বড় রান আর ধারাবাহিকতা।
মনোজ তিওয়ারির জীবনে এখন এই দুই মন্ত্র ছাড়া আর কিছু নেই।
কিন্তু রঞ্জির সনাতন ক্রিকেটে নিজেকে ওয়ান ডে মোড থেকে বার করে আনবেন মনোজ তিওয়ারি? না কি পায়জামা ক্রিকেটের আগ্রাসী মেজাজ লাল বলের প্রথাগত লড়াইয়েও দেখা যাবে?
মনোজ বলে দিলেন, “তা কেন হবে? চার দিনের ক্রিকেটে যে ভাবে ব্যাটিং করে, সে ভাবেই করব। তবে যদি তেমন পরিস্থিতি আসে, যেখানে আমাকে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে হবে, তখন অবশ্যই করব। সামনে বিশ্বকাপ বলে অপ্রয়োজনে আগ্রাসন আনতে যাব না।”
কিন্তু আগামী এক মাস বাইশ গজে তাঁর পারফরম্যান্সের মধ্যেই যে লুকিয়ে রয়েছে বিশ্বকাপের টিকিট। সেটা খঁুজে নিতে পারলেই কেল্লা ফতে। চূড়ান্ত তিরিশ জনের দল থেকে সোজা পনেরো জনে। তবু নির্বাচকদের রুদ্রমূর্তি দেখাবেন না? বডোদরায় বাংলার টিম হোটেল থেকে ফোনে মনোজ বললেন, “দলের প্রয়োজনটাই আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের জন্য নয়, রঞ্জিতে বাংলার জন্য মাঠে নামব। নিজের লক্ষ্য পূরণের জন্য দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারব না। এখন আমার কাছে দুটো জিনিস সবচেয়ে মূল্যবান। প্রচুর রান আর ধারাবাহিকতা। যা দলের কাজে লাগাতে চাই।”
বুধবার দেওধর ট্রফির ফাইনাল জিতে মাঝরাতে হোটেলে ফিরেছেন। আবার ভোর সাড়ে চারটেয় বেরিয়ে ভোরের বিমান ধরে বডোদরায় পৌঁছে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। শরীরটাকে সেই যে বিছানার সঙ্গে মিশিয়ে দিলেন, ঘুম ভাঙল দুপুরে, সতীর্থ সৌরাশিস লাহিড়ীর ডাকে। তাঁর কাছ থেকেই প্রথম খবরটা পান মনোজ। সৌরাশিস জানালেন, “খবরটা পেয়ে ও খুব খুশি হল ঠিকই। কিন্তু লাফিয়ে ওঠেনি। প্রত্যাশিতই ছিল। যা ভাল ব্যাট করছে। আমার ধারণা, যাদের সঙ্গে ওর ১৫-র দলে ঢোকার লড়াই, তাদের মধ্যে মনোজই সেরা।”
মনোজকে প্রশ্নটা করতে অবশ্য তাঁর হেসে গড়িয়ে পড়ারই উপক্রম। বলেন, “আমি কি এখন এ সব নিয়ে ভাবতে বসব? মাঠে নেমে সবসময় মনে হয় আমিই সেরা। কিন্তু আসলে কে, সে তো বলবে পারফরম্যান্স আর পরিসংখ্যান। তার জন্য আমাকে প্রচুর লড়তে হবে। অন্যদেরও তো একই ফর্ম্যাটে খেলতে হচ্ছে। কেউ দেশে, কেউ অস্ট্রেলিয়ায় খেলছে।” তাঁর সঙ্গে লড়াইটা মূলত উথাপ্পা, রায়ডু, কেদার, মণীশ, বিজয়দের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেন স্টার্টিং লাইন থেকেই একশো মিটার দৌড় শুরু করছেন এঁরা। কেউ এক ইঞ্চিও এগিয়ে বা পিছিয়ে নেই।
মনোজ তা খুব ভালই জানেন। বললেন, “খুব কম্পিটিশন হবে। যে যত বেশি ধারাবাহিক হবে ও যার নামের পাশে পরপর অনেকগুলো বড় রান লেখা থাকবে, সে-ই সুযোগ পাবে। আমার দুটোই চাই। ক্রিজে বা নেটে ব্যাট হাতে নেমে খুব ভাল লাগছে। আত্মবিশ্বাস পাচ্ছি। যেন এটা থাকে।”
বিশ্বকাপ থেকে চোখ সরিয়ে মনোজ ফিরে গেলেন দেওধর ফাইনালে। বুধবার ওয়াংখেড়েতে কেদার-সূর্য জুটি যখন প্রায় ম্যাচ বের করেই নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনও এক বারের জন্যও নাকি তাঁর মনে হয়নি, হেরে যেতে পারেন। মনোজ বললেন, “এক সেকেন্ডের জন্যও মনে হয়নি হেরে যেতে পারি। ওদের তো প্রথম থেকেই চাপে ফেলে দিয়েছিলাম। জানতাম আস্কিং রেটটা ছয়ের উপর চলে গেলে ওরা আরও চাপে পড়ে যাবে। কেদাররা ভাল ব্যাট করলেও আমার বিশ্বাস ছিল, বোলাররা ঠিক উইকেট তুলে নেবে। শুধু ওর ক্যাচটা পড়তে এই ভেবে ভয় করছিল যে, আজ কেদারই না শেষ করে দেয়। কিন্তু আমাদের বোলাররাই ম্যাচটা জেতাল। পুরো কৃতিত্ব ওদেরই। পশ্চিমাঞ্চলকে ওদের মাঠে দাপটের সঙ্গে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা বড় ব্যাপার। স্মরণীয় ম্যাচ হয়ে থাকবে এটা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy