প্লেয়ারদের ট্যাকল কি সামলাতে পারবেন মোয়েস? মঙ্গলবার ম্যান ইউ প্র্যাকটিসে। ছবি: এএফপি।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সাত নম্বরে। এফএ কাপ, ক্যাপিটাল ওয়ান কাপে মুখ থুবড়ে পড়া। অন্ধকার রাস্তায় এখন ডেভিড মোয়েসের আশার আলো একটাই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। যে টুর্নামেন্টের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় পর্বে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মুখোমুখি হবে অলিম্পিয়াকোস।
ম্যাঞ্চেস্টারের সিংহাসন এখন তাঁর জন্য হয়ে উঠেছে কাঁটার আসন। রবিবার লিভারপুলের কাছে ০-৩ হারের পরে আবার প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে, আর কত দিন মোয়েসের উপরে আস্থা রাখবেন ম্যান ইউ কর্তারা? ম্যাচ শেষে সমর্থকরাও কটাক্ষ করেন মোয়েসকে। এক সমর্থক বলেই দেন, “মোরিনহোকে চাই, মোয়েসকে নয়।” কিন্তু ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যম মতে চাকরি বাঁচিয়ে রাখার জন্য মোয়েসের হাতে রাস্তা একটাই: চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা। তবে সেই রাস্তায় এগোতে হলে প্রথম পর্বে অলিম্পিয়াকোসের ঘরের মাঠে ০-২ হেরে নিজেদের মাঠে কোনও গোল না হজম করে ৩ গোল দিতে হবে রুনিদের।
সোমবার প্রায় সারা দিন দলের সহকারী কোচেদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মোয়েস। দলে কী কী পরিবর্তন করতে হবে, কোন কোন ফুটবলারকে বাদ দেওয়া উচিত, সব কিছু নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা হয়। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে সমর্থকদের জয়ের আশ্বাস দিয়ে মোয়েস বলেন, “ফুটবলাররা ভাল মতো জানে বুধবার জিততেই হবে। ম্যাচের শুরুতেই আমরা একটা গোল করতে পারলে খেলার রঙ পাল্টাবে।” মোয়েসের মতো দলের তারকা স্ট্রাইকার ওয়েন রুনিও ম্যান ইউ সমর্থকদের কাছে আবেদন জানালেন দলের পাশে থাকার। ‘‘রবিবার আমার ফুটবল কেরিয়ারের জঘন্যতম দিনগুলোর মধ্যে একটা ছিল। কিন্তু বুধবার অলিম্পিয়াকোসের সঙ্গে গুরুত্বরপূর্ণ ম্যাচের আগে সমর্থকদের পাশে চাই। তবেই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছতে পারব।” দ্বিতীয় পর্বের আগে চোট সারিয়ে দলে ফিরতে পারেন জাভিয়ের হার্নান্দেজ, নানি ও জনি এভান্স। যাঁরা দলের সঙ্গে এ দিন অনুশীলন করেন।
শুধুমাত্র চাকরি বাঁচানোটাই অবশ্য সমস্যা নয় মোয়েসের। দলের সিনিয়র ফুটবলারদের সঙ্গেও সম্পর্কে অবনতি ঘটেছে ম্যান ইউর স্কটিশ কোচের। ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমের খবর অনুযায়ী রবিন ফান পার্সি, রায়ান গিগসদের মতো ফুটবলারদের সঙ্গে লিভারপুল ম্যাচের পরে বাগ্যুুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন মোয়েস। জল্পনা অনুযায়ী এখন থেকেই নিজের এজেন্টকে ফান পার্সি বলে দিয়েছেন যে মোয়েস থাকলে পরের মরসুমে তিনি ক্লাব ছাড়বেন। যদিও এক ক্লাব সূত্র বলেন, “মনে হয় না ফুটবলারদের কোনও সমস্যা আছে কোচকে নিয়ে।”
এত সমস্যার মধ্যে মোয়েসের কফিনে শেষ পেরেক পুঁততে তৈরি অলিম্পিয়াকোস। গত পর্বের গোলদাতা জোয়েল ক্যাম্বেল বলেন, “আগের ম্যাচের রেশ কাটিয়ে দ্বিতীয় পর্বে ভাল খেলতে হবে।” সঙ্গে ক্যাম্বেল যোগ করেন, “ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে খেলা খুব শক্ত। কিন্তু আমি আবার গোল করতে চাই।”
ব্যর্থতার পাঁচ কাহন
রুনি-ফান পার্সি বোঝাপড়া
রুনি আর ফান পার্সির যুগলবন্দি কাজ করছে না। গত কয়েক ম্যাচে নিজেদের মধ্যে মাত্র তিন-চারটে পাস খেলেছেন দু’জন। ফান পার্সিও নিয়মিত গোল পাচ্ছেন না।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ড আতঙ্ক নেই
প্রিমিয়ার লিগে এই মরসুমে ঘরের মাঠে পাঁচটা ম্যাচ হেরেছে ম্যান ইউ। মাত্র ১৮ গোল করেছে মোয়েসের দল। গত কয়েক মরসুমের দাপট উধাও।
দুর্বল রিজার্ভ বেঞ্চ
প্রথম দলের মতোই ম্যান ইউ-র রিজার্ভ বেঞ্চও দুর্বল। ক্লেবারলি, ইয়ং, কাগাওয়ার মতো ফুটবলাররা পরিবর্ত হিসেবে নেমেও ম্যাচের রঙ পাল্টাতে পারছেন না।
মাঝমাঠ নড়বড়ে
অনেক আশা নিয়ে এভার্টনের মাঝমাঠ তারকা মারুয়ান ফেলাইনিকে সই করিয়েছিলেন মোয়েস। কিন্তু অর্ধেক মরসুম চোটের জন্য খেলতে পারেননি। সঙ্গী মাইকেল ক্যারিকেরও খারাপ ফর্ম।
সেন্টার ব্যাকরা ফর্মে নেই
নেমানয়া ভিদিচ, রিও ফের্দিনান্দ, ফিল জোন্স-- সবাই খারাপ ফর্মে। প্রিমিয়ার লিগে এখনও পর্যন্ত ৩৪ গোল হজম করেছে মোয়েসের দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy