ময়দানে তিন প্রধানের আর্থিক হাল এখন নুন আনতে পান্তা ফুরোয়! আর সেই আবহে গোদের উপর হঠাৎ-ই বিষ ফোঁড়া।
কলকাতা লিগকে এ বার আই এস এল করতে চাইছে আইএফএ এবং লিগের স্পনসররা। আর তাতেই মাথায় হাত ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং মহমেডান কর্তাদের।
আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হলেও মোহনবাগানে স্পনসর নিয়ে ডামাডোল চলছেই। ইস্টবেঙ্গলে স্পনসর থাকলেও আর্থিক সমস্যায় জেরবার। স্পনসরের অভাবে মহমেডান তো ভাল টিমই করতে পারেনি। এই অবস্থায় কলকাতা লিগের সময় ক্লাবগুলোর ঘাড়ে আরও বাড়তি খরচ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে খবর।
বৃহস্পতিবার আইএফএ এবং তার স্পনসরের প্রতিনিধিরা তিন প্রধানের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন মধ্য কলকাতার এক ক্লাবে। সেখানে জানানো হয়, আইএসএলের মতো ঝাঁ-চকচক করে স্টেডিয়াম এবং মাঠ সাজাতে হবে। আটলেটিকো দে কলকাতা যে ভাবে লাখ লাখ টাকা খরচ করে যুবভারতী সাজিয়ে তুলেছিল, সে রকম ভাবেই কলকাতা লিগের জন্য তিন প্রধানকে মাঠ এবং গ্যালারি-সহ বাকি পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। যাতে আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে লিগের ম্যাচের সম্প্রচার। কিন্তু এ সব করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের দরকার, সেই টাকা কোথায় তিন প্রধানের?
মহমেডানের মাঠ-সচিব কামারুদ্দিন তো পরিষ্কার বলে দিলেন, ‘‘টাকার অভাবে আমরা টিমই ঠিক মতো করতে পারছি না। কোথা থেকে এত সব করব?’’ ইস্টবেঙ্গলের কর্তা স্বপন বলও এক মত কামারুদ্দিনের সঙ্গে। বললেন, ‘‘ওঁরা যা চাইছে সব কিছু করা সম্ভব নয়! যতটা সম্ভব করার চেষ্টা করব।’’ ক্লাবগুলোর এই আর্থিক সমস্যার কথা অজানা নয় আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের। তবু তিনি বললেন, ‘‘ক্লাবগুলোর সঙ্গে কথা বলে শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, যতটা সম্ভব পারবে ওরা করে দেবে।’’ তবে সেটা কথার কথা।
এর সঙ্গে অবশ্য তিন প্রধানকে খেলা শুরুর নির্ধারিত সময় নিয়েও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রচারের সময় ধরে খেলা শুরু করতে হবে। এক সেকেন্ডও দেরি করা চলবে না। ম্যাচ শুরুর কুড়ি মিনিট আগে ওয়ার্ম আপ করে মাঠ ছেড়ে দিতে হবে। বিরতির পরও নিদির্ষ্ট সময় মেনে মাঠে নামতে হবে টিমগুলোকে। কিন্তু বৃষ্টিতে তো সব মাঠেরই অবস্থা খারাপ।
কলকাতা লিগ জয়ের জন্য অবশ্য এখন থেকেই অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছেন, দু’প্রধানের দুই বাঙালি কোচ—সঞ্জয় সেন এবং বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। লাল-হলুদ কোচ যখন দক্ষিণ কোরিয়ার ডু ডংয়ের গোল দেখে উচ্ছ্বসিত, তখন মোহনবাগান মাঠে গার্সিয়াকে নিয়ে আলাদা করে অনুশীলনে ডুবে রয়েছেন সঞ্জয়ের জাপানি বোমা কাতসুমি। এ দিকে টিমে শৃঙ্খলা আনতে কড়া মনোভাব নিচ্ছেন বিশ্বজিৎ। নিয়ম ভাঙলেই জরিমানা করা হচ্ছে ফুটবলারদের। বৃহস্পতিবারই যেমন সকালে দেরিতে প্র্যাকটিসে যোগ দেওয়ায় একমাত্র বিদেশি ডং, গুরবিন্দর-সহ মোট ছ’জনকে পাঁচশো টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। প্র্যাকটিসে ঠিক মতো পোশাক না পরে এলে বা হাওয়াই চটি পড়ে মাঠে ঢুকলে দু’শো টাকা করে জরিমানা করা হবে। শাস্তির নিয়মকানুন ফুটবলারদের জানিয়ে দিয়েছেন লাল-হলুদ কোচ।
মেহতাব-সৌমিকদের শনিবার এবং মঙ্গলবার আরও দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা। প্রথমটি গয়েশপুরের সঙ্গে। দ্বিতীয়টি ভবানীপুরের বিরুদ্ধে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্র্যাকটিস হলেও, বিশ্বজিৎকে কিছুটা হলেও চিন্তায় রেখেছে ফুটবলারদের চোট। লালরিন্দিকা রালতে চোটের জন্য কলকাতা লিগে নেই। ডং সবে চোট সারিয়ে মাঠে নেমেছেন। এর মধ্যে আবার রফিকের ডান পায়ের গোড়ালিতে চোট লেগেছে। প্রহ্লাদেরও কুঁচকিতে চোট। মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় আবার কেন লুইসের পাশাপাশি ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশে খেলা আরও কিছু ফুটবলারকে ট্রায়ালে দেখতে চান। আজ শুক্রবার থেকে দু’বেলা অনুশীলন করার কথা শিল্টন পালদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy