Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাঞ্জুকিচের গোলে কাপের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল ইংল্যান্ডের

৫২ বছর আগে ইংল্যান্ডের প্রথম বার বিশ্বকাপ জয়ের সময় আমি খুব ছোট ছিলাম। তাই বাড়ির কাছে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ফাইনাল দেখতে আমাকে নিয়ে যাননি বাবা।

ইতিহাস: ক্রোয়েশিয়ার জোড়া গোল। ৬৮ মিনিটে সমতা ফেরালেন পেরিসিচ। ছবি: রয়টার্স

ইতিহাস: ক্রোয়েশিয়ার জোড়া গোল। ৬৮ মিনিটে সমতা ফেরালেন পেরিসিচ। ছবি: রয়টার্স

ট্রেভর জেমস মর্গ্যান
শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৪:২১
Share: Save:

বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখতে মস্কো যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। ভাবতেই পারিনি, বুধবার ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে হেরে বিশ্বকাপ থেকেই বিদায় নেবে ইংল্যান্ড।

৫২ বছর আগে ইংল্যান্ডের প্রথম বার বিশ্বকাপ জয়ের সময় আমি খুব ছোট ছিলাম। তাই বাড়ির কাছে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ফাইনাল দেখতে আমাকে নিয়ে যাননি বাবা। সে দিন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম মাঠে বসে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের সাক্ষী থাকার। এ বারই সেরা সুযোগ ছিল বিশ্বসেরা হওয়ার। কিন্তু সব ভেস্তে গেল। এক গোলে এগিয়ে গিয়েও হেরে মাঠ ছাড়লেন হ্যারি কেনরা।

অথচ মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বুধবার ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল ইংল্যান্ড। পাঁচ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি বক্সের সামনে ডেলে আলিকে ফাউল করেন ক্রোয়েশিয়া অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ। মনে হচ্ছিল, ডেভিড বেকহ্যাম যদি এখনও খেলতেন, তা হলে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দিতে পারতেন। তাই কিয়েরান ট্রিপিয়ার ফ্রি-কিক নিতে এগিয়ে যাওয়ার পরেও খুব একটা আশাবাদী ছিলাম না। আমার ভুল ভেঙে দিলেন ইংল্যান্ডের ২৭ বছর বয়সি ডিফেন্ডার। ডান পায়ের অনবদ্য বাঁক খাওয়ানো শটে বল জালে জড়িয়ে দিলেন। গোলটা দেখেই মনে হচ্ছিল, বেকহ্যাম কি ফিরে এলেন ইংল্যান্ড দলে?

আরও পড়ুন: এমবাপে এক আতঙ্কের নাম, মত রিয়ো ফার্ডিনান্ডের

ইংল্যান্ড এগিয়ে যাওয়ার পরে ভাবিনি ৬৮ মিনিটে ম্যাচের রং বদলে দেবেন ক্রোয়েশিয়ার ইভান পেরিসিচ। এই গোলটাও অসাধারণ। যে ভাবে কাইল ওয়াকারের মাথার উপর দিয়ে পা নিয়ে গিয়ে বল জালে ঠেললেন, মনে হল যেন ব্রুস লি!

বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ফয়সালা হল ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে মারিয়ো মাঞ্জুকিচের গোলে। বুধবার মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে। রবিবার মদ্রিচদের সামনে ফ্রান্স।

এ দিন ৩-৫-২ ছকেই দল সাজিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। কিন্তু সামান্য পরিবর্তন করেছিলেন রণনীতিতে। আগের ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলেছিলেন রাহিম স্টার্লিংরা। বুধবার কিন্তু খেলার গতি কমিয়ে দিয়েছিলেন হ্যারি কেনরা। হয়তো প্রচণ্ড গতিতে খেলতে অভ্যস্ত ক্রোয়েশিয়ার ছন্দ নষ্ট করে দেওয়াই ছিল প্রধান লক্ষ্য। প্রথমার্ধে পরিকল্পনা সফল সাউথগেটের। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেন ক্রোটরা। নেপথ্যে পেরিসিচ।

প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ও কোয়ার্টার ফাইনাল টাইব্রেকারে জিতেছিল ক্রোয়েশিয়া। মনে হচ্ছিল, এটাই ওদের রণনীতি। কারণ, গোলকিপার দানিয়েল সুবাসিচ অবিশ্বাস্য ফর্মে। এ দিন আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিলেন ক্রোয়েশিয়া কোচ জ্লাটকো দালিচ। অতিরিক্ত সময়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলেন ক্রোটরা। ১০৯ মিনিটে গোল করলেন মারিয়ো মাঞ্জুকিচ। এর নেপথ্যেও পেরিসিচ। ট্রিপিয়ার মাথার উপর দিয়ে হেড করে তিনি পাস দেন মাঞ্জুকিচকে। ঠান্ডা মাথায় গোল করে ইংল্যান্ডের স্বপ্নভঙ্গ করলেন মাঞ্জুকিচ। প্রথম বারের জন্য বিশ্বকাপ ফাইনালে গেল ক্রোয়েশিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE