Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ধোনির দেখানো পথে হাঁটতে চান ঋদ্ধিমান

সাদা পোশাকে স্টাম্পের পিছনে আর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নন। এ বার তাঁর জায়গায় শিলিগুড়ির পাপালি। বাংলার ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতীয় দলের টেস্ট ম্যাচে কিপিং গ্লাভস হাতে এখন থেকে হয়তো এই বঙ্গসন্তানকেই দেখা যাবে নিয়মিত। নিজেকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির জায়গায় দাঁড় করাতে যিনি তাঁর কাছ থেকেই পরামর্শ নিয়েছেন। আর তাঁর দেখানো রাস্তায় হেঁটেই নিজেকে ধোনির উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছেন ঋদ্ধি।

রবিবার ইডেনে ঋদ্ধিমানের ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস।

রবিবার ইডেনে ঋদ্ধিমানের ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস।

রাজীব ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৫ ০৩:৩৫
Share: Save:

সাদা পোশাকে স্টাম্পের পিছনে আর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নন। এ বার তাঁর জায়গায় শিলিগুড়ির পাপালি। বাংলার ঋদ্ধিমান সাহা।

ভারতীয় দলের টেস্ট ম্যাচে কিপিং গ্লাভস হাতে এখন থেকে হয়তো এই বঙ্গসন্তানকেই দেখা যাবে নিয়মিত।

নিজেকে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির জায়গায় দাঁড় করাতে যিনি তাঁর কাছ থেকেই পরামর্শ নিয়েছেন। আর তাঁর দেখানো রাস্তায় হেঁটেই নিজেকে ধোনির উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছেন ঋদ্ধি।

রবিবার ইডেনে থ্রো ডাউন নিতে গিয়ে শুরুতেই বুকের উপর দিকে আঘাত পেলেন এই বঙ্গ কিপার। সন্ধেয় অবশ্য বললেন, ‘‘তেমন গুরুতর আঘাত লাগেনি। ঠিকই আছি। চিন্তার কিছু নেই।’’

কিপিং গ্লাভস হাতে ‘পার্মানেন্ট পোস্ট’-এ কাজ শুরু করে দিয়েছেন গত বছর অস্ট্রেলিয়াতেই। টেস্ট থেকে ধোনির অবসর ঘোষণার পরই। এ বার নিজেকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যেখানে যাচ্ছেন, সেই বাংলাদেশে রওনা হওয়ার আগে রবিবার নিজেই জানালেন এই কথা। বললেন, ‘‘টিমের সঙ্গে তো অনেক দিন আছি। ধোনি যখন ছিল, তখন ওর সঙ্গেও দলে ছিলাম। ও কী ভাবে নিজেকে তৈরি রাখত, তা নিয়মিত অনুসরণ করেছি। কী ভাবে কোন বল কিপ করত তাও লক্ষ্য করেছি বরাবর। কিপিং, ব্যাটিং নিয়ে ওর সঙ্গে কথাও হয়েছে অনেক বার। সেগুলোই এ বার কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। ওর পথেই চলতে চাই আমি।’’

অস্ট্রেলিয়ায় ধোনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণার পর এ বার তাঁর সামনেই টেস্ট ক্রিকেটের রাস্তা খোলা। সঞ্জু স্যামসন, দীনেশ কার্তিক, নমন ওঝারা তাঁর প্রতিদ্বন্দী হলেও তাঁরা ঋদ্ধির চেয়ে অনেক পিছনে পড়ে রয়েছেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলার প্রাক্তন উইকেটকিপার, যিনি ভারতীয় দলের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত সুযোগ পাননি, সেই সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, ঋদ্ধি ধর্মতলায় থাকলে, বাকিরা এখনও রাসবিহারির মোড়ে পড়ে আছে! ‘‘আমার তো বিশ্বাস ও ধোনির চেয়েও ভাল কিপার। ফিটনেসেও ও দলের সেরা তিনে থাকবে। এখন বড় রান পাওয়া দরকার শুধু,’’ বলছিলেন সম্বরণ। বড় রানের ইনিংস নিয়ে অবশ্য নিজেকে চাপে ফেলতে রাজি নন ঋদ্ধি। মনে করেন, সুযোগ পেতে থাকলে বড় ইনিংস আপনিই আসবে। বলছিলেন, ‘‘ভারতের হয়ে যত বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাব, তত আত্মবিশ্বাস বাড়বে ও পারফরম্যান্সও ভাল হবে। নিজেকে এই নিয়ে অযথা চাপে ফেলতে চাই না। রঞ্জি ট্রফিতে, ঘরোয়া ক্রিকেটে যে অ্যাপ্রোচ নিয়ে ব্যাটিং করি, বাংলাদেশে টেস্টেও তেমনই ব্যাটিং করার চেষ্টা করব। তার পর দেখা যাবে।’’

ব্যক্তিগত কাজে দুবাইয়ে যাওয়া সম্বরণ এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘শুধু আমি নই, সৈয়দ কিরমানি, নয়ন মোঙ্গিয়া, কিরণ মোরের মতো কিপাররাও এখন বলছে, ঋদ্ধিই সেরা। বিরাট কোহলিও তো বলেছে, আগামী চার-পাঁচ বছর ওরই টেস্ট দলের কিপার থাকা উচিত।’’ মাস খানেক আগে প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান উইকেটকিপার স্টিভ রিক্সনও বলে দিয়েছেন, ‘‘ধোনির পর ভারতীয় দলের উইকেটকিপারের জায়গায় ঋদ্ধিমানই সেরা বাছাই। ওর কিপিংটা খুব ভাল। ওকে সুযোগ দেওয়া উচিত। ব্যাটটাও তো ভাল করে।’’ আইপিএলের সময়ই কোহলি ঋদ্ধির প্রশংসা করে বলেছিলেন, ‘‘এত দিন শুধু ধোনির পরিবর্ত হিসেবে খেলেছে সাহা। এ বার ওর পাকাপাকি জায়গা পাওয়ার সময় এসে গিয়েছে। ৩০-এ ও যা ফিট আর যা পরিশ্রম করে, তাতে আগামী ৫-৬ বছর এই জায়গাটা ওরই প্রাপ্য।’’ কোহলির এই মন্তব্যে আরও বেশি উজ্জীবিত ঋদ্ধি অবশ্য গত দু’দিনে তাঁর ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে তেমন কোনও ‘পেপ টক’ পাননি। বললেন, ‘‘না, আলাদা করে তেমন কিছু বলেনি বিরাট। হয়তো ওখানে গিয়ে কথা হবে।’’

বাংলাদেশের পরিবেশে খেলা মানে ঘরের মাঠের মতোই। এই ব্যাপারটা যে তাঁকে বাংলাদেশে বাড়তি অক্সিজেন দেবে, তা স্বীকার করে নিয়েই জানালেন, ‘‘ছোট থেকে কলকাতাতেই খেলছি। বাংলাদেশের সঙ্গে এখানকার পরিবেশের তেমন তফাত নেই। উইকেটও হয়তো প্রায় একই রকম হবে। এতে আমার সুবিধা হবে বলেই মনে হয়। বাকিটা ওখানে গিয়ে প্র্যাকটিস করে ঠিক করে নেওয়া যাবে।’’ কথাগুলো বলার সময় ঋদ্ধিমান সাহার চোখমুখ বেশ স্বাভাবিক, ভাবলেশহীন। যেমনটা দেখা যায় আর একজনের অভিব্যক্তিতে।

মহেন্দ্র সিংহ ধোনির অভিব্যক্তিতে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE