Advertisement
১১ মে ২০২৪
মুদগল রিপোর্টের শুনানি পিছোল

বম্বে কোর্টের কাঁটার সামনেও অবিচল শ্রীনি শিবির

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন সুপ্রিম কোর্টে সাময়িক অব্যাহতি পেলেন। নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন বম্বে হাইকোর্টে আবার কাঁটার মুখে পড়ছেন। মাঝে শুধু চব্বিশ ঘণ্টার তফাত। আর তাতেই ভারতীয় বোর্ডের অপসারিত প্রেসিডেন্টকে নিয়ে দুই ভিন্নধর্মী ছবি তৈরি হচ্ছে। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট মুদগল কমিশনের পেশ করা রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনও কথা বলল না। দু’পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব শুনে বলে দিল, ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত মামলা মুলতুবি থাকছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫২
Share: Save:

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন সুপ্রিম কোর্টে সাময়িক অব্যাহতি পেলেন।

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন বম্বে হাইকোর্টে আবার কাঁটার মুখে পড়ছেন।

মাঝে শুধু চব্বিশ ঘণ্টার তফাত। আর তাতেই ভারতীয় বোর্ডের অপসারিত প্রেসিডেন্টকে নিয়ে দুই ভিন্নধর্মী ছবি তৈরি হচ্ছে। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট মুদগল কমিশনের পেশ করা রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনও কথা বলল না। দু’পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব শুনে বলে দিল, ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত মামলা মুলতুবি থাকছে। আগামী শুক্রবার আইপিএল স্পট-ফিক্সিং মামলার শুনানি হবে। কিন্তু তখনও জানা যায়নি, চার দিন নয়, মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই শ্রীনির জন্য নতুন কাঁটার খোঁজ পাওয়া যাবে।

ঘটনাটা কী?

শোনা গেল, বম্বে হাইকোর্টে শ্রীনির বিরুদ্ধে দু’টো মামলা তোলা হয়েছিল বিহার ক্রিকেট সংস্থার পক্ষ থেকে। প্রথম হল, তাঁর বিরুদ্ধে স্বার্থসংঘাতের মামলা যে একই ব্যক্তি কী ভাবে বোর্ড প্রেসিডেন্ট এবং চেন্নাই সুপার কিংসের মালিক হতে পারেন। দ্বিতীয়টা হল, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে শ্রীনির বোর্ডের গঠনতন্ত্র পাল্টে দেওয়া। আগে নিয়ম ছিল যে, বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে কাউকে আসতে হলে নির্দিষ্ট টার্ম মেনে নিজের অঞ্চল থেকে আসতে হবে। সেই অঞ্চলের কোনও রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধি হতে হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সেই নিয়ম পাল্টে দেন শ্রীনি। বর্তমান নিয়মানুযায়ী, অন্য অঞ্চল থেকেও প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়া যাবে। তবে তার জন্য এক সংস্থাকে ‘প্রোপোজ’ এবং আর এক সংস্থাকে ‘সেকেন্ড’ করতে হবে। যে নিয়মে আসন্ন বোর্ড নির্বাচনে পূর্বাঞ্চল থেকে পুনর্নির্বাচিত হয়ে আসতে চাইছেন শ্রীনি।

বিহার ক্রিকেট সংস্থার সচিব আদিত্য বর্মা এ দিন রাতে দাবি তুললেন, মঙ্গলবার বম্বে হাইকোর্ট উপরোক্ত মামলার রায় দিয়ে দেবে। সেক্ষেত্রে নাকি শ্রীনির প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুর্ননির্বাচিত হওয়ার রাস্তা বন্ধ হতে পারে। কিন্তু শ্রীনি-শিবির তাতে খুব আশঙ্কার কিছু দেখছে না। বলা হচ্ছে, ভারতীয় বোর্ড তামিলনাড়ুর সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের আওতাভুক্ত। তার গঠনতন্ত্রে বদল নিয়ে বম্বে হাইকোর্টের তাই রায় দেওয়া কঠিন।

সুপ্রিম কোর্টে এ দিন আবার যখন মামলা উঠল, শ্রীনি তখন দেশেই ছিলেন না। আইসিসি-র বৈঠকের জন্য ছিলেন দুবাইয়ে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এ দিন দু’টো ব্যাপার তোলা হয়। এক, শ্রীনিকে নির্বাচন লড়তে দেওয়া যাবে কি না। যেহেতু গুরুনাথ মইয়াপ্পন স্পট-ফিক্সিং কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গিয়েছেন এবং তিনি শ্রীনির জামাই। আর দুই, মুদগল কমিটির রিপোর্ট আমজনতার জন্য খোলাখুলি পেশ করা উচিত কি না। আদালতে শ্রীনির আইনজীবী কপিল সিব্বল আবেদন করেন যে, শ্রীনির বিরুদ্ধে যদি কোনও নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণাদি না থাকে, তা হলে তাঁকে নির্বাচন লড়তে দেওয়া হোক। বিচারপতি টিএস ঠাকুর মইয়াপ্পন-প্রসঙ্গ তুলে পাল্টা প্রশ্ন করলে শ্রীনির আইনজীবী বলে দেন, আত্মীয়ের অপরাধে শ্রীনিকে কী ভাবে নির্বাচন লড়া থেকে আটকানো হতে পারে? দেশের সাধারণ নির্বাচনেও এটা হয় না। বিচারপতি তখন বলেন, বিরোধীপক্ষের আইনজীবীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইপিএল কেলেঙ্কারি যদি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকেন শ্রীনি, তা হলে তাঁরও একটা দায় থাকে।

এ দিন রাত পর্যন্ত যা খবর, শ্রীনি-শিবিরের ‘প্ল্যান অব অ্যাকশনে’ বদল হচ্ছে না। পটৌডি স্মৃতি বক্তৃতা উপলক্ষ্যে আগামী ১২ নভেম্বর শ্রীনির যেমন কলকাতায় আসার কথা ছিল, তেমনই আসছেন। ম্যাচের দিন থাকবেন না, তাঁর মায়ের কাজ থাকায়। ২০ নভেম্বরের বোর্ড নির্বাচন পিছোবে এমন কোনও ইঙ্গিত এখনও নেই। কর্তাদের মধ্যে তোড়জোড় চলছে দু’দিন আগেই চেন্নাই উড়ে যাওয়ার। আরও বলা হল, ২০ নভেম্বর শ্রীনির কাছে ‘ম্যাজিক ডেট’ মনে করার কোনও কারণ নেই।

ম্যাজিক ডেট ১৯ নভেম্বর, দুপুর বারোটা। যে সময়ের মধ্যে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে নিজের মনোনয়ন জমা করবেন। আর মামলার শুনানি যত পিছোয়, যত কাছাকাছি আসে ১৯ নভেম্বরের, লাভ নাকি তত বেশি শ্রীনিবাসনের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE