সৌরভের পছন্দ রণদেব।
বাংলার বোলিং পরামর্শদাতা হিসেবে রণদেব বসুকে সিএবি-র নিযুক্ত করার প্রভাব কি সুদূরপ্রসারী?
শনিবার গোটা দিন ধরে উপরোক্ত প্রশ্ন নিয়েই আলোচনায় ডুবে থাকল বঙ্গ ক্রিকেট। গত কাল বেশ রাতের দিকে সিএবি যুগ্ম-সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন যে, রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার পরবর্তী তিনটে ম্যাচে বাংলার বোলিং পরামর্শদাতা হিসেবে থাকবেন প্রাক্তন বাংলা পেসার। রাত এগারোটা নাগাদ সৌরভ ফোন করে সেটা জানিয়েও দেন রণদেবকে। টিমকেও জানানো হয়। যা পরিস্থিতি, তাতে আজ রবিবার তিনিও বাংলা টিমের সঙ্গে গাজিয়াবাদের বিমান ধরছেন। যেখানে আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নামছে বাংলা।
ঘটনা হল, বোলিং পরামর্শদাতা হিসেবে রণদেবের এমন রাতারাতি নির্বাচন অপ্রত্যাশিত চমক হিসেবেই হাজির হয়েছে বাংলা টিমের সঙ্গে জড়িত কোনও কোনও সদস্যের কাছে। তাঁদের কথা ধরলে, সৌরভ নাকি বেশ কিছু দিন ধরেই চাইছিলেন টিমের কোচিং স্টাফে একজন বোলিং কোচ, একজন ফিল্ডিং কোচ থাকুন। কিন্তু বাংলা কোচ অশোক মলহোত্রের তাতে নাকি খুব একটা সায় ছিল না। তাই সিদ্ধান্তটা এমন রাতারাতি আসবে, অনেকেই ভাবতে পারেননি। এটাও বলা হল যে, এই সিদ্ধান্তে আরও একটা ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে গেল। বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রকাশ্যে সৌরভ কোনও কড়া মন্তব্য না করলেও ভেতরে ভেতরে তিনি খুশি নন। নইলে এমন রঞ্জির মাঝপথে টিমের সঙ্গে বোলিং পরামর্শদাতা জুড়ে দেওয়ার কথা ভাববেন কেন? মাঝে এটাও ছড়িয়ে পড়ে, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়কে সহকারী কোচ করা হতে পারে। যদিও সেটা এখনও চূড়ান্ত নয়।
সিএবি-র এই সিদ্ধান্তে কেউ কেউ আবার বড় প্রেক্ষাপটও দেখছেন। ধোঁয়াশায় ভুগছেন বাংলা কোচ হিসেবে পরের মরসুমে অশোক মলহোত্রের থাকা নিয়ে। বলা হচ্ছে, অসুস্থতার আগের অশোক নাকি এক রকম ছিলেন। আর এখনকার অশোক আর এক রকম। শারীরিক ভাবে নাকি আর পারছেন না।
এঁদের প্রশ্ন হল, রণকে আচমকা বোলিং পরামর্শদাতা করে আনাটা কি কোনও ইঙ্গিত যে, আগামী বছর কোচও বদল হতে পারে?
এঁদের আরও একটা প্রশ্ন হল, এত কম সময়ে রণ হাল কতটা পাল্টাতে পারবেন বঙ্গ বোলিংয়ের?
“আমি শুধু বোলারদের আলাদা আলাদা করে তাদের দায়িত্বটা বুঝিয়ে দেব। দিন্দাকে বলার কিছু নেই। ও জানে, কী করতে হবে। কিন্তু বাকিদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে বলে দেব তোমার থেকে এটা চাওয়া হচ্ছে। বাকি সব ভুলে তুমি শুধু এটা করো। প্ল্যান ‘এ’ কাজ না করলে প্ল্যান ‘বি’ তৈরি রাখব। সেটা না হলে প্ল্যান ‘সি’। দেখব যাতে বোলারদের মাঠে অসহায় না দেখায়,” বোলিং পরামর্শদাতা হিসেবে যোগ দেওয়ার পর বলছিলেন রণদেব। সঙ্গে যোগ করলেন, “যেমন ধরুন দিন্দা যখন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে নেটে বল করবে, তখন ও ভাবুক তন্ময় শ্রীবাস্তবকে বল করছে। আমি এ ধরণের ভাবনাগুলোর কথা বলছি। আর গত বারের সঙ্গে তুলনা করে লাভ নেই। গত বার লক্ষ্মী নিয়মিত রান পেয়েছে। দিন্দা, ম্যাকো (শিবশঙ্কর), সৌরভ সরকার তিন জনেই ভাল ফর্মে ছিল। পরপর উইকেট পেয়েছে। এ বার দিন্দার উপর বেশি চাপ পড়ে যাচ্ছে। প্রীতম (চক্রবর্তী) সবে খেলতে শুরু করল। কম্বিনেশনটা পুরোপুরি আসেনি।”
বোলিংয়ের সঠিক কম্বিনেশন এখনও নেই। উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে কী উইকেট পাওয়া যাবে, সেটাও কিছুটা আন্দাজবশতঃ এগোতে হচ্ছে। বাংলা শিবিরের মত গাজিয়াবাদের উইকেটে সাধারণত ছ’পয়েন্টের ম্যাচ হয়। যেটা ওখান থেকে না পেলে, বাংলার রঞ্জি-ভাগ্যকে আরও বিপদসঙ্কুল দেখাতে পারে। গাজিয়াবাদ উইকেট নিয়ে আগাম খোঁজখবরও নেওয়া হচ্ছে। শেষটা নিয়ে এসেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সময় ভারতীয় টিমের এক সদস্যের সঙ্গে কথাবার্তা বলে জেনেছেন যে, সিমিং উইকেট থাকবে। আর যিনি বলেছেন, উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেটের প্রধান মুখই এখন তিনি।
সুরেশ রায়না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy