দর্শক রোনাল্ডো। মঙ্গলবার মাঠে নামতে পারলেন না। -এএফপি
কানে হেডসেট। পায়ে সিআর সেভেন ব্র্যান্ডের জুতো। গায়ে রিয়াল মাদ্রিদের জ্যাকেট। জুনিয়রদের সঙ্গে সেল্ফিও তুললেন। আর প্রতি মিনিটেই টিভিতে তাঁর মুখ দেখে মনে হচ্ছিল— ইস আমি যদি ওর জায়গায় থাকতাম গোলটা হয়ে যেত। চোট পাওয়া ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ফুটবল জীবনের একটা রাত। যে রাতে তাঁকে থাকলে হল রিজার্ভ বেঞ্চেই।
মঙ্গল রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে ম্যাঞ্চেস্টার সিটি বনাম রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচটার ইউএসপি ছিল রোনাল্ডোর ম্যাঞ্চেস্টারে ফেরা। কিন্তু শেষ মিনিটের ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ না করতে পেরে রিজার্ভ বেঞ্চেই ঠাই নিতে হয় তাঁকে। টুইটারে তখন ট্রেন্ড হচ্ছে, রোনাল্ডোকে ছাড়া রিয়াল তো আর্নল্ড ছাড়া টার্মিনেটরের মতো। খেলাটাও তো ঠিক তাই হল। গোল করা তো দূরে থাক। সুযোগই তৈরি করতে পারল না রিয়াল মাদ্রিদ। ফলাফল গোলশূণ্য ড্র। অ্যাওয়ে গোল না নিয়ে ম্যাঞ্চেস্টার ছাড়তে হল রিয়ালকে। অসহায় রোনাল্ডো বেঞ্চে বসেই দলকে উদ্দীপ্ত করার চেষ্টায় ছিলেন। কখনও উঠে দাঁড়িয়ে কোচের মতো ফুটবলারদের উদ্দেশে চেঁচাচ্ছেন। কখনও বা সহজ সুযোগ নষ্ট হতে দেখে মাথায় হাত। মুখ দেখে মনে হচ্ছিল বুট পরে নামলে পেপে যে সুযোগ শেষে নষ্ট করলেন, তিনি জীবনেও করতেন না।
মেসি না থাকলে বার্সেলোনার সুয়ারেজ আছে। রুনি না থাকলে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মার্শাল আছে। কিন্তু রোনাল্ডো না থাকলে রিয়ালের আছে কে? গ্যারেথ বেল। যিনি এখনও এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোনও গোল করতে পারেননি। করিম বেঞ্জিমা। যিনি দিনের দিনে দারুণ। অথচ স্ট্রাইকার হয়েও গোলসংখ্যায় রোনাল্ডোর ধারে কাছে নেই। মঙ্গলবার রাতে মাঝে মাঝে সিআর সেভেনের মুখ দেখে মনে হল, ডার্ক নাইট রাইজেসের সেই ব্যাটম্যান। যে বেনের হাতে মার খেয়ে চোখের সামনে তাঁর গোথাম সিটিকে পুড়তে দেখেও কিছু করতে পারছিলেন না। ঠিক সে রকম রিয়ালকে চোখের সামনে গোলের পর গোল নষ্ট করতে দেখা রোনাল্ডোর অবস্থা ছিল ব্যাটম্যানের মতোই।
সত্যিই কি রিয়াল তা হলে ওয়ান ম্যান টিম? অন্তত পরিসংখ্যান তো তাই বলছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখনও ১৬ গোল। লা লিগাতেও রিয়ালের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। তা হলে রোনাল্ডোকে কোন সাহসে কটাক্ষ করেন রিয়াল সমর্থকরা। প্যারিস সাঁ জাঁয় রোনাল্ডো যদি মরসুম শেষে যান তাঁর পরিবর্ত কে বা হবে? এডেন হ্যাজার্ড। হাস্যকর।
এ তো গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কথা। ইপিএলের অবস্থা এখন যা দাঁড়িয়েছে তাতে ‘থিয়েটার অব ড্রিমস’ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেই হয়তো প্রিমিয়ার লিগের সবথেকে বড় স্বপ্নপূরণ হতে পারে। টটেনহ্যাম ১-১ ড্র করায় রবিবার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে হারাতে পারলেই ইপিএল চ্যাম্পিয়ন লেস্টার।
তবে ম্যান অব দ্য উইক উরুগুয়ের সেই বিতর্কিত স্ট্রাইকার যাঁর দু’ম্যাচে আট গোলের সৌজন্যে বার্সেলোনা ফের বিধ্বংসী মেজাজে। তিনি— লুইস সুয়ারেজ।
ম্যান অব দ্য উইক: লুইস সুয়ারেজ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy