Advertisement
১৬ মে ২০২৪

দ্রাবিড়ের মন্ত্রেই বদলানো ‘অভি’-কে দেখলেন সৌরভ

 নায়ক: দলকে জেতানোর পথে ঈশ্বরন (ন.আ. ১৮৩)। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নায়ক: দলকে জেতানোর পথে ঈশ্বরন (ন.আ. ১৮৩)। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

বঙ্গ ক্রিকেটের অভিমন্যুকে যে চক্রব্যূহে আটকানো বেশ কঠিন, তা বুধবার ইডেনের ইনিংসে বুঝিয়ে দিলেন তরুণ ব্যাটসম্যান অভিমন্যু ঈশ্বরন। আর তাঁর রাজ্যের এই অপ্রতিরোধ্য ওপেনারকে নতুন ভাবে গড়ে তুলে যে বাংলার কতটা উপকার করেছেন তাঁর এক সময়ের সতীর্থ রাহুল দ্রাবিড়, সারা দিন ইডেনে বসে তা বুঝে নিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বেরনোর সময় বলে গেলেন, ‘‘খুব ভাল ব্যাটিং করেছে ছেলেটা। অনেক উন্নতি করেছে।’’

‘রান নয়, রান করার প্রক্রিয়ায় বেশি মন দাও। কত রান করবে, তা নিয়ে বেশি ভেবো না। রান তুলবে কী ভাবে, সেই নিয়েই বেশি ভাবো।’ রাহুল দ্রাবিড়ের দেওয়া এই মন্ত্র ও ব্যাটিংয়ের টেকনিক ও মানসিকতায় অল্প রদবদল। যার ফল, এই নতুন অভিমন্যু ঈশ্বরন। গত ছ’ইনিংসে বাংলাকে যিনি ৪৭০ রান দিয়েছেন।

ভারত ‘এ’ দলের সঙ্গে গিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড সফরে। সেখান থেকে ফিরে রঞ্জি ট্রফিতে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে একটি ১৮৬ রানের ইনিংস খেলে বাংলাকে তিন পয়েন্ট এনে দিয়েছিলেন। বুধবার ইডেনে তাঁর অপরাজিত ১৮৩ এনে দিল ছ’পয়েন্ট, যা না এলে এ বারের রঞ্জি অভিযানে ইতি টানতে হত মনোজ তিওয়ারিদের।

গত বার রঞ্জি ট্রফিতে সাতটি ম্যাচে তিনটি সেঞ্চুরি-সহ ৫৬৪ রান করেছিলেন ৪৭-এর গড় নিয়ে। এ বার রঞ্জিতে পাঁচ ম্যচেই তাঁর ব্যাট থেকে ৬৫৩ রান চলে এসেছে ৮১.৬২-র গড়ে। এই উন্নতির পিছনে যে অনেকটাই অবদান প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক দ্রাবিড়ের, তা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই বঙ্গ ক্রিকেটের নতুন তারকার। ইডেনে বুধবার অভিজ্ঞ অনুষ্টুপ মজুমদারের সঙ্গে বাংলাকে জিতিয়ে উঠে মনোজদের শিবিরের ‘অভি’ বললেন, ‘‘মরসুম শুরুর আগে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ভাল শুরু করেও বড় ইনিংস গড়তে পারছিলাম না। তখন রাহুল স্যরই বললেন, ‘বড় রান করার কথা মাথাতেই রেখো না। উইকেট, পরিবেশ, পরিস্থিতি ও বোলিং অনুযায়ী প্রতি ওভার ধরে ধরে সঠিক ব্যাটিং করো, তা হলে রান এমনিই আসবে।’ রাহুল স্যরের সেই পরামর্শ মেনে এখন উপকার পাচ্ছি।’’

বুধবার ১৭ রানের মধ্যে রামন, সুদীপ চট্টোপাধ্যায় ও মনোজ তিওয়ারি ফিরে যাওয়ায় দায়িত্ব এসে পড়ে অভিমন্যু ও অনুষ্টুপের ওপরে। অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার মেলবন্ধনে গড়া এই জুটিই শেষ পর্যন্ত বাংলাকে জেতায়। অভিজ্ঞ অনুষ্টুপের সঙ্গে ব্যাটিং করা নিয়ে অভিমন্যু বলেন, ‘‘রুকুদার (অনুষ্টুপ) অভিজ্ঞতা যথেষ্ট। এ রকম পরিস্থিতিতে অনেকবার ও ব্যাটিং করেছে, জিতিয়েছে। আমরা ঠিক করি, রানের কথা না ভেবে, তাড়াহুড়ো না করে উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করব।’’ অন্য দিকে অনুষ্টুপ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ওই সময় পরিকল্পনা ছিল কুলবন্ত খেজরোলিয়ার বোলিং সামলে দেওয়া। জানতাম, বাকি বোলারদের সহজেই খেলে দিতে পারব। পরে ওর চোট লাগায় সুবিধা পাই আমরা।’’

চতুর্থ ইনিংসে ৩২২ রানের লক্ষ্যে পৌঁছনো যে সম্ভব, এই বিশ্বাসটা বাংলা শিবিরে বরাবরই ছিল বলে জানিয়ে দেন দু’জনেই। তবে এ দিন অভিমন্যুর ফিটনেসের প্রশংসা করেন দলের মেন্টর অরুণ লাল। বলেন, ‘‘ফিটনেস নিয়ে অভিমন্যু মনে হচ্ছে বিরাট কোহালির মেজাজে রয়েছে।’’ যার কৃতিত্ব অভিমন্যু দেন দলের ট্রেনার, ফিজিয়োকে। তবে দলের ব্যাটিং নিয়ে যে উদ্বেগ এখনও পুরোপুরি কাটেনি, তা সাফ জানিয়ে দেন অরুণ। বলেন, ‘‘পরের ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে। এখনও বলতে পারছি না যে ব্যাটিং ভাল হচ্ছে। এই ম্যাচেও অনেক ভুল হয়েছে। এগুলো অবশ্যই শোধরানো দরকার।’’ তবে অভিমন্যুকে নিয়ে নিশ্চিন্ত তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE