Advertisement
E-Paper

কোহালিদের জয়ের মধ্যেও চর্চায় উইকেট

মাইকেল হোল্ডিংয়ের কথা শুনে মনে হল, তিনিও এমন নাটকীয় রূপ পরিবর্তন আশা করেননি। যদিও ভারতীয় পেসাররা ভুল লেংথে বল করছেন বলেও মনে করেন হোল্ডিং।

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০২
ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিয়ে ভুবনেশ্বর কুমার। ছবি: এপি

ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিয়ে ভুবনেশ্বর কুমার। ছবি: এপি

ওয়ান্ডারার্সে যে পিচ মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই বিপজ্জনক আখ্যা পেয়েছিল, তা-ই কী করে রাতারাতি উন্নত হয়ে উঠল? যে পিচে খেলা চালানো উচিত কি না, তা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল, সেখানে শনিবার লাঞ্চ পর্যন্ত একটাও উইকেট পড়ল না কী ভাবে? বিস্মিত হওয়ার মতোই ঘটনা মনে হচ্ছে সকলের কাছে।

শন পোলক যেমন বলে গেলেন, ‘‘সত্যি কে ভাবতে পেরেছিল, এমনটা হতে পারে?’’ অবাক সুনীল গাওস্কর-ও। নিজের খেলার জীবনে এ রকম এক বার দেখেছিলেন। প্রথম থেকে বল টার্ন করা পিচ হঠাৎ শেষের দিকে গিয়ে বিস্ময়কর ভাবে ব্যাটিং-সহায়ক হয়ে গিয়েছিল। ডিন এলগার এবং হাসিম আমলা যখন নিশ্চিন্ত মনে ভারতীয় পেসারদের খেলে দিচ্ছেন, গাওস্কর কমেন্ট্রিতে বলেন, ‘‘পিচটা ঘুমিয়ে পড়ল কী ভাবে কে জানে!’’

মাইকেল হোল্ডিংয়ের কথা শুনে মনে হল, তিনিও এমন নাটকীয় রূপ পরিবর্তন আশা করেননি। যদিও ভারতীয় পেসাররা ভুল লেংথে বল করছেন বলেও মনে করেন হোল্ডিং। বললেন, ‘‘শুরুতে নতুন বল হাতে নিয়ে অত শর্ট বল কেউ করে?’’ প্রশ্ন আর বিস্ময় কিন্তু তাতেও যাচ্ছে না।

ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্‌ট শুক্রবার ম্যাচ স্থগিত হওয়ার পরে দুই অধিনায়ককে ডেকে বলেছিলেন, খেলা শুরু হলেও বিপজ্জনক কিছু দেখলেই টেস্ট ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাঁর এই বক্তব্যের পরে শনিবারের প্রথম দু’ঘণ্টায় যা দেখা গিয়েছে, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। ভারতীয় শিবিরে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, ম্যাচ রেফারি তা হলে কী ভাবে আগের দিন খেলা বন্ধ করে দিলেন? একই ডিন এলগার তো সকালে এসে দিব্যি ব্যাট করছিলেন।

ভারতীয় শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শনিবার সকালে ম্যাচ শুরুর আগে পিচ দেখতে গিয়ে কেউ কেউ চমকে উঠেছিলেন। পিচে অনেকটা ভিজে ভাব ছিল। রাতে বৃষ্টি হলেও বাইশ গজ ঢাকা থাকে। ভেজার কোনও প্রশ্ন নেই। তা হলে কি কেউ জল দিয়ে রোল করেছিল? ভারতীয় শিবিরে কেউ কেউ সকালে পিচ দেখার পরে এমন প্রশ্ন নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা না করে পারেননি।

শোনা যাচ্ছে, ভারতীয় দলের কোচ রবি শাস্ত্রী নাকি ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্‌টের সঙ্গে গিয়ে কথাও বলেন এ নিয়ে। জয়ের উৎসবের মধ্যে এই খবরের সত্যতা যাচাই করা যায়নি যে হেতু শাস্ত্রীকে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী, টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন প্রত্যেক দিন সকালে ঘাস ছাঁটা হয়। সেটা একটা নির্দিষ্ট মাপ মতো। রোলার কী রকম ব্যবহার করা হবে সেটা ব্যাটিং টিমের হাতে। সাধারণ মত হচ্ছে, চতুর্থ বা পঞ্চম দিনের পিচে ভারী রোলার না নেওয়া। কারণ, ভারী রোলার নিলে পিচ আরও দ্রুত ভেঙে যেতে পারে। কিন্তু শনিবার দক্ষিণ আফ্রিকা টিম ভারী রোলারই চালিয়েছে পিচে।

সেই রোলার যখন চলছে, বিস্মিত চোখমুখ নিয়ে কয়েক জন ভারতীয় ক্রিকেটার তা দেখতে ছুটে যান। দেখা গেল জয়ের আবহেও সেই বিস্ময় অনেকের কাটেনি। সকালে পিচ-নাটক চলার সময়ে উপস্থিত ক্রিকেটাররা তখনও জানেন না, কেন ভারী রোলার চলল? ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যা হচ্ছে, ভারী রোলার তখনই চালানো সম্ভব যদি পিচে ভাল করে জল দেওয়া হয়। জল দিয়ে ভারী রোলার চালানো মানে পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য অনেক ভাল হয়ে যায়।

শেষ দিনে চোট-আঘাতের পরিমাণ অনেক কম হলেও ওয়ান্ডারার্সের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারে। ম্যাচ রেফারি খেলা থামিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন মানে আইসিসি-কে এই পিচ নিয়ে পদক্ষেপ করতেই হবে। বারো মাস থেকে দু’বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিতও হতে পারে ওয়ান্ডারার্স। রক্ষা পেলে শেষ দিনে টেস্ট ম্যাচ হওয়ার জন্য রক্ষা পাবে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্রিকেট রীতি হচ্ছে, সিরিজ শেষে অতিথি দেশকে ডাকা হয় তাদের ড্রেসিংরুমে। সিরিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভুলে দু’দলের ক্রিকেটারেরা একসঙ্গে পানীয়ের আড্ডায় বসেন। শনিবার দেখা গেল, ভার্নন ফিল্যান্ডার, কাগিসো রাবাডা-রা এলেন কোহালিদের ড্রেসিংরুমে। সেটা দেখে আবার মনে হল, বাউন্সার আর পাল্টা বাউন্সারে অগ্নিগর্ভ সিরিজের শেষটা অন্তত ক্রিকেটীয় সৌজন্য বিনিময়ের মাধ্যমেই হল।

Bhuvneshwar Kumar Wanderers Wanderers Test India vs South Africa Cricket
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy