Advertisement
E-Paper

তরুণ প্রজন্মের যুগ এসে গেল

আগের বারের চ্যাম্পিয়ন অ্যান্ডি মারেকে এ বার কোয়ার্টার ফাইনালেই মাত্র দু’ঘণ্টায় স্ট্রেট সেটে গ্রিগর দিমিত্রভের উড়িয়ে দেওয়ার কোন তাৎপর্যটা বেশি? উইম্বলডন থেকে আগেই ছিটকে পড়া তাঁর প্রেমিকা শারপোভার সুন্দর মুখে ফের হাসি ফোটা! নাকি, টেনিসে তরুণ প্রজন্মের দাপুটে অভ্যুত্থানের বিজ্ঞাপন! মনে হয়, পরেরটাই।

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৪ ০৩:৪২
চ্যাম্পিয়নের বিদায়। ছবি: এএফপি।

চ্যাম্পিয়নের বিদায়। ছবি: এএফপি।

আগের বারের চ্যাম্পিয়ন অ্যান্ডি মারেকে এ বার কোয়ার্টার ফাইনালেই মাত্র দু’ঘণ্টায় স্ট্রেট সেটে গ্রিগর দিমিত্রভের উড়িয়ে দেওয়ার কোন তাৎপর্যটা বেশি?

উইম্বলডন থেকে আগেই ছিটকে পড়া তাঁর প্রেমিকা শারপোভার সুন্দর মুখে ফের হাসি ফোটা! নাকি, টেনিসে তরুণ প্রজন্মের দাপুটে অভ্যুত্থানের বিজ্ঞাপন! মনে হয়, পরেরটাই।

দিমিত্রভের হাতে ৬-১, ৭-৬ (৭-৪), ৬-২-এ মারে-বধের পর অন্য কোয়ার্টার ফাইনালে আর এক তরুণ মারিন চিলিচের চ্যালেঞ্জ টপকাতে শীর্ষ বাছাই জকোভিচকে ম্যারাথন পাঁচ সেট খাটতে হল।

গত দু’বছরও উইম্বলডনে গোড়ার দিকে নাদাল-ফেডেরার-শারাপোভা, অনেক মহারথী ছিটকে গিয়েছিল। কিন্তু সেটা টুর্নামেন্টের একেবারে গোড়ায়। যখন লম্বা ইউরোপিয়ান ক্লে কোর্ট মরসুম খেলে এসে অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ঘাসের সঙ্গে পুরো সড়গড় থাকে না সুপারস্টাররা। কিন্তু টপ ক্লাস প্লেয়াররা একবার সারফেসের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পর তাদের অন্য মূর্তি! এ বার তাতেও ব্যতিক্রম! নাদাল হারল চতুর্থ রাউন্ডে। মারে কোয়ার্টারে। শারাপোভা শেষ ষোলোয়। সেরেনা প্রথম দু’ম্যাচ জেতার পর। মানে, সারফেসের সঙ্গে সেট হয়ে যাওয়ার পরেও তরুণ প্রজন্মের চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে ব্যর্থ চ্যাম্পিয়ন প্লেয়াররা।

আসলে টেনিসটাই এখন পাল্টে গিয়েছে। আমাদের সময়ের সঙ্গে তো আকাশ-পাতাল তফাত। তখন সবচেয়ে বড় চেহারার প্লেয়ার ছিল পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি। এখন টেনিসে ইয়ং জেনারেশনের গড়পড়তা হাইট ছয়-এক, ছয়-দুই। মেয়েদের সার্কিটেও কয়েক জন পাঁচ ফুট দশ-এগারো। এ বার উইম্বলডনে ছেলেদের কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট তালিকা দেখুন। রাওনিক ৬’৪”। চিলিচ-দিমিত্রভ ৬’৩”। কিরগিওস ৬’২”। সেরকমই পাওয়ারফুল। ফিট। মেয়েদের চার সেমিফাইনালিস্টের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র সাফারোভা মাত্র ২৭। ছেলেদের শেষ আটে পঁচিশের নীচে চার জন। তিরিশের ঘরে মাত্র একজন।

ঘাসের কোর্টে বল বাড়তি গতিতে ছোটে। বছর বাইশ-চব্বিশের ছেলেমেয়েদের বিগ সার্ভ-ভলি, দ্রুত কোর্ট কভারিং, নেট প্লে-র সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছে না দশ-বারো বছর ধরে সার্কিট চষে বেড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়া সুপারস্টাররা। আরও একটা ব্যাপার, নাদাল-মারে-শারাপোভাদের চেয়ে দিমিত্রভ-বুশার্ডদের ট্রফির খিদে অনেক বেশি। কিভিতোভার মতো দু’-একজন বাদে তরুণ প্রজন্মের কেউই গ্র‌্যান্ড স্ল্যাম জেতেনি। উইম্বলডনে ওরা আরও বেশি খিদে নিয়ে নামছে। তরুণ প্রজন্মের শারাপোভা যাকে বলা হচ্ছে সেই ইউজেনি বুশার্ডের সঙ্গে সিমোনা হালেপের সেমিফাইনালটা মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করে দিতে পারে।

এ দিন মারের সঙ্গে দিমিত্রভ যা খেলল— অসাধারণ! মারে এ বছর পিঠের ব্যথায় পুরনো ফর্মে নেই। তা সত্ত্বেও দিমিত্রভের অল কোর্ট টেনিসকে খাটো করা যাবে না। আগের দিন নাদালের বিরুদ্ধে তেমনই অনবদ্য ছিল কিরগিওস। আজ রাওনিকের কাছে শেষ আটে হারলেও নাদাল-ম্যাচের দ্বিতীয় সেটে ওর শরীরে ধেয়ে আসা বল-এ যে ভাবে দু’পায়ের ফাঁকে র‌্যাকেট এনে উইনার মেরেছিল কিরগিওস— অবিশ্বাস্য। ম্যাকেনরো যে শটকে বলেছে, “অবিশ্বাস্য-ও খুব কম প্রশংসা!” টিম হেনম্যান লিখেছে, “বছরের সেরা শট।” ফেডেরার এ রকম একটা শট মেরেছিল ২০০৯ ইউ এস ওপেনে।

ফেডেরারকে (এ দিন ওয়ারিঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনাল গেল) তরুণ প্রজন্মের ভিড়ে যে অম্লান দেখাচ্ছে, সেটা উইম্বলডন বলেই। ঘাসের কোর্টের ট্রেডমার্ক টেনিসটা খেলে ও। নাদাল-জকোভিচদের মতো প্রতিটা শটের পিছনে সর্বস্য শক্তি দেয় না। ন্যাচারাল প্লেয়ার। দীর্ঘ কেরিয়ারেও কখনও বড় চোটের শিকার হয়নি বলে সামনের মাসের শুরুতেই তেত্রিশে পা দিতে চললেও এখনও যথেষ্ট ফিট।

তাই চ্যাম্পিয়নশিপ প্রশ্নে আমার ফেভারিট জকোভিচ আর কালো ঘোড়া দিমিত্রভ হলেও ফেডেরারের আট নম্বর উইম্বলডন খেতাবের সম্ভাবনাকে মোটেই উড়িয়ে দিচ্ছি না! আর আমাদের চিরসবুজ লিয়েন্ডার পেজ (স্টেপানেককে নিয়ে) ডাবলস কোয়ার্টার ফাইনাল উঠে বুঝিয়ে দিল, অন্তত ভারতীয় টেনিসে তরুণ প্রজন্ম এখনও পিছনের সারিতে!

wimbledon joydeep mukhopadhyay murry
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy