২০০৯ সালে যে থানা থেকে ওসি-কে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল মাওবাদীরা, সেই সাঁকরাইল থানা এলাকার মেয়েরাই এ বার ফুটবলে রাজ্যের মুখ। অনূধ্বর্র্ ১৭ মহিলা ফুটবলে সুব্রত কাপ খেলতে দিল্লি রওনা দিচ্ছে তারাই!
একদিকে দু’বেলা পেট ভরে খেতে না পাওয়া খুদে মেয়েগুলির অদম্য ইচ্ছে, অন্য দিকে স্থানীয় বিডিও সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের উৎসাহ-এই দু’য়ের ভর করেই এগিয়ে চলেছে কেশিয়াপাতা জিএম হাইস্কুলের এই মেয়েরা। রাজ্যের সমস্ত সফল প্রতিযোগিদের হারিয়ে ছিনিয়ে নিয়েছেন দিল্লিতে সুব্রত কাপ খেলার সুযোগ। রবিবার কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে ছিল রাজ্যের চূড়ান্ত দল চিহ্নিতকরণ প্রতিযোগিতাটি। সেখানে ফাইনালে বিরোধী দল হিসাবে হাজির ছিল গত বারের রাজ্যস্তরের চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলারই নয়াগ্রাম থানা বালিকা বিদ্যালয়। তাঁদের ১-০ গোলে হারিয়ে এ বার জয়ী হয়েছে কেশিয়াপাতা স্কুলের ছাত্রীরা।
একটা সময় ছিল, ঝাড়গ্রাম-সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকটি ব্লক ছিল অবরুদ্ধ। প্রশাসনের পরিবর্তে মাওবাদীর শাসন চলত এলাকায়। সাঁকরাইলও ছিল সেই রকম এলাকা। এই থানা থেকেই ২০০৯ সালে ওসিকে অপহরণ করেছিল মাওবাদীরা। সেখানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বেষ্টনী এড়িয়ে থানা থেকে ওসিকে অপহরণ হয়, সেখানে সাধারণ মানুষ কতটা আতঙ্কে কাটাতেন তা সহজেই অনুমেয়। ২০১১ সালে রাজ্যে সরকারের পরিবর্তনের পর শান্তি ফেরে জঙ্গলমহলে। শুরু হয় খেলাধূলো। কলকাতার এ ডিভিসন লিগে খেলা শম্ভু মাণ্ডি এলাকারই দুধকুণ্ডি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করতে আসেন। তিনিই গ্রামের খুদে খুদে মেয়েদের নিয়ে ফুটবলের প্রশিক্ষণ শুরু করেন। শুরু করলেই তো হবে না, পিছিয়ে পড়া এলাকায় কোন্ বাবা-মা মেনে নেবেন ছোট্ট ছোট্ট পোশাক পরে মেয়েটি মাঠজুড়ে দৌড়চ্ছে! তাই শুরুতেই ধাক্কা। স্থানীয় ক্লাবের কয়েকজন সদস্য, শিক্ষকদের একাংশ শুরু করেন অভিভাবকদের বোঝাতে। এই সমস্যা তো মিটলস কিন্তু জার্সি, জুতো কিনে দেবে কে?
দুঃস্থ পরিবারের মেয়েদের কৃতীতে আপ্লুত বিডিও সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা কেবল উৎসাহ দিয়েছি। সঙ্গে সামান্য সহযোগিতা। ওদের নিজেদের ইচ্ছে না থাকলে কখনই রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় প্রথম হতে পারত না।” আর যে দুই প্রশিক্ষক সারাক্ষণ ওদের আগলে রাখেন সেই শম্ভু মাণ্ডি, অশোক সিংহরা বলেন, “যারা দু’বেলা পেট ভরে খেতে পায় না তাদের এই অভাবনীয় সাফল্যে আমাদের পরিশ্রম সার্থক। তবে এখনও অনেক পথ বাকি। দিল্লিতে গিয়েও যদি রাজ্যের মুখ্য উজ্জ্বল করতে পারি তাহলে আরও খুশি হব।”
সচিনের টিমে পেন, বরিসিচ
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
ইন্ডিয়ান সুপার লিগে কিংবদন্তি ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকরের ফ্র্যাঞ্চাইজি কেরল ব্লাস্টার্সে সই করলেন ময়দানে খেলে যাওয়া দুই ফুটবলার পেন ওরজি এবং অ্যান্ড্রু বরিসিচ। “ভারতীয় ফুটবলের জন্য এটা খুব উত্তেজক সময়। ভারতে ফিরতে মুখিয়ে আছি। সচিনের মতো সফল ক্রীড়াবিদের দলে খেলাটা সম্মানের,” বলেছেন বরিসিচ। টিমের সহকারী কোচ ট্রেভর মর্গ্যান বললেন, “বরিসিচ আর পেনকে সই করাতে পেরে আমরা খুশি। ওদের স্কিল আর অভিজ্ঞতা আমাদের টিমের আক্রমণ আরও ধারালো করবে।”