Advertisement
০৪ মে ২০২৪

তিনে তিন করে একের তাজ, তবু নিষ্কণ্টক নয় প্লে-অফের রাস্তা

স্যাটারডে নাইট উদযাপনে এর চেয়ে বেশি আতসবাজি আর দরকার পড়া উচিত নয়। ঘরের মাঠে কেকেআরের গ্রুপ পর্বের শেষ যুদ্ধ। সেটাও শনিবাসরীয় সন্ধেয়। ‘মেন কোর্সে’ রাসেল-পাঠানের তুলোধোনার পরে আবার ‘ডেজার্টে’ টেনশন। বলতে গেলে প্রায় লাস্ট বল ফিনিশ এবং শেষ পর্যন্ত কেকেআর একে। শনিবাসরীয় সন্ধেয় শহরের আর কী চাওয়ার থাকতে পারত? আপাত-দৃষ্টিতে তো এটাও দেখাচ্ছে যে, প্লে অফ নিষ্কণ্টক। ১২ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট— কেকেআরকে আর হারাবে কে?

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৫ ০৩:২৯
Share: Save:

স্যাটারডে নাইট উদযাপনে এর চেয়ে বেশি আতসবাজি আর দরকার পড়া উচিত নয়। ঘরের মাঠে কেকেআরের গ্রুপ পর্বের শেষ যুদ্ধ। সেটাও শনিবাসরীয় সন্ধেয়। ‘মেন কোর্সে’ রাসেল-পাঠানের তুলোধোনার পরে আবার ‘ডেজার্টে’ টেনশন। বলতে গেলে প্রায় লাস্ট বল ফিনিশ এবং শেষ পর্যন্ত কেকেআর একে। শনিবাসরীয় সন্ধেয় শহরের আর কী চাওয়ার থাকতে পারত? আপাত-দৃষ্টিতে তো এটাও দেখাচ্ছে যে, প্লে অফ নিষ্কণ্টক। ১২ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট— কেকেআরকে আর হারাবে কে?

ঘটনা। শুধু অঘটন এখন হারাতে পারে। এবং পড়ে থাকা দু’টো ম্যাচের একটায় জিতলে তবেই বলা যাবে প্লে অফ কেকেআর নিষ্কণ্টক।

লিগ টেবল বিচার করলে পাঁচ জন প্রতিদ্বন্দ্বী পাওয়া যাচ্ছে যাদের সঙ্গে আগামী একটা সপ্তাহ গৌতম গম্ভীরদের অসিযুদ্ধ চলবে। যে পাঁচ প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম— চেন্নাই সুপার কিঙ্গস, রাজস্থান রয়্যালস, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। পয়েন্ট টেবল ধরলে সবচেয়ে সুবিধেজনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে দুটো টিম। সিএসকে আর আরসিবি। কারণ, কেকেআরের চেয়ে তারা ম্যাচ খেলেছে কম। এবং পয়েন্টেও খুব ফারাক নেই। ছবিটা মোটামুটি এ রকম:

কেকেআর— পড়ে দু’টো ম্যাচ। শেষ দুই প্রতিপক্ষ মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং রাজস্থান রয়্যালস। দু’টোই অ্যাওয়ে ম্যাচ। নাইটদের সর্বোচ্চ পয়েন্ট হতে পারে ১৯।

সিএসকে— পড়ে তিনটে ম্যাচ। এই মুহূর্তে তারা ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্টে। শেষ তিন প্রতিপক্ষ রাজস্থান রয়্যালস, দিল্লি আর কিঙ্গস ইলেভেন। সিএসকের সর্বোচ্চ পয়েন্ট দাঁড়াতে পারে ২০।

রাজস্থান রয়্যালস— পড়ে দু’টো ম্যাচ। প্রতিপক্ষের নাম সিএসকে এবং কেকেআর। এই মুহূর্তে যারা ১২ ম্যাচে ১৪ এবং যাদের সর্বোচ্চ পয়েন্ট দাঁড়াতে পারে ১৮।

আরসিবি— পড়ে আরও চারটে ম্যাচ। প্রতিপক্ষ: মুম্বই, কিংঙ্গস ইলেভেন, হায়দরাবাদ এবং দিল্লি। বিরাট কোহলিদের এই মুহূর্তে পয়েন্ট ১০ ম্যাচে ১১। এবং সর্বোচ্চ পয়েন্ট দাঁড়াতে পারে ১৯।

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স— পড়ে আর তিনটে ম্যাচ। বাকি প্রতিপক্ষ আরসিবি, কেকেআর এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এই মুহূর্তে তারা দাঁড়িয়ে ১১ ম্যাচে ১২ পয়েন্টে। সর্বোচ্চ পয়েন্ট দাঁড়াতে পারে ১৮।

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ— পড়ে আর তিনটে ম্যাচ। আরসিবি, পঞ্জাব আর মুম্বই। দিল্লিকে শনিবার রাতে হারিয়ে ডেভিড ওয়ার্নারদের পয়েন্ট এখন ১১ ম্যাচে ১২। এবং সর্বোচ্চ পয়েন্ট তাদেরও ১৮ হতে পারে।

অর্থাৎ, কেকেআর এখনই প্লে-অফে চলে গেল বলা যাচ্ছে না। ‘অ্যাডভান্টেজ গম্ভীর’ অবশ্যই বলতে হবে। কিন্ত ‘গেম সেট ম্যাচ’ বলার সময় এখনও আসেনি। তবে এটাও ঠিক, ১৪ মে ওয়াংখেড়েতে মুম্বই-বধ ঘটে গেলে তখন বলা যাবে কেকেআর প্লে-অফ খেলছে। আসলে বিজনেস এন্ডে আইপিএল পৌঁছে এমন ভজঘট অবস্থায় টিমগুলোকে ফেলে দিয়েছে যে, এক সপ্তাহ পর কারা সেরা চার হিসেবে টিকে থাকবে, এখনই বলা খুব কঠিন। যে সব টিমকে দুর্বল বলে মনে করা হচ্ছে যেমন পঞ্জাব, দিল্লি, এরাও এক-আধটা ম্যাচ শক্তিশালীদের বিরুদ্ধে জিতে ফেললে অঙ্ক আবার পাল্টাবে। আজ, রবিবার আবার চেন্নাই বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচ। দুটো টিমই ১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে। বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি না হলে কেকেআরকে এক নম্বরের তাজ চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই খুলে রাখতে হচ্ছে।

শনিবাসরীয় আইপিএল পূর্বাভাস যদি করতে হয়, তা হলে বলা যায় লিগ টেবল কোন দিকে চূড়ান্ত ভাবে যাবে তা ঠিক করবে দুটো ম্যাচ। এবং দুটোই আজ। প্রথমে মুম্বই বনাম আরসিবি। রাতে সিএসকে বনাম রাজস্থান। কারণ এরা প্রত্যেকেই প্লে-অফের দাবিদার। আর মুখোমুখি যুদ্ধ হওয়ায় কেউ উঠবে, কেউ হড়কাবে। তবে এই দুটো ম্যাচই যে চূড়ান্ত নির্ণায়ক, সেটা বলা যাবে না। কারণ ওই যে টি-টোয়েন্টির একশো কুড়ি বলের পৃথিবীতে একটা ভগ্নপ্রায় পঞ্জাবকেও যে কোনও দিন পরাক্রমী সিএসকে দেখাতে পারে।

তা হলে গৌতম গম্ভীর কী ভাবছেন? ‘‘আমরা প্লে-অফ নিয়ে ভাবছিই না। কারণ একটা চ্যাম্পিয়ন টিম প্লে-অফ নিয়ে ভাবে না। ভাবে, প্রত্যেকটা ম্যাচ কী ভাবে জিততে হবে, সেটা নিয়ে,’’ গোটা প্রেস কনফারেন্স রুমকে অবাক করে দিয়ে বললেন কেকেআর অধিনায়ক। এখানেই শেয নয়। এটাও তিনি পরিষ্কার করে দিলেন যে, গ্রুপ টেবলের এক হবেন না দুই, সে সবও তাঁর ভাবনার বৃত্তের বাইরে। ‘‘পনেরো পয়েন্ট পাওয়া নিশ্চয়ই খুব সুখকর। কিন্তু আমরা গ্রুপ শীর্ষে কি না, সেটা না ভেবে যত বেশি সম্ভব ম্যাচ জিততে চাই। নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে চাই। আপাতত চারটে দিন বিশ্রাম পাচ্ছি। তার পর মুম্বইয়ে নেমে মুম্বই নিয়ে ভাবব।’’

বোঝা গেল, নাইট অধিনায়কও প্লে-অফ নিয়ে হইহট্টগোল চান না। কিন্তু তাতে সোনালি-বেগুনি সমর্থকদের নিরাশ হওয়ার কারণ নেই। কারণ গৌতম গম্ভীর আরও একটা কথা বলে গেলেন। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন আগামী ২৪ মে ইডেনে টিম নিয়ে ফিরে আসার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE