Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অনুমতি নেই, বসানো হল না সৌরভের মূর্তি

১২ জুলাই জেলাশাসকের দফতর কিন্তু গৌতমবাবুকে জানায়, পদ্ধতি মেনে আবেদন করা হয়নি। সরকারি জমিতে তাই সৌরভের মূর্তি বসানো যাবে না। সেই চিঠি পাওয়ার পরেও গৌতমবাবুরা গড়িমসি করতে থাকেন। তাতে সময় নষ্টই হয়। ইতিমধ্যে সৌরভ নিজেও পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে শনিবার বালুরঘাটে চলে আসেন।

তারকা: বালুরঘাটে তাঁর বিশাল মূর্তি উন্মোচন হল। সেলফি তুলে রাখছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি অমিত মোহান্ত

তারকা: বালুরঘাটে তাঁর বিশাল মূর্তি উন্মোচন হল। সেলফি তুলে রাখছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি অমিত মোহান্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০৪:৫৯
Share: Save:

ঠিক সময়ে জেলাশাসকের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে বালুরঘাট স্টেডিয়ামে বসল না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মূর্তি।

অনেক দিন আগে থেকেই সৌরভের মূর্তি বসানোর তোড়জোড় শুরু করেছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এই সংস্থার সম্পাদক গৌতম গোস্বামী নিজেই সৌরভের বাড়ি গিয়ে মূর্তি তৈরির ও তা বসানোর অনুমতি নিয়ে আসেন। কিন্তু এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কোনও অনুমতি তাঁর কাছে ছিল না। মাত্র দিন দশেক আগে তিনি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ওই মূর্তি বসানোর অনুমতি চান। জেলাশাসক ওই সংস্থারই সহ সভাপতি। তিনি মৌখিক ভাবে অনুমতি দিয়ে দেন বলে ক্রীড়া সংস্থার দাবি। সেই ভিত্তিতে সৌরভকে আমন্ত্রণও জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু লিখিত কোনও অনুমতি গৌতমবাবুর কাছে ছিল না।

১২ জুলাই জেলাশাসকের দফতর কিন্তু গৌতমবাবুকে জানায়, পদ্ধতি মেনে আবেদন করা হয়নি। সরকারি জমিতে তাই সৌরভের মূর্তি বসানো যাবে না। সেই চিঠি পাওয়ার পরেও গৌতমবাবুরা গড়িমসি করতে থাকেন। তাতে সময় নষ্টই হয়। ইতিমধ্যে সৌরভ নিজেও পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে শনিবার বালুরঘাটে চলে আসেন। এ দিন সকালে জানাজানি হয় যে, মূর্তি বসানো যাবে না। সৌরভের সম্মানে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, তা অবশ্য হয়েছে। অনুষ্ঠান মঞ্চের পাশে অস্থায়ীভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা ৮ ফুট উঁচু ফাইবারের মূর্তিটির আবরণ উন্মোচনও করেন সৌরভ। তারপরে সেখানে ভারতের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বলে দেন, ‘‘এখানে মূর্তি বসানো না গেলে পাঠিয়ে দেবেন। বেহালায় নিজের বাড়ির সামনে মূর্তিটি বসিয়ে নেব। সুন্দর দেখাবে।’’

এই ঘটনায় শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের প্রসঙ্গই ফের সামনে এসেছে।

গৌতমবাবু আরএসপি-র নেতা ছিলেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থায় এখনও আরএসপি-র কর্তৃত্ব রয়েছে। অভিযোগ, তৃণমূল নেতা শঙ্কর চক্রবর্তীর অনুগামীদের প্রচ্ছন্ন মদতও রয়েছে সেই কর্তৃত্বের পিছনে। এটাই ভাল চোখে দেখেননি দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের অনুগামীরা। অভিযোগ, বিপ্নববাবুর অনুগামীরাই সৌরভের মূর্তি বসানোর বিরোধিতা করেছেন।

এই প্রসঙ্গে বিপ্লববাবুর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘এর মধ্যে রাজনীতি নেই। তবে গৌতমের উপরে কারও ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকতে পারে।’’ গৌতমবাবুর বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ ঠিক নয়। আমি যথা সময়েই জেলাশাসককে সব জানিয়েছিলাম।’’ জেলাশাসক সঞ্জয় বসু এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

জেলার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা বলেন, ‘‘জেলা ক্রীড়া সংস্থা মনে করে তারা হল মাঠের মালিক। তারাই ক্ষমতাবান। ফলে মূর্তি বসানোর সমস্ত কিছু ঠিক করে শেষ মুহূর্তে প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। স্টেডিয়াম কমিটির চেয়ারম্যান সভাধিপতি এবং সহ সভাপতি জেলাশাসক নিজে। ফলে জেলাশাসকও ভাবেননি যে, তাঁর অনুমতি ছাড়া মূর্তি বসানো যায় না। আমাকেও শেষ মুহূর্তে জানানো হয়, যখন সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।’’ বাচ্চুবাবুর মন্তব্য, ‘‘আমরা লজ্জিত সৌরভের মতো এতবড় একজন সফল অধিনায়ক ও আইকনের মুখে শুনতে হলো মূর্তিটি বেহালার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE