ব্রোঞ্জজয়ী বরুণ সিংহ ভারতি সঙ্গে সোনা জয়ী মরিয়াপ্পান। ছবি: এএফপি।
পোলিও কেড়ে নিয়েছিল পা। তখন বরুণের বয়স মাত্র ছয়। পোলিওয় আক্রান্ত বাঁ পা আর ঠিক হয়নি। কিন্তু থেমে যায়নি জীবন। থেমে যায়নি দৌঁড়। তাই হয়ত এক লাফে ছুঁয়ে ফেললেন আকাশ। রিও থেকে দেশকে এনে দিলেন পদক। ২২ বছরের বরুণ সিংহ ভারতি হাই জাম্পে ভারতকে এনে দিয়েছেন ব্রোঞ্জ। প্যারালিম্পিক্সের সাফল্যে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা মানসিক শক্তির কাছে কিছুই না।
গ্রেটার নয়ডার বাড়িতে বসে যখন ছেলের সাফল্যে গর্বিত পরিবার তখন বার বার ফিরে ফিরে আসছিল সেই দিনগুলো যখন একটা খবর বদলে দিয়েছিল আনন্দের পরিবেশটা। বরুণের বাবা হেম সিংহ ভারতি বলেন, ‘‘আমাদের জন্য খুব কঠিন সময় ছিল। বরুণ বাড়ির বড় ছিল। সুস্থ শরীরের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু চার মাস পর আমরা লক্ষ্য করি ওর বাঁ পা স্বাভাবিক নয়। সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সব রকম চেষ্টার পরও বরুণের বাঁ পা ক্রমশ রোগা হতে শুরু করে। এর পর সেই পায়ে অস্ত্রোপচারও করা হয়। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। পরে জানতে পারি বরুণের পোলিও।’’
বরুণের অসুখের খবরে পুরো পরিবারের উপর নেমে আসে হতাশার ছায়া। বরুণকে ভর্তি করানো হয় সেন্ট জোসেফ স্কুলে। স্কুলই বড় ভূমিকা নেয় বরুণের জীবনের। পড়াশোনার বাইরে খেলাধুলোতেও অংশ নিতে শুরু করেন বরুণ। বাস্কেটবল দিয়ে শুরু। এর পর সেই স্কুলেরই স্পোর্টস কোচ তাঁকে হাই জাম্প বেছে নিতে সাহায্য করে। সেই শুরু। আর আজ তা বিশ্বের দরবারে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিল বরুণকে। অঙ্ক নিয়ে বিএসসিও পাস করে ফেলেছেন বরুণ। এই বছরই এশিয়া-ওসেয়ানিয়া চ্যাম্পিয়নশিপেও সোনা জিতেছিলেন। অলিম্পিক্সে পদক জয় ছিল স্বপ্নের মতো। বাকিটা তো গল্পের মতো। একটা সফল জীবনের গল্প। শারীরিক দুর্বলতাকে সঙ্গে করে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যাওয়ার ইতিহাস। যা তাঁর পরবর্তি প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে নিশ্চত।
আরও খবর
রিওয় সোনার লাফ ভারতের ছেলের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy