Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Tokyo Paralympics 2020

Bhavinaben Patel: ভবানীর পর ভাবিনা, ছোট থেকে হুইলচেয়ারকে সঙ্গী করা প্যারালিম্পিয়ান শেখাচ্ছেন লড়তে

প্যারালিম্পিক্সে এর আগে কোনওদিন টেবিল টেনিসে পদক জেতেনি ভারত। সেই পরিসংখ্যান উল্টে দিলেন ভাবিনাবেন পটেল।

পরিসংখ্যান উল্টে দিলেন ভাবিনাবেন পটেল।

পরিসংখ্যান উল্টে দিলেন ভাবিনাবেন পটেল। ছবি: টুইটার থেকে

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২১ ০৮:৩১
Share: Save:

প্যারালিম্পিক্সে এর আগে কোনও দিন টেবিল টেনিসে পদক জেতেনি ভারত। সেই পরিসংখ্যান উল্টে দিলেন ভাবিনাবেন পটেল। গুজরাতের এই প্যারা টেবিল টেনিস খেলোয়াড় রুপো জিতলেন। সেই সঙ্গে ভারতের খাতায় এ বারের প্যারালিম্পিক্সে প্রথম পদক এল।

ভারতে অলিম্পিক্স ক্রীড়াবিদরা যতটা পরিচিতি পান, প্যারালিম্পিয়ানরা তার সিকিভাগও পান না। ফেন্সার ভবানী দেবীর নাম যতটা পরিচিত, রুপো জয়ী ভাবিনা তার ধারে কাছে নেই। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্যারা প্রতিযোগিতায় দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করলেও এতদিন ভাবিনাবেন ছিলেন সাধারণ মানুষের কাছে অজানাই। ভারতের হয়ে ৩০টিরও বেশি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। জিতেছেন বহু পদক। তবে প্যারালিম্পিক্সে সাফল্যই তাঁকে দেশব্যপী পরিচিতি এনে দিল।

গুজরাতের ভাডনগরে মেহসানা জেলার সুন্ধিয়া গ্রামে ১৯৮৬-র ৬ নভেম্বর জন্ম ভাবিনাবেনের। মাত্র এক বছর বয়সেই পোলিয়োয় আক্রান্ত হন তিনি। শরীরের নিচের অংশ ক্রমশ অবশ হয়ে যেতে থাকে। মধ্যবিত্ত পরিবার হওয়ায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য ছিল না বাবা-মায়ের। তবু ভাবিনার বাবা চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। পাঁচ জনের পরিবারের পুরো ভার তাঁর কাঁধে থাকলেও ভাবিনাকে তিনি নিয়ে গিয়েছিলেন অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনমে চিকিৎসা করাতে। কিন্তু সেই অস্ত্রোপচার কাজে লাগেনি। কারণ যে রিহ্যাব করতে দেওয়া হয়েছিল, তা ঠিক মতো অনুসরণ করেননি ভাবিনা।

ফলে খুব ছোট থেকেই হুইলচেয়ার তার সব সময়ের সঙ্গী। সুন্ধিয়া গ্রামে আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের সঙ্গে সাধারণ স্কুলেই পড়তেন ভাবিনা। ২০০৪-এ তাঁর বাবা আমদাবাদের ব্লাইন্ড পিপল‌্স অ্যাসোসিয়েশনে ভর্তি করিয়ে দেন। সেখানে কম্পিউটার পড়ার পাশাপাশি স্নাতক হওয়া লক্ষ্য ছিল ভাবিনার। কিন্তু এখান থেকেই তাঁর জীবন হঠাৎ ঘুরে যায়। ব্লাইন্ড পিপল‌্স অ্যাসোসিয়েশনে পড়ার সময় লালা যোশীর সঙ্গে পরিচিতি হয় ভাবিনার। লালাই ভাবিনাকে পরামর্শ দেন ফিটনেস বজায় রাখতে টেবিল টেনিস খেলতে। শেখার ইচ্ছে ছোট থেকেই ছিল। ফলে খুব অল্প সময়ে খেলা আয়ত্ত করে নেন ভাবিনা। তিন বছর কঠোর পরিশ্রমের পর ২০০৭-এ বেঙ্গালুরুতে প্যারা টেবিল টেনিসে জাতীয় খেতাব জেতেন। ২০০৯-এ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অভিষেক হয় তাঁর। তবে সাফল্য পেতে আরও দু’বছর লেগেছিল। ২০১১-য় তাইল্যান্ড ওপেন প্যারা টেবিল টেনিসে রুপো জেতেন তিনি।

সেই শুরু। দু’বছর পরে এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় রুপো জেতেন। সেটাও ছিল প্যারা টেবিল টেনিস ভারতের প্রথম রুপো। এরপর জর্ডান, তাইওয়ান, চিন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, স্লোভেনিয়া, তাইল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং মিশরে পদক জেতেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সোনার পদক আসছিলই না। অবশেষে ২০১৯-এ ব্যাংককে প্যারা টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপের জীবনের প্রথম সোনা পান।

আরও পড়ুন:

বয়স সঙ্গ দিলে পরের প্যারালিম্পিক্সেও অংশ নিতে চান ভাবিনাবেন। তবে আপাতত টোকিয়োর সাফল্য উপভোগ করতে চান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE