Advertisement
০৫ মে ২০২৪
জয় দিয়ে শুরু জকোভিচের

ঘরের ছেলেকে বীরের অভ্যর্থনা উইম্বলডনে

কত দিন এ ভাবে ঘরের ছেলেকে খেতাব রক্ষার লড়াইয়ে নামতে দেখেননি উইম্বলডনের দর্শকরা! তাই সোমবার যখন সেন্টার কোর্টে নামলেন অ্যান্ডি মারে, তখন গ্যালারি ফেটে পড়ল হাততালিতে। বীরের সম্মান দিয়ে তাঁকে বরণ করে নিল উইম্বলডন। হাততালি অবশ্য নোভাক জকোভিচও কম পেলেন না। তবে সে তাঁকে অর্জন করতে হল প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে। মারে তো সেন্টার কোর্টে নামা থেকে শুরু করেই হাততালি পেলেন। ঘরের ছেলে বলে কথা।

মারে ম্যানিয়া। চ্যাম্পিয়নের ছবির সঙ্গে ছবি তোলার হিড়িক।

মারে ম্যানিয়া। চ্যাম্পিয়নের ছবির সঙ্গে ছবি তোলার হিড়িক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৫:৫৯
Share: Save:

কত দিন এ ভাবে ঘরের ছেলেকে খেতাব রক্ষার লড়াইয়ে নামতে দেখেননি উইম্বলডনের দর্শকরা! তাই সোমবার যখন সেন্টার কোর্টে নামলেন অ্যান্ডি মারে, তখন গ্যালারি ফেটে পড়ল হাততালিতে। বীরের সম্মান দিয়ে তাঁকে বরণ করে নিল উইম্বলডন। হাততালি অবশ্য নোভাক জকোভিচও কম পেলেন না। তবে সে তাঁকে অর্জন করতে হল প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে। মারে তো সেন্টার কোর্টে নামা থেকে শুরু করেই হাততালি পেলেন। ঘরের ছেলে বলে কথা।

জবাবটাও সে ভাবেই দিলেন মারে। যতই তাঁর চোট নিয়ে আতঙ্কে ভুগতে থাকুন ব্রিটিশ টেনিসপ্রেমীরা, যতই তাঁর উপর বেট ফেলতে নারাজ হোক জুয়াড়িরা, গতবারের চ্যাম্পিয়ন মারে কিন্তু সোমবার তাঁর প্রথম ম্যাচে বেলজিয়ামের ডেভিড গফিনকে সরাসরি সেটে হারিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, সব ঠিকই আছে। ঘন্টা দুয়েকের ম্যাচে গফিনকে ৬-১, ৬-৪, ৭-৫ ছিটকে দিয়ে মারে উঠে পড়লেন দ্বিতীয় রাউন্ডে। আটটি এস্ ও একটি মাত্র ডাবল ফল্ট ম্যাচ স্ট্যাটিস্টিক্সের এটুকু দেখলেই বোঝা যায়, মারে কতটা প্রত্যয় নিয়ে সোমবার এসেছেন এসডব্লু ১৯-এ।

সাতাত্তর বছর আগে ফ্রেড পেরি। তার পর এই প্রথম কোনও ব্রিটিশ উইম্বলডন সিঙ্গলস চ্যাম্পিয়ন। আগের দিনই মারে স্বীকার করেছিলেন, “ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজের দেশের গ্র্যান্ড স্ল্যামে নামাটা যে কতটা চাপের বিষয়, তা আমি ভালই টের পাচ্ছি।” এ দিন এই চাপটা কাটিয়ে উঠে প্রথম রাউন্ডের বাধাটা টপকানোই ছিল মারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথম হার্ডলটা টপকাতে তেমন বেগ পেতে হল না মারেকে। এ জন্যই তো এমিলি মরেসমোকে তাঁর কোচ করে আনা।


(বাঁ দিকে) খেলা দেখতে এলেন বান্ধবী কিম সিয়ার্স। ছেলের নতুন কোচ মরেসমোকে অভ্যর্থনা মা জুডির।
​(ডান দিকে) চোট সারিয়ে তিন মাস পর কোর্টে নেমেই জয়ে ফিরলেন আজারেঙ্কা।

মরেসমোর কোচ হয়ে আসার পর অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সে যতই তিনি মহিলাদের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হোন, একজন পুরুষ চ্যাম্পিয়নকে কী ভাবে ভাল টেনিস খেলতে শেখাবেন? কোথায় ইভান লেন্ডলের দক্ষতা, আর কোথায় মরেসমো। রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জবাবটা দিয়েই দেন মারে। বলেন, “ওর কাজটা পুরোটাই মানসিক। যেটা এখন আমার বেশি দরকার। এমিলি যে ভাবে বহু বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে নিজেকে সেরার আসনে বসিয়েছিল, সেই মানসিকতাটা আমার ওর কাছ থেকে শেখা দরকার।” সোমবারের ম্যাচের পর মনে হচ্ছে এমিলি-এফেক্ট শুরু হয়ে গিয়েছে।

২০১২-র ফরাসি ওপেনে রজার ফেডেরারকে নাকানি-চোবানি খাইয়ে টেনিস বিশ্বের নজর কাড়া গফিনকে হারিয়ে উঠে এ দিন মারে বললেন, “নার্ভাস তো ছিলামই। তবে যে ভাবে শুরুটা করলাম, তাকে গুড স্টার্ট বলাই যায়।” ১০৫ নম্বরকে হারিয়ে এ বার দ্বিতীয় রাউন্ডে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বের ৯২ নম্বর ছ’ফুট চার ইঞ্চির স্লোভেনিয়ান ব্লাজ রোলা।

গত বারের চ্যাম্পিয়ন না হয়েও সিডিংয়ের নতুন নিয়মের বদান্যতায় জকোভিচ এখানে এক নম্বর বাছাই। বিশ্বের ৫৬ নম্বর কাজাখস্তানের আন্দ্রে গোলুবেভের বিরুদ্ধে খেললেনও সে রকম। ৪৭ মিনিটে প্রথম দু’টি সেট জিতে নিলেন বিপক্ষকে মাত্র একটি গেম জিততে দিয়ে। তৃতীয় সেটে গোলুবেভ কিছুটা মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ৮৩ মিনিটে ৬-০, ৬-১, ৬-৪ ম্যাচ জিতে নেন তিনি।

এ দিন সেন্টার কোর্টে মারের জয়ের পর জিতলেন মেয়েদের দ্বিতীয় বাছাই চিনের লি না-ও। চোট সারিয়ে কোর্টে ফেরা ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কাও প্রথম রাউন্ডের গন্ডি পেরলেন। ছেলেদের ষষ্ঠ বাছাই টমাস বার্ডিচ অবশ্য প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিততে নিয়ে নিলেন সোয়া তিন ঘন্টার বেশি। মেয়েদের বাছাই তালিকায় ৩০ নম্বরে থাকা ভেনাস উইলিয়ামসও জয় দিয়ে শুরু করলেন। ছেলেদের সপ্তম বাছাই ডেভিড ফেরেরও জিতলেন। হারলেন সামান্থা স্টোসুর।

লন্ডন থেকে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের চোখে

• জকোভিচ: ছেলেদের এক নম্বর ফেভারিট। দারুণ ভাল ফর্মে আছে। দ্রুতগতির কোর্টে আরও ভাল খেলে। কোচ বরিস বেকারের থেকে ঘাসের কোর্টে সেরা ভলি মারার টিপসও পাবে নিয়মিত।

• ফেডেরার: উইম্বলডন বলেই বত্রিশেও সম্ভাব্য ফাইনালিস্ট। প্রথম সপ্তাহটা টিকে যেতে পারলে পরের দিকে খানিকটা স্লো হয়ে পড়া ঘাসের কোর্টে নেট-প্লে, ভলিতে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।

• নাদাল: ফরাসি ওপেন জিতলেও একশো ভাগ ফিট নয়। ক্লে কোর্টে ভয়ঙ্কর ভলি মারতে যে বাউন্সটা পায়, দ্রুত গতির কোর্টে সেটা পাবে না। বিশেষ করে প্রথম সপ্তাহে ঘাসের কোর্টে যখন ভিজে ভাব থাকবে।

• কালো ঘোড়া: নিশিকোরি টিপিকাল সার্ভ-ভলি প্লেয়ার। ঘাসের কোর্টে খেলার যেটা ট্রেডমার্ক। দুর্দান্ত ফর্মে। সম্প্রতি এটিপি ট্যুরে বড় টুর্নামেন্ট জেতায় গ্র্যান্ড স্ল্যামে ভাল করার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

• সেরেনা উইলিয়ামস: মেয়েদের পয়লা নম্বর ফেভারিট। পাওয়ার, সার্ভিস আর ভলির দাপটের জন্য তিরিশ পেরিয়েও ঘাসের কোর্টে এখনও প্রায় অপ্রতিরোধ্য।

• শারাপোভা: অপছন্দের ক্লে কোর্টে গত তিন বছরে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রিয় ঘাসের কোর্টে তুমুল আত্মবিশ্বাসী থাকবে। তবে উইম্বলডন জিততে হলে সেরেনা-সিনড্রোম কাটানো দরকার।

• কালো ঘোড়া: আমেরিকার ম্যাডিসন কিস। প্রচন্ড পাওয়ারফুল গেম খেলে। বিগ সার্ভার। দ্রুতগতির কোর্টে আরও সুবিধে পাবে। সার্কিটে নতুন বলে বিপক্ষের কাছে ওর খেলাটা এখনও অচেনা। কিস শনিবারই ইস্টবোর্নে চ্যাম্পিয়ন হল।

ছবি: এএফপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE