বৃহস্পতিবার ম্যাচ শুরুর আগে টিভিতে এজবাস্টন গ্যালারির একটা পোস্টার দেখলাম। যাতে লেখা, ‘ইন্ডিয়া’জ নেক্সট স্টেশন ইজ ওভাল’। অর্থাৎ ভারত এর পরে ফাইনালে ওভালে খেলবে।
ভারতীয় সমর্থকরা ম্যাচ শুরুর আগেই বুঝে গিয়েছিলেন, ভারত এই ম্যাচ জিতছে!
অবাক হইনি। ক্রিকেটীয় দক্ষতায় ভারত যে বাংলাদেশের চেয়ে কয়েক হাজার মাইল এগিয়ে, এটা বুঝতে রকেট সায়েন্স পড়তে হয় না। একটু-আধটু ক্রিকেট বুঝলেই এটা ধরে নেওয়া যায়। বাংলাদেশের দেওয়া ২৬৫ রানের টার্গেট প্রায় দশ ওভার বাকি থাকতেই তুলে নিয়ে ভারত ওদের চোখে আঙুল দিয়ে সেটা বুঝিয়েও দিল।
এ বার চলো ওভাল। ওখানেও রবিবার পাকিস্তানের একই হাল হবে বলে আমার বিশ্বাস। ওদের পেসার হাসান আলিকে শুধু একটু বুঝে নিতে হবে। ওই ছেলেটা মাঝের ওভারগুলোয় উইকেট পাচ্ছে। এ ছাড়া পাকিস্তান দলে আর কোনও কঠিন ধাঁধা নেই। বাকিটা স্নায়ুর লড়াই। পাক বোলিং বনাম ভারতীয় ব্যাটিংয়ের যুদ্ধ। যাতে শেষ হাসি ভারতই হাসবে বলে আমার বিশ্বাস। এ দিনের এই ব্যাটিং দেখার পরে কি আর প্রশ্ন আছে? ওপেনিং জুটি স্বপ্নের ফর্মে। রোহিত শর্মা সেঞ্চুরি পেয়ে গেল। আর বিরাট নিজে তো আছেই।
আরও পড়ুন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বিশ্রামে রোহিত, বিভ্রান্তি সেই কুম্বলেকে নিয়ে
বাংলাদেশ ইনিংসে মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবালের পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভাল ছিল। দারুণ ব্যাটিং করেছে ওরা। ভারতের স্ট্রাইক বোলাররাও ওদের জুটি ভাঙতে পারেনি। বৃহস্পতিবার গেমচেঞ্জার কিন্তু একজন পার্টটাইম বোলার। কেদার যাদব। মুম্বইয়ের ক্রিকেটে এদের ‘চোর বোলার’ বলে ডাকা হয়। যে হঠাৎ বল হাতে এসে উইকেট চুরি করে নেয়। কেদারও এ দিন সে রকমই করল। আসলে ওর সাইড আর্ম অ্যাকশনের জন্যই ব্যাটসম্যানরা সমস্যায় পড়ে যায়। মুশফিকুর আর তামিমকে ওই সময় থামাতে না পারলে হয়তো তিনশোর দিকে চলে যেত বাংলাদেশ। তাও অবশ্য জিতত বিরাটরা। যে দল ৪০ ওভারেই ২৬৫ রান তুলে ফেলে, মাত্র এক উইকেট হারিয়ে, তারা পঞ্চাশ ওভারে সাড়ে তিনশো তুলতে পারবে না?
বিরাট কোহালি নামের একজন ব্যাটসম্যান বিপক্ষে থাকলে কোনও রানই যথেষ্ট নয়। এ দিন অসম্ভব স্বচ্ছ একটা ইনিংস খেলল বিরাট। সব রকম ক্রিকেটীয় শটের একটা প্যাকেজ সাজিয়ে দিল। স্ট্রেট ড্রাইভ, টোয়ের উপর ভর করে লেগে শট। মুস্তাফিজুরের একটা বলে শরীরের পুরো ওজনটা সামনের পায়ে এনে যে শটটা মারল, সেটাই দিনের সেরা। বলে বলে অর্থোডক্স শট দেখাল। বিরাটের ইনিংস দেখে মনে হয় ব্যাটিংটা কত সোজা। ওয়ান ডে-তে দ্রুততম আট হাজারটাও এই ম্যাচে তুলে ফেলল ও। এ বার তো মনে হচ্ছে সচিন তেন্ডুলকরকেও ছাড়িয়ে যাবে। এই ম্যাচেই সেই সতর্কবার্তা সচিনকে দিয়ে রাখল বিরাট কোহালি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy