপনার ক্যাপ্টেন হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। শ্রীনিবাসন এসে নির্বাচনী বৈঠকে হুলুস্থুল না পাকালে আপনি চার বছর আগেই পাকাপাকি ভাবেই ভারত অধিনায়ক হয়ে যান।
গম্ভীর: তাতে কিছু আসে যায় না। আমার বিশ্লেষণ এখনকার পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে। তবে একটা কথা বলা দরকার যে, ধোনি যেন প্রথমে ব্যাটসম্যান ও কিপার হিসেবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে।