Advertisement
E-Paper

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইতিহাস গড়ে বিরাট মুখে জয়-ধোনি

যাঁর ব্যাটের দাপটে এল এই ঐতিহাসিক জয়, সেই ‘মিস্টার কুল’ বরাবরের মতোই নিরুত্তাপ। মুখে শুধু সেই চেনা হাসি।

নিজস্ব প্রতিবেদন 

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৯
জয়ের পরে: বিরাট কোহালি। ছবি: রয়টার্স।

জয়ের পরে: বিরাট কোহালি। ছবি: রয়টার্স।

মার্কাস স্টোয়নিসের বল কেদার যাদব মিড উইকেটের উপর দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে চার মারতেই শুক্রবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুরু হল উৎসব। তবে গ্যালারিতে ভারতীয় সমর্থকেরা যতটা উচ্ছ্বসিত, মাঠে বিরাট কোহালির দলের মধ্যে সেই বাঁধভাঙা উল্লাস দেখা গেল না। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইতিহাস গড়েও তাঁরা অপ্রত্যাশিত ভাবে সংযত।

যে অস্ট্রেলিয়া থেকে বারবার ব্যর্থতা নিয়ে ফিরেছে ভারতীয় দল, এ বার সেই অস্ট্রেলিয়ায় পা রেখে টি-টোয়েন্টি (১-১), টেস্ট (২-১) ও ওয়ান ডে (২-১)— সবেতেই সফল বিরাট কোহালিরা। আর কোনও দলই অস্ট্রেলিয়া থেকে এই সাফল্য নিয়ে দেশে ফিরতে পারেনি। সে দেশে ভারতের দ্বিপাক্ষিক ওয়ান ডে সিরিজ জয়ও এই প্রথম। বিশ্বকাপ শুরুর চার মাস আগে যা ভারতকে বেশ খানিকটা এগিয়ে দিল।

যাঁর ব্যাটের দাপটে এল এই ঐতিহাসিক জয়, সেই ‘মিস্টার কুল’ বরাবরের মতোই নিরুত্তাপ। মুখে শুধু সেই চেনা হাসি। এক ঝলকে সারা ক্রিকেটবিশ্বের শ্রদ্ধা আদায় করে নেওয়ার জন্য যা যথেষ্ট। শুক্রবার মেলবোর্নে বিরাট কোহালি ৪৬ রানে আউট হয়ে যান। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ধোনি চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১১৪ বলে যে ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন, সেই ইনিংসই ভারতকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়। কেদার যাদব ৫৭ বলে ৬১ রান করে তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন।

চ্যাম্পিয়ন: ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পরে এ বার ওয়ান ডে সিরিজেও অস্ট্রেলিয়া-বধ কোহালিদের। শুক্রবার মেলবোর্নে জয়ের পরে উল্লাস ভারতীয় দলের। ট্রফি তুলে দেওয়া হল এ দিনই অভিষেক হওয়া বিজয় শঙ্করের হাতে। ছবি: এপি।

ব্যাটিং অর্ডারে ধোনির কোন জায়গায় নামা উচিত, তা নিয়ে নানা জনের নানা মত। তিনি কত নম্বরে ব্যাট করতে নামলে বেশি কার্যকর হয়ে উঠবেন, তা নিয়ে দলের মধ্যেও যেমন একাধিক মত আছে, তেমনই ক্রিকেট মহলেও নিয়মিত চলে বিতর্ক। কিন্তু স্বয়ং ধোনির কোনও নির্দিষ্ট জায়গার চাহিদা নেই। দলের প্রয়োজনে যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে রাজি।

শুক্রবার সিরিজ সেরার পুরস্কার নিতে উঠে এই কথাই জানিয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘‘আমি যে কোনও জায়গাতেই ব্যাট করতে পছন্দ করব। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, দলের আমাকে কোন জায়গায় প্রয়োজন।’’

এই সিরিজে পরপর তিন ম্যাচে যথাক্রমে ৫১, অপরাজিত ৫৫ ও অপরাজিত ৮৭ করার পরে ধোনি এ দিন বলেন, ‘‘চার নম্বরে খেলি বা ছয়, দলের ভারসাম্য ঠিক থাকছে কি না, সেটাই দেখার। ছ’নম্বরে ব্যাট করতেও আমার অসুবিধা নেই। ১৪ বছর ধরে খেলছি বলে কি আর ছ’নম্বরে ব্যাট করতে আপত্তি থাকবে?’’ ধোনি ও কেদার যাদব এ দিন ১২১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে জেতান।

শুক্রবার এই জয়ের পরিকল্পনা নিয়ে ধোনি বলেন, ‘‘উইকেটে তেমন গতি ছিল না। চাইলেই যে কোনও বল মারা যেত না। তাই ভাল বলে পাল্টা আক্রমণ করতে যাইনি। সে জন্যই ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কেদার সত্যিই দারুণ ভাবে সাহায্য করেছে।’’

চার নম্বরে নেমে এ দিন দলকে জেতালেও ধোনিকে পাঁচ নম্বরেই যে বেশি চাইছেন ভারত অধিনায়ক, তা সাংবাদিকদের সাফ জানিয়ে দেন। বিরাটের যুক্তি, ‘‘ধোনির রানে থাকাটা আমাদের কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। রানে থাকলেই একজন ব্যাটসম্যান ছন্দে থাকে, আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়। বিশেষত, সে যখন বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেলে। যে যাই বলুক ভারতীয় ক্রিকেটে সব চেয়ে বেশি নিবেদিত ক্রিকেটার ধোনিই। তাই তাকে নিঃশ্বাস নেওয়ার একটু জায়গা দিতেই হবে। দলের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ক্রিকেটার ও। নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ও যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। ওকে নিয়ে আমরা বেশ খুশি।’’

চার না পাঁচ— ধোনির ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে বিরাট বলছেন, ‘‘২০১৬ সালে ধোনি মাঝে মাঝে চার নম্বরে নেমেছিল। কিন্তু তার পরের থেকে ও পাঁচ বা ছয়ে ব্যাট করেই খুশি। আমাদের মনে হয়, পাঁচ নম্বর জায়গাটাই ওর পক্ষে মানানসই। অ্যাডিলেডে ওকে ব্যাট করতে দেখেছেন নিশ্চয়ই। ওই জায়গাতেই (পাঁচ নম্বরে) ও যথেষ্ট স্বচ্ছন্দ। এতে অনেকটা সময় পায়। আর প্রয়োজনে আক্রমণাত্মক ভাবে ম্যাচ শেষও করতে পারে।’’

অ্যাডিলেডের সেই ইনিংস থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়েই ধোনি শুক্রবার খেললেন বলে মনে করেন বিরাট। এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘হার্দিক পাণ্ড্য দলে না থাকলে তো কোনও ভাবে দলের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে অনেক কিছুই বদলাতে থাকে। তবে অধিনায়ক হিসেবে আমার মনে হয়, ধোনির পাঁচ নম্বরে ব্যাট করাই সব চেয়ে যুক্তিপূর্ণ। সেটাই ওর ঠিক জায়গা।’’ ব্যাটিংয়ে যে চার নম্বর জায়গাটা ঠিক হয়েই গিয়েছে এবং সেখানে যে অম্বাতি রায়ডুকেই ধরে রাখা হয়েছে, তাও এ দিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন বিরাট।

শুক্রবার বিকেল থেকে ধোনির জয়ধ্বনি উপছে পড়ার উপক্রম সোশ্যাল মিডিয়ায়। মুগ্ধ সচিন তেন্ডুলকর, বীরেন্দ্র সহবাগ, হরভজন সিংহ, মাইকেল ভনরা সকলেই ধোনির প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

Cricket Virat Kohli MS Dhoni Cricketer India Vs Australia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy