শিলিগুড়িতে ডার্বির প্রসঙ্গ উঠলে বা ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা তৈরি হলেই ফেলে আসা দিনের কথা মনে পড়ে। শিলিগুড়ির শক্তিগড়ে আমাদের বাড়ি। পাড়াতেও তখন ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা ছিল। আমি এক সময় বাঘা যতীন ক্লাবে নিয়মিত গোলরক্ষক হিসাবে খেলতাম। খেলেছি মহানন্দা ক্লাবেও। আইলিগের ডার্বি নিয়ে এই উন্মাদনা দেখে ভাল লাগে। আমি কিন্তু আগাগোড়া লাল-হলুদের সমর্থক। শুধু গ্যালারিতে বসে গলা ফাটানোই নয়, তাদের বিরুদ্ধেও খেলেছি।
আইলিগের ডার্বির মতো ম্যাচ না হলেও তখন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের সঙ্গে প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ খেলা হতো শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ি একাদশ বা উত্তরবঙ্গ একাদশ গড়ে। সেই দলে গোলকিপার থাকতাম। লালহলুদ শিবিরে তখন শ্যাম থাপা, হাবিব আকবর, গৌতম সরকারের মতো ফুটবলাররা খেলছেন। তাঁদের বিপক্ষে আমি গোলরক্ষক। আবার মোহনবাগানের সঙ্গে প্রদর্শনী ম্যাচে খেলতে হয়েছে সুব্রত ভট্টাচার্য, বিদেশ বসুর মতো ফুটবলারদের বিরুদ্ধে। তাই ওয়েডসন, কাতসুমি, সনি নর্ডিদের নিয়ে এই শহর উচ্ছ্বাসে ভাসলে তাতে সামিল হতে ইচ্ছে তো করেই।
ফুটবল নিয়ে উৎসাহী ছিল ঋদ্ধিমানও। তিন চার বছর বয়সে রাত জেগে টিভির সামনে বসে বিশ্বকাপ দেখত। শক্তিগড় শৈলেন্দ্র স্মৃতি পাঠাগারের কোচিং সেন্টারের ক্রিকেট খেলত ঋদ্ধিমান, মানে পাপালি। শক্তিগড় কোচিংয়ের সঙ্গে এক বার স্থানীয় আরেকটি দলের খেলা ছিল। উইকেট কিপার সে দিন আসেনি। তার জায়গায় পাপালিকে উইকেট কিপিং করতে বলি। ও চাইছিল না। কী করে কিপিং করতে হবে দেখিয়ে দিলাম। এক সময় অগ্রগামী ক্লাবে নিয়মিত ক্রিকেটও খেলতাম আমি। সে সময় সঙ্গে যেত পাপালি। পরে সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে ও। তখন অগ্রগামীর ফুটবল দলেও ও খেলত। মাঠে পাপালিকে তো অনেকে কৃশানু বলেও ডাকত। বাঁ পায়ে বল নিয়ে ও ডজ করত। এ বারের এই ডার্বি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা জিতবে আইলিগের শীর্ষে যাওয়ার পথে তারাই এগোবে। এ ধরনের ম্যাচে শহরের ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা বাড়ছে। তবে পরিকাঠামো উন্নত হলে ভবিষ্যতে আরও ম্যাচ করাতে তা সহায়ক হবে। ইচ্ছে রয়েছে মাঠে গিয়ে খেলা দেখব।
লেখক ঋদ্ধিমান সাহার বাবা