জয়ী: জয়ের পর উল্লাস বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। ছবি: তাপস ঘোষ
তৃতীয় ওয়ান ডে-তেও ও পার বাংলার খুদেদের কাছে পরাস্ত হল এ পার বাংলার খুদেরা। রবিবার চন্দননগরে তারা হারল ৫৭ রানে।
পশ্চিমবঙ্গ সফরে আসা বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় ক্রিকেট দল বাঁকুড়া এবং খড়্গপুরে ওয়ান-ডে ম্যাচ জিতেছে। দু’টি তিন দিনের ম্যাচের ফয়সালা হয়নি। রবিবার তৃতীয় ওয়ান-ডে হয় চন্দননগরের শহিদ কানাইলাল ক্রীড়াঙ্গনে (কুঠির মাঠ)। ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচ। সকাল থেকে রোদ উপেক্ষা করে কয়েকশো মানুষ ম্যাচ দেখলেন। শহরের স্কুল এবং ক্রিকেট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ছেলেদেরও দেখা গেল মাঠের ধারে। দু’দলকেই উৎসাহ জুগিয়ে গেলেন দর্শকেরা।
টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করে সিএবি একাদশ। তেড়েফুঁড়ে শুরু করে দীপু রায়চৌধুরীর প্রশিক্ষণে থাকা বাংলাদেশ টিমের প্রথম দুই ব্যাটসম্যান সাজ্জাদ হোসেন মিরাজ এবং তানজিম ফারহান। দশ ওভারের মধ্যেই স্পিনার আনতে হয়। সাফল্যও মেলে। ২০ ওভারের মধ্যেই ৫ উইকেট পড়ে যায়। মাঠ জুড়ে তখন আলোচনা— বাংলাদেশ দেড়শো পেরোবে কিনা!
সেই আলোচনাকে উড়িয়ে দলের অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি এবং মহম্মদ রায়ান শবাব খান পাল্টা আক্রমণে দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেয়। বাঁ হাতি রাব্বি ৭৫ বলে ৮১ রান করে। তার অধিনায়কোচিত ইনিংসে ছিল ৮টি বাউন্ডারি এবং ৪টি ছক্কা। নির্ধারিত ৪৫ ওভার অবশ্য খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪১ ওভার ৫ বলে ২৩৭ রানে তারা অলআউট হয়। বাংলার ছেলেরা জঘন্য ফিল্ডিং এবং একাধিক ক্যাচ মিস না করলে বাংলাদেশের রান অবশ্য দু’শো পেরোত কিনা সন্দেহ! সিএবি-র হয়ে নবনীল সরকার পায় ৩টি উইকেট। চন্দননগরের ছেলে দেবপ্রতিম হালদার, অধিনায়ক তৌফিকউদ্দিন মণ্ডল এবং জয়েশকুমার সিংহ দু’টি করে উইকেট নেয়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে সিএবি-র শুরুটা ভাল হয়নি। দলের ২১ রানের মাথায় ওপেনার তৌফিকউদ্দিন ব্যক্তিগত ১০ রান করে প্যাভিলয়নে ফিরে যায়। বাংলার অনূর্ধ্ব-১৫ দলটির অধিনায়ক চন্দননগরেরই অভিষেক পোড়েল। পায়ের চোটে এই ম্যাচে সে নামতে পারেনি। তার পরিবর্তে দলকে নেতৃত্ব দেয় তৌফিক। দ্বিতীয় উইকেটে সাহিত্য হাজরা এবং রাহুল চৌধুরী দলের রানকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যায়। সাহিত্য অর্ধশতরান করে। তারা আউট হতে চাপে পড়ে যায় বাংলা। পাঁচ নম্বরে নেমে সৌভিক চক্রবর্তী কিছুটা চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সে আউট হতেই দল তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। নির্ধারিত ৪৫ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১৮০ রান তোলে প্রণব রায়ের ছেলেরা। রাব্বি বল হাতে দুই উইকেট নেয়। তিন জন রান আউট হয়।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ কোচ দীপু চন্দননগরের দর্শকের প্রশংসা করেন। মাঠের বাইশ গজের প্রশংসা করতেও ভোলেননি তিনি। দলের সঙ্গে এসেছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫, ১৭ এবং ১৯ দলের নির্বাচক তথা সে দেশের প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটার হান্নান সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘মূলত ছেলেদের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্যই এই সফর। টিমের ছেলেরা যথেষ্ট ভাল ক্রিকেট খেলছে। তবে এই বাংলায় খেলতে এসে মনেই হচ্ছে না বিদেশে খেলছে। সবাই খুব উপভোগ করছে সফর।’’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহরের মেয়র রাম চক্রবর্তী, সিএবি কর্তা রঞ্জিৎ রায়, বাংলা জুনিয়র দলের নির্বাচক সুবীর দে, উদয়ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দননগর স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে চন্দননগর স্পোর্টিং অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা— সকলের মুখেই ছিল ‘দুই বাংলার মৈত্রী’র কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy