Advertisement
০৩ মে ২০২৪
তিনে তিন ভারতের

ঋষভ দেখিয়ে দিলেন, বড় মঞ্চের জন্য কতটা তৈরি

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দু-একটা পার্টনারশিপ বা বোলারদের দু-একটা ওভারই ম্যাচের ছবি পাল্টে দিতে পারে। রবিবারও তা-ই হল।

যুগলবন্দি: ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের শাসন করে ভারতকে ম্যাচ জেতাল দিল্লির জুটি ঋষভ ও শিখর। ছবি: পিটিআই।

যুগলবন্দি: ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের শাসন করে ভারতকে ম্যাচ জেতাল দিল্লির জুটি ঋষভ ও শিখর। ছবি: পিটিআই।

অশোক মলহোত্র
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১০
Share: Save:

শিখর ধওয়ন ও ঋষভ পন্থ ব্যাট হাতে একসঙ্গে আগ্রাসী হয়ে উঠলে কী হয়, সেটাই রবিবার দেখে নিল ক্রিকেটবিশ্ব।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দু-একটা পার্টনারশিপ বা বোলারদের দু-একটা ওভারই ম্যাচের ছবি পাল্টে দিতে পারে। রবিবারও তা-ই হল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শেষ ওভারে ঝড় তুলে তাদের ইনিংসের ছবিটা পাল্টে দিয়েছিল। কিন্তু তার চেয়েও বেশি আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১৩০ রানের ঝোড়ো পার্টনারশিপ গড়ে চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটাও জিতিয়ে দিলেন ধওয়ন ও পন্থ। ধওয়নকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে ঋষভ দেখিয়ে দিলেন, বড় মঞ্চের জন্য তিনি তৈরি। এই জয়ে রোহিত শর্মারা সিরিজ জিতল ৩-০। টেস্ট, ওয়ান ডে-র পরে এ বার টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে তিনে তিন করে ফেলল ভারত।

আগে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যান ড্যারেন ব্র্যাভো (৪৩) ও নিকোলাস পুরান (৫৩) ঝড় তোলায় তাদের রানটা হঠাৎ এমন জায়গায় (১৮১) চলে যায় যে, ভাল বোলিং করতে পারলে এই রান নিয়েও লড়াই করা যেত। কিন্তু ক্যারিবিয়ানদের সেই বোলিং কোথায়? আর ধওয়ন ও পন্থের ব্যাটে একসঙ্গে ঝড় উঠলে বিশ্বের যে কোনও বোলিংও দমে যেতে বাধ্য। চেন্নাইয়েও তা-ই হল। তবে এই দু’জন শেষের দুই ওভারে পরপর আউট হয়ে যাওয়ায় শেষ দিকে একটু চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। সেই চাপ শেষে সামলে নেন মণীশ পাণ্ডে।

আরও পড়ুন: ম্যাচের সেরা ধওয়নের মুখে পন্থের প্রশংসা

চেন্নাইয়ের উইকেট এ দিন নিখুঁত টি-টোয়েন্টির মতো ছিল না। বল কিছুটা থমকে আসছিল। এই রকম পিচে ব্যাটসম্যানদের শুরুতে একটু বুঝে নিয়ে তার পরে আক্রমণ শুরু করা উচিত। পন্থ ও ধওয়নও সে ভাবেই শুরু করেন। এক ওভারে পিচ বুঝে নিয়ে বড় শট মারা শুরু করেন। দুই ব্যাটসম্যানই ছন্দে আসা মানে এমনই ঝড় উঠবে, এটাই স্বাভাবিক।

আরও পড়ুন: মিতালিদের দাপটে হার পাকিস্তানের

রোহিতরা আগেই ২-০ এগিয়ে যাওয়ায় এটা ছিল নিয়মরক্ষার ম্যাচ। তাই তিন নির্ভোরযোগ্য বোলারকে ছাড়াই এ দিন নামে ভারত। এ দিন ভারতের বোলিং দেখে মনে হল উমেশ যাদব, যশপ্রীত বুমরা ও কুলদীপ যাদবকে ছাড়া একটু সমস্যাই হচ্ছে দলের। যার ফলে ভারত ছাড়ার আগে কিছুটা লড়াকু মনোভাব দেখালেন ক্যারিবিয়ানরা।

পেসারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানোর তত্ত্বটা মোটেই খারাপ নয়। এতে দুটো কাজ হয়। দলের প্রধান বোলারদের তাজা ও অনেকটা চোটমুক্ত রাখা যায়। আর রিজার্ভ বেঞ্চের বোলারদের ম্যাচ খেলার সুযোগ দিয়ে তাদেরও তৈরি রাখা যায়। বিশ্বকাপের আগে ভারতীয় দলকে যে পরিমান ক্রিকেট খেলতে হবে, এই দুটো কাজ একসঙ্গে করাই দরকার। কিন্তু রিজার্ভ বেঞ্চের বোলারদের পারফরম্যান্স খুব একটা আশাজনক লাগল না।

বাঁহাতি পেসার খলিল আহমেদ এ দিন নতুন বলে বোলিং শুরু করে চার ওভারে ৩৭ রান দেন। কিন্তু কোনও উইকেট পাননি। ওঁর শেষ ওভারেই ওঠে ২৩ রান। অভিজ্ঞতার অভাবেই এটা হচ্ছে বোধহয়। তার আগের ওভারেই ব্র্যাভো ও পুরান ওকে বুঝে নিয়ে পরের ওভারেই পাল্টা মারেন। এখনও পরিণত হতে হবে খলিলকে। বাঁহাতি পেসার বলে ওর একটা বাড়তি সুবিধা আছে। তাই ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট ওকে হয়তো বিশ্বকাপে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে। কিন্তু ডেথ ওভারের বোলিংটা ওঁকে ভাল করে শিখতে হবে। বুমরা, ভুবনেশ্বরদের কাছ থেকে বরং এটা শিখে নিন খলিল। তা হলে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাঁর কার্যকরিতা আরও বাড়বে।

তবে চোট সারিয়ে আসার পরে ভুবনেশ্বরকে এখনও পুরোপুরি নিজের সেরা ফর্মে ফিরতে দেখিনি। ওঁর বলের গতি, সুইং আগের মতো নেই। এই পরিস্থিতিতে দলের অন্য পেসারদেরই এই অভাবটা পূরণ করতে হবে। কিন্তু তা করতে হলে আরও অনুশীলন দরকার ওঁদের।

এই সিরিজে প্রথম খেলতে নামা অফস্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর ভাল বোলিং করলেও কোনও ভাবেই কুলদীপের বদলি নন। খলিল ও ওয়াশিংটন দু’জনেই এ দিন বেশি ডট বল দিলেও যা মার খেয়েছেন, তাতে ডট বলগুলো আর কাজে আসেনি। আসলে বুমরা, কুলদীপের বদলি খুঁজে পাওয়া এই মুহূর্তে অসম্ভব। তাই বিশ্বকাপে এঁদের চাই-ই।

স্কোরকার্ড

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮১-৩ (২০)
ভারত ১৮২-৪ (২০)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ
হোপ ক সুন্দর বো চহাল ২৪ • ২২
হেটমায়ার ক ক্রুণাল বো চহাল ২৬ • ২১
ড্যারেন ব্র্যাভো ন. আ. ৪৩ • ৩৭
দীনেশ রামদিন বো সুন্দর ১৫ • ১৫
নিকোলাস পুরান ন. আ. ৫৩ • ২৫
অতিরিক্ত ২০
মোট ১৮১-৩ (২০)
পতন: ১-৫১ (হোপ, ৬.১), ২-৬২ (হেটমায়ার, ৮.৬), ৩-৯৪ (রামদিন, ১২.৫)।
বোলিং: খলিল আহমেদ ৪-০-৩৭-০, ওয়াশিংটন সুন্দর ৪-০-৩৩-১, ভুবনেশ্বর কুমার ৪-০-৩৯-০, ক্রুণাল পাণ্ড্য ৪-০-৪০-০, যুজবেন্দ্র চহাল ৪-০-২৮-২।

ভারত
ধওয়ন ক পোলার্ড বো অ্যালেন ৯২ • ৬২
রোহিত ক ব্রাথওয়েট বো পল ৪ • ৬
রাহুল ক রামদিন বো থমাস ১৭ • ১০
ঋষভ পন্থ বো পল ৫৮ • ৩৮
মণীশ পাণ্ডে ন.আ ৪ • ৬
দীনেশ কার্তিক ন.আ ০ • ০
অতিরিক্ত ৭
মোট ১৮২-৪ (২০)
পতন: ১-১৩ (রোহিত, ২.২), ২-৪৫ (কে এল রাহুল, ৫.২), ৩-১৭৫ (ঋষভ, ১৮.২), ৪-১৮১ (ধওয়ন, ১৯.৫)।
বোলিং: খ্যারি পিয়ের ২-০-১৩-০, ওশেন থমাস ৪-০-৪৩-১, কিমো পল ৪-০-৩২-২, কার্লোস ব্রাথওয়েট ৪-০-৪১-০, কায়রন পোলার্ড ৩-০-২৯-০, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ৩-০-২৩-১।

৬ উইকেটে জয়ী ভারত
ম্যাচের সেরা শিখর ধওয়ন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE