প্রয়াত হলেন সত্তর ও আশির দশকে ময়দানের অন্যতম বর্ণময় চরিত্র সজল বসু। মোহনবাগানের অন্যতম প্রধান ফুটবল রিক্রুটার সজলবাবু যদিও ফুটবল মহলে পরিচিত ছিলেন গজু বসু নামেই। দীর্ঘ রোগভোগের পর রবিবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৮।
ছয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকেই মোহনবাগানের দল গঠনে অন্যতম নিউক্লিয়াস থাকতেন গজু বসুই। দলবদলের সময় ইস্টবেঙ্গল রিক্রুটারদের চোখে ধুলো দিয়ে হাবিবকে সবুজ-মেরুনে আনা হোক বা সুব্রত ভট্টাচার্যকে শ্যামনগরের বাড়ি থেকে তুলে মোহনবাগানে সই করানো, সবেতেই মুখ্য ভূমিকা থাকত ‘গজুদা’র। মোহনবাগানের বর্তমান কর্মসমিতিকে কুর্সিতে আনতেও তিনিই ছিলেন প্রধান মাথা। ১৯৯৭ সালে রোভার্স কাপের পরই তাঁর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় ক্লাব প্রশাসনের। ২০০৫ সালে নির্বাচনের সময় ফের শাসক গোষ্ঠীর কাছাকাছি আসেন তিনি। পরিবারের দাবি, বর্তমান শাসক গোষ্ঠী তাঁকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেনি শেষ পর্যন্ত। এর পরেই ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন তিনি। সারা জীবন সাদা জামা-প্যান্ট পরে ক্লাবে আসা গজুবাবুর নিজস্ব ভঙ্গিতে বলা “হুঁ হুঁ বাবা, গজু বসু পারে না এমন কোনও কাজ নেই”, “আমি শশার মতো ঠান্ডা”আজও ‘মিথ’ ময়দানের ফুটবলে।
এ দিন তাঁর মৃত্যুর পরেই বাড়িতে যান সুব্রত ভট্টাচার্য-সহ প্রাক্তন ফুটবলারদের অনেকে। ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তারাও গিয়ে ক্লাবের তরফে মালা দিয়ে আসেন। মোহনবাগানের তরফে মালা দেওয়া হলেও তাঁর মরদেহ ক্লাব তাঁবুতে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তাঁর পুত্রের কথায়, “ক্লাব বাবার কোনও খবর রাখেনি। তাই চাইনি মরদেহ ক্লাবে যাক।” গজু বসুর মৃত্যুতে গভীর শোকাহত ময়দান। সুব্রত ভট্টাচার্য বললেন, “গজুদার মৃত্যু একটা বড় ধাক্কা।” চুনী গোস্বামীও বলছেন, “মোহনবাগানপ্রেমী এই মানুষটার মৃত্যুতে ময়দানে একটা যুগের সমাপ্তি হল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy