বিকল্প: স্টার্কের বদলি এক্সপ্রেস গতির প্যাট কামিন্স। ফাইল চিত্র
নাথন লায়ন এবং স্টিভ ও’কিফ যতই দারুণ সাফল্য পেয়ে থাকুন, বিরাট কোহালিদের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া হাতিয়ার করছে সেই গতিকেই। তাদের সেই রণনীতি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, মিচেল স্টার্কের পরিবর্ত হিসেবে প্যাট কামিন্স-কেই বেছে নেওয়ায়।
কামিন্স প্রায় ছ’বছর কোনও টেস্ট খেলেননি। ২০১১ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি অভিষেক ঘটিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। সেই টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে তিনি ১১৭ রানে সাত উইকেট নিয়ে ক্রিকেট পণ্ডিতদের চমকেও দিয়েছিলেন। তার মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসেই ছিল ছয় উইকেট। আবির্ভাবেই কামিন্স নজর কেড়েছিলেন তাঁর আগুনে গতির জন্য। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, দুর্দান্ত অভিষেক ঘটানোর পরে আর কখনও টেস্ট খেলা হয়নি তাঁর। চোট-আঘাতে জর্জরিত হয়ে তাঁর কেরিয়ারই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল।
ছয় বছর না খেলা কাউকে এমন ফুটন্ত সিরিজে ফেরানোটা কেউ কেউ বলছেন, ফাটকা খেলার সমান। তবু স্টিভ স্মিথের অস্ট্রেলিয়া যে এমন ঝুঁকি নিয়ে ফেলল, তার পিছনে প্রধান কারণ কামিন্সের গতি। স্টার্ক না থাকায় অস্ট্রেলিয়া এমন কাউকে পরিবর্ত হিসেবে চেয়েছিল, যাঁকে দিয়ে কোহালিদের আক্রমণ করা যাবে। আর সেই আক্রমণে এক দিকে থাকবে কামিন্সের গতি, অন্য দিকে লায়ন-ও’কিফ জুটির স্পিন।
ডেভিড ওয়ার্নারের বক্তব্য শুনলেই অস্ট্রেলীয় রণনীতি পরিষ্কার হয়ে যাবে। ‘‘আমরা জানি কামিন্সের মধ্যে আগুন আছে। বোলারদের নেতৃত্বে সব সময় এমন এক জনকে চাই, যে এক্সপ্রেস গতিতে বল করতে পারে। সব সময় সেটাই হচ্ছে অস্ট্রেলীয় মনোভাব।’’ ময়নাতদন্ত বলছে, পুণেতে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের প্রধান কারণ ছিলেন স্টার্ক। তিনি খুব বেশি উইকেট না পেলেও আগুনে গতি দিয়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দুমড়ে রেখেছিলেন। স্টার্কের তৈরি করা মঞ্চের ওপর ও’কিফ ধ্বংসলীলা চালিয়ে যান। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির রাঁচীতেও স্মিথদের নকশা একই থাকবে। তবে স্টার্ক বাঁ-হাতি হওয়ায় আলাদা সুবিধে উপভোগ করছিলেন। ডান-হাতি কামিন্স ডান-হাতিতে ভর্তি ভারতীয় ব্যাটিংকে বল করতে গিয়ে বাঁ-হাতির কোণ তৈরি করার সুবিধে পাবেন না। ছয় বছর পরে টেস্ট আঙিনায় ফিরে এসে কামিন্স কতটা ছন্দে থাকেন, সেটাও দেখার। কামিন্স নিজে একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে বলেছেন, ‘‘আমি উত্তেজিত। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই।’’
ছয় বছর পরে টেস্ট দলে ডাক পাওয়া নিয়ে যোগ করেছেন, ‘‘মরসুমের শুরুতে কয়েকটা লক্ষ্য রেখেছিলাম নিজের সামনে। ওয়ান ডে দলে ফিরে আসার চেষ্টা করা তার মধ্যে ছিল। এখন টেস্টের জন্য ডাক পাওয়ায় আমার মধ্যে ছটফটানি শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
শেফিল্ড শিল্ডের সাম্প্রতিক একটি ম্যাচে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১০৪ রানে আট উইকেট নিয়েছেন কামিন্স। তাঁর নির্বাচনের কারণ এই পারফরম্যান্স। ওই ম্যাচে পুরনো গতি এবং ছন্দে বল করতে দেখা গিয়েছে বলেই অস্ট্রেলীয় নির্বাচকদের মনে হয়েছে, কামিন্স এখন সম্পূর্ণ ফিট। তিনি নিজেও সে কথা বলেছেন, ‘‘আমার শরীরটা খুব তরতাজা আছে বলে মনে হচ্ছে। গত ছয় বছর অনেক চোট-আঘাতে ভুগেছি। কিন্তু এ বার প্রাক-মরসুম ট্রেনিং করেছি। তার ফলে এখন দারুণ ফিট লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy