Advertisement
E-Paper

জেনিকে প্রিন্সেসই রেখে উইম্বলডনে রানি কিভিতোভা

বুশার্ড পরিবারের মেজ মেয়ের (যমজ হলেও ছ’মিনিট পরে পৃথিবীর আলো দেখেছিল) নাম তার রাজপরিবারপ্রেমী মা যাঁর নামের সঙ্গে মিলিয়ে রেখেছেন, সেই প্রিন্সেস অব ইয়র্ক ইউজেনি সেন্টার কোর্টের রয়্যাল বক্সে বসে পুরো ফাইনাল দেখলেন। কিন্তু শনিবার উইম্বলডনের রানি পেত্রা কিভিতোভা। প্রিন্সেস জেনি মানে ইউজেনি বুশার্ড নয়! বিকেলে পার্কে বেড়াবার মতোই অতি সহজে মাত্র পঞ্চান্ন মিনিটে কিভিতোভার ৬-৩, ৬-০ জিতে চার বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বার অল ইংল্যান্ড সেন্টার কোর্টে ভেনাস রোজওয়াটার ডিশ (মেয়েদের চ্যাম্পিয়নের রুপোর থালা) পাওয়ার রহস্য কী?

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩২
ট্রফিকে চুম্বন চ্যাম্পিয়নের। ছবি: এপি

ট্রফিকে চুম্বন চ্যাম্পিয়নের। ছবি: এপি

বুশার্ড পরিবারের মেজ মেয়ের (যমজ হলেও ছ’মিনিট পরে পৃথিবীর আলো দেখেছিল) নাম তার রাজপরিবারপ্রেমী মা যাঁর নামের সঙ্গে মিলিয়ে রেখেছেন, সেই প্রিন্সেস অব ইয়র্ক ইউজেনি সেন্টার কোর্টের রয়্যাল বক্সে বসে পুরো ফাইনাল দেখলেন। কিন্তু শনিবার উইম্বলডনের রানি পেত্রা কিভিতোভা। প্রিন্সেস জেনি মানে ইউজেনি বুশার্ড নয়!

বিকেলে পার্কে বেড়াবার মতোই অতি সহজে মাত্র পঞ্চান্ন মিনিটে কিভিতোভার ৬-৩, ৬-০ জিতে চার বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বার অল ইংল্যান্ড সেন্টার কোর্টে ভেনাস রোজওয়াটার ডিশ (মেয়েদের চ্যাম্পিয়নের রুপোর থালা) পাওয়ার রহস্য কী? বছর কুড়ির যে কানাডিয়ান মেয়ে, যাকে বলা হচ্ছে, নতুন শারাপোভা... ‘বিউটি উইথ ব্রেন’... চেহারার সৌন্দর্যের মতোই খেলাটাও সুন্দর... সেই ইউজেনি বুশার্ডের স্কিলের পাশাপাশি তাকে নিয়ে তৈরি প্রচণ্ড হাইপ ফাইনালে দু’টো প্রতিদ্বন্দ্বীকে কিভিতোভার হেলায় বশ করার ব্যাখ্যা আমার কাছে এ রকম: ইউজেনি গোটা পরিস্থিতির চাপে কুঁকড়ে গিয়েছিল। ঠিক যে দশা গত বছর উইম্বলডন ফাইনালিস্ট সাবিন লিসিকির হয়েছিল। বুশার্ড কেবল লিসিকির মতো দ্বিতীয় সেটে পরের পর সার্ভিস নষ্ট করার সময় কোর্টের মধ্যেই কেঁদে ভাসায়নি, এই যা!

ফাইনালের আগে বিবিসি-তে ক্রিস এভার্টকে বলতে শুনলাম, “উইম্বলডনের সেন্টার কোর্ট হল টেনিসের গির্জা। পৃথিবীর অন্য সব টুর্নামেন্টের সব কোর্টের চেয়ে এটা আলাদা। এখানে প্রথম ফাইনাল খেলতে নামলে পা কাঁপবেই! স্কিলের চেয়েও তাই বেশি করে মানসিক গঠন ঠিক রাখাটা জরুরি ইউজেনির।” একেবারে খাঁটি কথা। বুশার্ড আমার মতে গোটা পরিস্থিতির চাপে ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি ফাইনালে উঠেই অর্ধেক রাজত্ব জয় হয়ে গিয়েছে-র মোড-এ হয়তো ছিল। এটা তো ঠিক, এ বার উইম্বলডন ফাইনাল খেলাটা ওর নিজের কাছেও অপ্রত্যাশিত!

তার উপর এ দিন ওর উল্টো দিকের মেয়েটা কার্যত নিখুঁত অল রাউন্ড টেনিস খেলেছে। বাঁ-হাতি হওয়ায় কিভিতোভার সার্ভ, ফোরহ্যান্ড শট স্বাভাবিক ভাবে একটা বাড়তি ‘অ্যাঙ্গেল’-এ যায় প্রতিপক্ষের কাছে। যেটা রিটার্ন করা একটু বেশিই সমস্যার। তার সঙ্গে এ দিন ছ’ফুট লম্বা, বাহাত্তর কেজির কিভিতোভা যে প্রচণ্ড পাওয়ার টেনিস খেলেছে, তার সঙ্গে আমি সেরেনা উইলিয়ামস কিংবা আরও পিছনে তাকালে মার্গারেট কোর্ট ছাড়া কোনও তুলনা পাচ্ছি না। ঘাসের কোর্টে কিভিতোভা বরাবর ভাল। এখন যেন আরও নিখুঁত, মারাত্মক হয়ে উঠেছে। ফাইনালে ওর ফার্স্ট সার্ভ পয়েন্টের শতাংশ ৮২%। ৯০% গ্রাউন্ডস্ট্রোক সঠিক। গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে প্রতিপক্ষকে টানা ছ’বার ব্রেক করা খুব কমই দেখা যায়। প্রথম সেটের পঞ্চম গেম থেকে দ্বিতীয় সেটের ষষ্ঠ গেম পর্যন্ত বুশার্ডের সার্ভিস টানা ব্রেক করল চেক মেয়েটা!

প্রিন্সেস জেনি-র পক্ষে কি কিছুই বলার নেই আজ? কিভিতোভাই তো ওর টার্গেট হতে পারে! ২০১০-এ বুশার্ডের মতোই বছর কুড়ির কিভিতোভা উইম্বলডনে সাড়া ফেলে সেমিফাইনালে উঠে সেবারের চ্যাম্পিয়ন সেরেনার কাছে এ দিনের বুশার্ডের মতোই উড়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরের বছরই লন্ডনে ফিরে এসে চ্যাম্পিয়ন হয়। ফাইনালে শারাপোভার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গেম ‘লভ’-এ জিতে। কে বলতে পারে, প্রিন্সেস জেনি-ও ২০১৫-এ ফিরে এসে উইম্বলডনের রানি হবে না!

kititova wimbeldon joydip mukhopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy