Advertisement
E-Paper

কৌশল পাল্টে রানে ফিরলেন যুবরাজ সিংহ

টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়ে পাকিস্তান কখনওই চাপে রাখতে পারেনি ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। প্রথম দিকে একটু স্লো ব্যাট করলেও পরের দিকে কিন্তু দ্রুত রান তুলতে থাকেন রোহিত-ধবনরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ০৪:২৪
বিধ্বংসী: যুবরাজের শাসন। রবিবার করলেন ৩২ বলে ৫৩। ছবি: গেটি ইমেজেস

বিধ্বংসী: যুবরাজের শাসন। রবিবার করলেন ৩২ বলে ৫৩। ছবি: গেটি ইমেজেস

পাকিস্তানি পেসারদের ইয়র্কার সামলাতে ব্যাটিংয়ের কৌশলটা একটু বদলে নিয়েছিলেন তিনি। অফস্টাম্পের বাইরে গার্ড নিচ্ছিলেন। আর এই কৌশলই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে সাফল্য এনে দিল যুবরাজ সিংহকে।

চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৩২ বলে ৫৩ রান করে যান যুবরাজ। মারেন আটটা চার, একটা ছয়। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ভারত তোলে ৪৮ ওভারে ৩১৯-৩। যার পরে বেশ কয়েক বার ম্যাচ বন্ধ থাকায় ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ২৮৯ রান। পাকিস্তান অবশ্য ১৬৪ রানেই অল আউট হয়ে যায়, ৩৩.৪ ওভারে।

দুরন্ত ইনিংস খেলে উঠে ম্যাচের পর টিভি-তে যুবরাজ বলছিলেন, ‘‘আমাদের অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা সবাই ভাল ব্যাট করল বলেই আমিও তাদের সাপোর্ট নিয়ে আক্রমণে যাওয়ার সুযোগটা পেলাম। জানতাম ওরা অফস্টাম্পের বাইরে ইয়র্কার করবে। সেই মতো আমি গার্ড নিই। আমি ঠিক করে নিয়েছিলাম, আমার জোনে বল পড়লেই আমি মারব। সেটাই হল।’’ এ দিন শুধু যুবির নয়, ভারতের পুরো ব্যাটিং-প্ল্যানই খেটে যায়। হাফসেঞ্চুরি করে যান রোহিত (৯১), ধবন (৬৮), বিরাট কোহালিও (৮১ ন.আ.)।

যুবরাজের ইনিংসের গুরুত্বের কথা বলছিলেন ভিভিএস লক্ষ্মণও। তাঁর কথায়, ‘‘বিরাট প্রথম দিকে ছন্দ পাচ্ছিল না। কিন্তু যুবরাজ ও রকম একটা ইনিংস খেলায় ওর কাজটা সহজ হয়ে যায়। বিরাট ছন্দে ফিরে আসার সময়টা পেল।’’

এজবাস্টনের উইকেট যে সাহায্য করেছে ব্যাটসম্যানদের, যুবরাজ তা স্বীকারই করে নেন। বলেন, ‘‘এই পিচে স্ট্রোক খেলা যাচ্ছিল। বল ভাল আসছিল ব্যাটে। আমার দিনটাও আজ ভাল ছিল। মাঠে নেমে বেশ ভাল লাগছিল। বড় ইনিংসের পক্ষে এটা খুব দরকার। ভাগ্য ভাল যে, শুরুতে আমার ক্যাচটা পড়ে যায়। ওই জায়গা থেকে ইনিংসটা ভাল শেষ করতে পারলাম।’’

আরও পড়ুন: ভারতের হয়ে প্রথম চার ব্যাটসম্যানেরই হাফ সেঞ্চুরি

টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়ে পাকিস্তান কখনওই চাপে রাখতে পারেনি ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। প্রথম দিকে একটু স্লো ব্যাট করলেও পরের দিকে কিন্তু দ্রুত রান তুলতে থাকেন রোহিত-ধবনরা। ম্যাচের আগে পিচ রিপোর্ট করতে গিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘এই পিচে ঘাস নেই। বরং দেখে মনে হচ্ছে, উইকেটে রান আছে।’’ দেখা গেল, সৌরভের ভবিষ্যদ্বাণী ভুল হয়নি।

কিন্তু এমন উইকেটেও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে পারেননি। ওপেনার আজহার আলি শুধু ৫০ রান করেন। বাকিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান আসে মহম্মদ হাফিজের ব্যাট থেকে। তাও ৩৩। পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ খান ম্যাচ শেষে টিভিতে স্বীকার করেই নিলেন, ‘‘ফিল্ডিং আমাদের খুব খারাপ হয়েছে। ৪০ ওভার পর্যন্ত সব কিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল। কিন্তু তার পরই সব গোলমাল হয়ে যায়। ওরা শেষ আট ওভারে একশোরও ওপর রান তুলে ম্যাচ আমাদের হাত থেকে বার করে নেয়।’’ এই শেষ আট ওভারে ভারত ১০৬ রান তোলে। পাক অধিনায়ক বলেন, ‘‘শেষ আট ওভারে ওদের ব্যাটিংয়েই আমরা ছন্দ হারিয়ে ফেলি।’’

ভারতের কাছে পাকিস্তানের এই আত্মসমর্পণ স্বাভাবিক ভাবেই তাদের দেশের ক্রিকেট মহলে ঝড় তুলতে চলেছে। যার সূচনা রবিবার রাত থেকেই শুরু হয়ে গেল এই হার দেখার পর পাক ক্রিকেটের কিংবদন্তি ও বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক ইমরান খান টুইট করেন, ‘‘পাকিস্তান ক্রিকেটের পরিকাঠামোয় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। না হলে দেশে ক্রিকেট হাজার হাজার প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও ভারতের সঙ্গে ফারাকটা থেকেই যাবে।’’

অন্য দিকে কমেন্ট্রি বক্সে থাকা ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল গাওস্কর বলেছেন, ‘‘যুবরাজ ও বিরাটদের ব্যাট যেন পাকিস্তানিদের কাছে তরোয়ালের মতো হয়ে উঠল। এমনকী নবাগত হার্দিক পাণ্ড্যও বুঝিয়ে দিয়ে গেল, ওরা কতটা পিছিয়ে।’’ সঞ্জয় মঞ্জরেকর বলছেন, ‘‘পাকিস্তানের জন্যই ভারত-পাক ক্রিকেটের মজা চলে যাচ্ছে।’’

Yuvraj Singh India Pakistan Champions Trophy যুবরাজ সিংহ পাকিস্তান ভারত পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy