Advertisement
০৪ মে ২০২৪

উইম্বলডনে শোধ তোলার দিন

লুকাস রসোলের বিরুদ্ধে উইম্বলডন দ্বিতীয় রাউন্ডে রাফায়েল নাদাল এবং তাঁর টিম যে কতটা টেনশনে ছিল, সদ্য নবম বার ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন বৃহস্পতিবার ম্যাচ পয়েন্ট জিতে উঠতেই সেন্টার কোর্ট দেখতে পেল। প্লেয়ার্স এনক্লোজারে রাফার কাকা তথা কোচ টনি নাদাল তারস্বরে ‘ভামোস’ বলে চিৎকার করে যে ভাবে চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে উঠেছিলেন, চব্বিশ ঘণ্টা আগে জকোভিচের কষ্টার্জিত দ্বিতীয় রাউন্ড জয় দেখেও অতখানি লম্ফ দেননি জোকারের কোচ বরিস বেকার।

রসোল-বধের আগে। কোর্টে তখন জিতছেন।

রসোল-বধের আগে। কোর্টে তখন জিতছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৪ ০৩:৪২
Share: Save:

লুকাস রসোলের বিরুদ্ধে উইম্বলডন দ্বিতীয় রাউন্ডে রাফায়েল নাদাল এবং তাঁর টিম যে কতটা টেনশনে ছিল, সদ্য নবম বার ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন বৃহস্পতিবার ম্যাচ পয়েন্ট জিতে উঠতেই সেন্টার কোর্ট দেখতে পেল। প্লেয়ার্স এনক্লোজারে রাফার কাকা তথা কোচ টনি নাদাল তারস্বরে ‘ভামোস’ বলে চিৎকার করে যে ভাবে চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে উঠেছিলেন, চব্বিশ ঘণ্টা আগে জকোভিচের কষ্টার্জিত দ্বিতীয় রাউন্ড জয় দেখেও অতখানি লম্ফ দেননি জোকারের কোচ বরিস বেকার।

দু’বছর আগে এমনই এক সেন্টার কোর্ট দ্বিতীয় রাউন্ডে তখনকার বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে একশো নম্বরের কাছে দ্বিতীয় রাউন্ডেই নাদালের উইম্বলডন-দৌড় শেষ হয়ে গিয়েছিল। এ দিন সেই ম্যাচের রিপ্লেতে নাদাল ৪-৬, ৭-৬ (৮-৬), ৬-৪, ৬-৪ জিতে শোধ তুললেও তার জন্য রীতিমতো ঘাম ঝরাতে হয়েছে টেনিসের সর্বকালের সেরা স্প্যানিয়ার্ডকে। দ্বিতীয় সেটের টাইব্রেকারে মাত্র এক পয়েন্ট দূরে ছিলেন নাদাল, ম্যাচে ০-২ সেটে পিছিয়ে পড়ার মৃত্যুগুহায় ঢোকার থেকে। এই মুহূর্তে বিশ্বের ৫২ নম্বর চেক রসোল তখন টাইব্রেকারে ৬-৫ এগিয়ে। পরের মরণবাঁচন পয়েন্টে নাদালের একটা ফোরহ্যান্ড উইনার এবং তার পরেই রসোলের ডাবল ফল্ট ক্লে কোর্ট সম্রাটকে ঘাসের কোর্টে প্রাণের সন্ধান দেয়। ম্যাচ জিতে নাদাল বলেছেন, আমি শুধু লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছি আর ম্যাচে নিজের সময় কখন আসবে তার অপেক্ষায় থেকেছি।” যথার্থই তাই। তৃতীয় সেটে নাদাল ম্যাচে প্রথম বার রসোলের সার্ভিস ভাঙেন আর চতুর্থ সেটের গোড়ার দিকে টানা ১৪ পয়েন্ট নাগাড়ে জিতে ম্যাচের রাশ হাতে তুলে নিয়েছিলেন। মেয়েদের শীর্ষ বাছাই সেরেনা উইলিয়ামস আবার প্রথম পয়েন্ট থেকেই ম্যাচের রাশ হাতে তুলে নিয়েছিলেন এ দিন। দ্বিতীয় রাউন্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার শিপার্সকে মাত্র ৪৯ মিনিটে ৬-১, ৬-১ উড়িয়ে দেওয়ার পথে। গোটা ম্যাচে মাত্র দু’টো গেম হারিয়ে জেতার পরে সেরেনা বলেন, “আমি তো সব সময় ফেবারিট। তিন বছর ধরেই উইম্বলডনে এটা চলে আসছে। অথবা তারও আগে থেকে। তার জন্য চাপ? ধুস্! ব্যাপারটা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে আমার।”

রসোল-বধের পরে। আনন্দে নিজের ডিনার নিজেই বানাচ্ছেন।

আনা ইভানোভিচের কাছে অবশ্য ব্যাপারটা অত উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। ছ’বছর আগে ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন হিসাবে উইম্বলডনে এসেছিলেন তৎকালীন বিশ্বের এক নম্বর মেয়ে ইভানোভিচ। টানা তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে। কিন্তু তৃতীয় রাউন্ডেই ছিটকে যান চিনের জি জেংয়ের কাছে। প্রথম চিনা মেয়ে হিসাবে যিনি সে বারই প্রথম কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনাল খেলেন উইম্বলডনে। এ দিন ছ’বছর আগের সেই হারের শোধ তুললেন আনা। জেংকে ৬-৪, ৬-০ হারিয়ে। ও দিকে এ বারের ছেলেদের ড্রয়ে কনিষ্ঠতম প্লেয়ার, ১৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় ওয়াইল্ড কার্ডধারী নিক কিরজিয়স নাটকীয় জয় পেলেন। ন’টা ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে ফ্রান্সের ১৩ নম্বর বাছাই রিচার্ড গাস্কেকে ম্যারাথন পাঁচ সেটে হারিয়ে। আর এক ফরাসি, ১৪ নম্বর বাছাই সঙ্গা আবার কোনওক্রমে টিকে গিয়েছেন। আর একটি ম্যারাথন পাঁচ সেটের ম্যাচে আমেরিকার স্যাম কুয়েরিকে হারিয়ে। টাইব্রেকহীন চূড়ান্ত সেটের মীমাংসা হয় ১৪-১২ গেমে। দু’বিভাগ মিলিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে নামীদের মধ্যে আর জিতেছেন ফরাসি ওপেন জয়ী শারাপোভা, ওয়ারিঙ্কা, নিশিকোরি, রাওনিক, লিসিকি। আর লুক্সেমবার্গের ছ’ফুট চার ইঞ্চি, ৯৮ কেজির ‘টেনিস দৈত্য’ গিলেস মুলারকে স্বচ্ছন্দ্যে বশে এনে উইম্বলডনের রাজা রজার ফেডেরার দ্বিতীয় রাউন্ডে জিতলেন স্ট্রেট সেটে। ৬-৩, ৭-৫, ৬-৩। এবং এ সবের মধ্যেই পুরুষ ডাবলসে ভারতীয়রা ভাল শুরু করল। ইন্দো-পাক এক্সপ্রেস রোহন বোপান্না-আইসাম কুরেশি লড়ে হারালেন চেক-রুশ জুটি চার্মাক-এলগিনকে ৭-৬ (১১-৯), ৭-৬ (১০-৮), ৬-৩। আর পঞ্চম বাছাই লিয়েন্ডার পেজ-রাদেক স্টেপানেক পোলিশ-মার্কিন জুটি ফ্রিস্টেনবার্গ-রাজীব রামকে হারান ৬-২, ৭-৬ (৭-৪), ৩-৬, ৬-৪।

ছবি: এপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tennis wimbledon nadal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE