বিশ্বকাপে ভরাডুবির তদন্ত শুরু করে দেশের সেরা ফুটবল তারকা স্যামুয়েল এটো-র পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করল ক্যামেরুনের পুলিশ।
খোদ দেশের প্রেসিডেন্ট পল বিয়ার নির্দেশে বিশ্বকাপে এটোদের ভরাডুবি নিয়ে সরকারি তদন্ত শুরু হয়েছে। এক মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এই তদন্তের জন্যই জাতীয় দলের অন্যান্য ফুটবলারের সঙ্গে সদ্য চেলসি ছেড়ে আসা এটোকে জেরার জন্য তলব করেছিলেন তদন্তকারী অফিসাররা। এটো নিজে হাজির না হয়ে তাঁর আইনজীবীকে পাঠান। কিন্তু তাতে রাজি হননি পুলিশ কর্তারা। এটোকেই সশরীরে এসে তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেতে বলেন। অগত্যা এটোকে তাঁদের সামনে হাজির হতেই হয় এবং জেরার পর এটোর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয় বলে জানিয়েছে আফ্রিকান মিডিয়া। একটি আফ্রিকান ওয়েবসাইটের খবর, পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত হলেও এটো এখন আদৌ দেশে আছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। কারণ, তিনি যেহেতু একাধিক পাসপোর্টের অধিকারি, তাই অন্য দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশে যেতেই পারেন। এমনিতেই মঙ্গলবার টুইটারে বিমানের মধ্যে নিজের সপরিবার ছবি পোস্ট করে এটো লেখেন, “পরিবারের জন্য সময়...অবশেষে ছুটি।” যার ফলে বিতর্ক আরও বাড়ছে।
ফুটবল বিশ্বে যারা ‘ইনডমিটেবল লায়ন্স’ (অদম্য সিংহ) বলে খ্যাত, সেই ক্যামেরুনের বিশ্বকাপ অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে সে দেশেই। প্রথমত, তাঁদের মূলপর্বে ওঠার বোনাস নিয়ে ঝামেলা। দ্বিতীয়ত, গ্রুপ লিগে ন’টি গোল খেয়ে মাত্র একটি গোল দেওয়া (ব্রাজিলের বিরুদ্ধে)। তৃতীয়ত, দলের সেরা তারকা এটো-র চোট পেয়ে শেষ দুই ম্যাচে না খেলা এবং ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে অ্যালেক্স সঙ্গ-এর লাল কার্ড দেখা ও মাঠেই দুই ফুটবলারের ঝগড়া। মূলত এগুলি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তার উপর ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে যে ০-৪ হারবে ক্যামেরুন, ফুটবল গড়াপেটার খলনায়ক কুখ্যাত উইলসন রাজ পেরুমলের এই ভবিষ্যদ্বাণী ফাঁস করে জার্মান পত্রিকা ‘দ্যর স্পিগেল’ এতে আরও উস্কানি দেয়।
ক্যামেরুনের শেষ ম্যাচে গড়াপেটার ছায়া দেখতে পেয়ে সে দেশের ফুটবল ফেডারেশনও আলাদা করে তদন্ত করছে। পেরুমল অবশ্য বুধবার নিজের ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন, তিনি এমন কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করেননি। জার্মান পত্রিকায় যা প্রকাশিত হয়েছে, তা ভুল। তবে জার্মান পত্রিকার সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক রাফায়েল বুশম্যানের দাবি, তিনি যা লিখেছেন, তাতে এতটুকু ভুল নেই। পত্রিকার দাবি, তাদের কাছে ফেসবুক চ্যাটের প্রমাণ আছে। ফিফা এই পত্রিকার কাছে পেরুমলের সঙ্গে ফেসবুক চ্যাটের প্রমাণ চেয়েছে। তাদের বক্তব্য, ম্যাচ গড়াপেটার প্রমাণ থাকলে সেটা আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক।
অন্য দিকে, ঘানার প্রেসিডেন্ট জন মাহামাও বিশ্বকাপে তাঁদের দলের ভরাডুবির কারণ খুঁজে বের করতে সরকারি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে ঘানার সরকারি সম্প্রচার সংস্থা জিবিসি জানিয়েছে। এই ভরাডুবির পর ঘানার ক্রীড়ামন্ত্রী ও তাঁর সহকারীকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ঘানার ফুটবলাররাও বোনাসের দাবি জানিয়ে মাঠে না নামার হুমকি দিয়েছিলেন। সেই দাবি মেটাতে ৩০ লক্ষ ডলারে চার্টার্ড বিমান ভাড়া করে দেশ থেকে তাদের জন্য ব্রাজিলে নগদ অর্থ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে বিতর্কের ঝড় তোলে সে দেশের বার অ্যাসোসিয়েশন। ঘটনাটিকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে তারা মন্তব্য করে, “দেশের নাগরিকদের জন্য এ এক জঘন্য দৃষ্টান্ত।” গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছিল ঘানার ফুটবলারদের বিরুদ্ধেও এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাদের দুই ফুটবলারকে দেশে ফেরতও পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy